ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মংলা থেকে উদ্বৃত্ত বিদ্যুত যাবে জাতীয় গ্রিডে

দেশের প্রথম বাণিজ্যিক সৌর প্লান্টের উৎপাদন শুরু

প্রকাশিত: ১১:০৮, ১৬ অক্টোবর ২০১৯

দেশের প্রথম বাণিজ্যিক সৌর প্লান্টের উৎপাদন শুরু

আহসান হাবিব হাসান, মংলা থেকে ॥ চুক্তির নির্ধারিত সময়ের দু’মাস আগেই মংলায় নির্মাণাধীন দেশের প্রথম ভাসমান সৌরবিদ্যুত প্লান্ট থেকে প্রথমধাপে প্রাথমিকভাবে বিদ্যুত উৎপাদন শুরু হয়েছে। ১৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ভাসমান এ সৌরবিদ্যুত কেন্দ্র থেকে চলতি সপ্তাহে উৎপাদিত ২ মেগাওয়াট বিদ্যুত পরীক্ষামূলক পৌরসভার পানি শোধনাগারের প্রকল্পে ব্যবহার করা হচ্ছে। বাকি ১৩ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন আগামী দুবছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ভাসমান এ সৌরবিদ্যুত কেন্দ্র বাস্তবায়নে ভারত সরকার মংলা পোর্ট পৌরসভাকে দিয়েছে ১৫০ কোটি টাকা। ভারতীয় ও বাংলাদেশী একটি কোম্পানির সঙ্গে গত ২৩ জুন মংলা পোর্ট পৌর কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। মংলা পোর্ট পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, একটি ভারতীয় ও দেশী একটি কোম্পানির সঙ্গে গত ২৩ জুন মংলা পোর্ট পৌর কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। মংলা পোর্ট পৌরসভার মাছ মারা এলাকায় পানি শোধনাগার কেন্দ্রের দুটি পুকুর ও পুকুরপাড়ে ১৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ভাসমান ও পুকুরধার সৌর বিদ্যুত কেন্দ্র প্রকল্পটি দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে জুলাই মাস থেকে কাজ শুরু করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী ভারত সরকারের দেয়া অফেরতযোগ্য ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রথম পর্যায়ে আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সোলার পাওয়ার প্লান্ট থেকে ২ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন করে তা সরবরাহ করার কথা থাকে। কিন্তু প্রথম পর্যায়ের নির্ধারিত সময় শেষ হবার দুমাস আগেই চলতি অক্টোবর মাস থেকে এ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুত উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হয়েছে। অপরদিকে চুক্তির অপর শর্ত অনুযায়ী ১২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আগামী ২ বছরের মধ্যে বাকি ১৩ মেগওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন করা হবে এ প্রকল্প থেকে। এই ১৫ মেগাওয়াট ভাসমান সৌরবিদ্যুত কেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুত মোংলা পোর্ট পৌরসভা ব্যবহার করার পর উদ্বৃত্ত বিদ্যুত জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে। মংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র জুলফিকার আলী জনকণ্ঠকে জানান, সোলার পাওয়ার প্যান্ট স্থাপন পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই উন্নয়ন প্রকল্প। এ প্রকল্পের প্রথম দফার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পানি শোধনাগারের পুকুর পাড়ে সোলার বসিয়ে উৎপাদিত বিদ্যুত গত শুক্রবার থেকে পরীক্ষামূলকভাবে পানি প্রকল্পে ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী দুবছরের মধ্যেই এ পুকুর পাড় ও পুকুরের মধ্যে ভাসমান সোলার প্লান্ট বসিয়ে মোট ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন করা সম্ভব হবে। পরে এসব বিদ্যুত মংলা পোর্ট পৌর এলাকায় ব্যবহার করার পর উদৃত্ত বিদ্যুত জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে। এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য (মংলা-রামপাল) ও বন পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার বলেন, ভাসমান ও পুকুরপাড়ে সোলার পাওয়ার প্লান্ট স্থাপন প্রকল্প পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অনন্য ভূমিকা পালন করবে। ভারতের সহযোগিতায় এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে আমাদের মধ্যে মৈত্রী ভাব আরও সুদৃঢ় হবে। এ ধরনের প্রকল্প বাংলাদেশে এই প্রথম। এই দৃষ্টান্ত সামনে রেখে ভাসমান সোলার প্লান্ট সারা বাংলাদেশে বৃদ্ধি পাবে আশা করি। সুন্দরবন সুরক্ষার কথা বিবেচনায় নিয়ে দেশের প্রথম ভাসমান সৌরবিদ্যুত কেন্দ্র মোংলায় স্থাপন করা হয়।
×