ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

৩১ অক্টোবরের মধ্যেই ইইউ ছাড়তে চান জনসন

শেষ সময়ের আলোচনায় এখন ব্রিটেন ও ইইউ

প্রকাশিত: ০৮:৫৪, ১৬ অক্টোবর ২০১৯

শেষ সময়ের আলোচনায় এখন ব্রিটেন ও ইইউ

ব্রেক্সিট কার্যকরের সময়সীমা ঘনিয়ে আসায় ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা এখন শেষ মুহূর্তের আলোচনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। ইইউতে থাকা না থাকা প্রশ্নে ব্রিটেনে ২০১৬ সালে গণভোট হয়। এতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষে রায় দেশটির জনগণ। সেই হিসেবে এই অক্টোবর মাসেই দেশটির ইইউ ত্যাগ করার কথা। তবে ব্রিটেন ইইউ ছেড়ে গেলেও দেশটির সঙ্গে ইউরোপের বাণিজ্য, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, ব্যাকস্টপ ও অন্যান্য ইস্যুতে উভয়পক্ষ এখনও কোন সমঝোতায় আসতে পারেনি। খবর ব্লুমবার্গ অনলাইনের। এসবের সুরাহা ও ব্রেক্সিট কার্যকর প্রশ্নে ১৭ অক্টোবর থেকে উভয়পক্ষ আলোচনায় বসতে যাচ্ছে। ১৯ আক্টোবর পর্যন্ত উভয়পক্ষ কোন কার্যকরী সমঝোতায় আসতে না পারলে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সময়সীমা বাড়ানোর দাবি জানাতে আইনী বৈধতা পাবেন। তবে জনসন নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ইইউ ত্যাগ করার পক্ষে। তিনি সময় বাড়ানোর আবেদনে অনাগ্রহী। গত সপ্তাহে ব্রাসেলসে ইইউ ও ব্রিটিশ নেতাদের মধ্যে শেষ দফা বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে উভয়পক্ষের নেতারা ইইউ’র বার্ষিক অধিবেশন পর্যন্ত আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দেন। ওই আলোচনাকে অত্যন্ত ‘গঠনমূলক’ আখ্যা দেয়া হয়। ব্রাসেলসে ব্রিটেনের ব্রেক্সিটমন্ত্রী স্টিফেন বার্লে ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান সমন্বয়ক মাইকেল বার্নিয়ারের মধ্যে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মুখপাত্র মিনা আন্দ্রিভা বলেন, স্টিফেন বার্লে ও মাইকেল বার্নিয়ারের মধ্যেকার এ বৈঠক উভয়ে ব্রেক্সিট বিষয়ক একটি চুক্তির জন্য কাজ অব্যাহত রাখতে রাজি হয়েছেন। তাদের মধ্যেকার আলোচনা ‘গঠনমূলক’ ছিল। এ সময় মিনা আন্দ্রিভা উল্লেখ করেন, স্টিফেন বার্লে ও মাইকেল বার্নিয়ারের কথা শুনে মনে হয়েছে যে প্রকৃত অর্থেই ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। শনিবার ব্রেক্সিট প্রশ্নে পার্লামেন্টে একটি জরুরী অধিবেশন আহ্বান করা হয়েছে। ১৯৮২ সালের পর এই প্রথবারের মতো জরুরী অধিবেশন ডাকল ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ। সে বছর ফকল্যান্ড যুদ্ধ প্রশ্নে এই ধরনের অধিবেশন আহ্বান করা হয়েছিল। তবে এসবের পরও ব্রেক্সিট কার্যকর কার্যত ইউরোপীয় ইউনিয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ব্রিটিশ নেতাদের শেষ দফা আলোচনার ওপর নির্ভর করছে। কেননা উত্তর আয়ারল্যান্ডের ব্যাকস্টপ ইস্যুতে শেষ পর্যন্ত ব্রেক্সিট ইস্যুটি ফের অনিশ্চয়তায় পড়তে পারে। এদিকে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট অধিবেশন নতুন করে শুরু করতে রানী এলিজাবেথ সোমবার উদ্বোধনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ব্রেক্সিট পরিকল্পনার প্রতিধ্বনি করেন। ৩১ অক্টোবর ইইউ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়াই সরকারের ‘অগ্রাধিকার’ বলে জানিয়েছেন তিনি। রাজকীয় আড়ম্বরের সঙ্গে রাজনীতি মেশানো ওই ভাষণে রানী সামনের বছরে সরকারের পরিকল্পনাগুলোর রূপরেখা তুলে ধরেছেন। ব্রেক্সিট পরিকল্পনার পাশাপাশি রানী পড়ে শুনিয়েছেন অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সরকারী নীতিগুলোগুলোর কথা যেমন অপরাধ, স্বাস্থ্য ও পরিবেশসহ দেশের। যে তালিকা রানীর জন্য লিখে দেয়া হয়েছে সরকার থেকে। অনিশ্চয়তা না কাটলেও জনসন এখনও ব্রেক্সিটের নির্ধারিত সময়সীমাতেই অটল। রানী তার ভাষণে বলেছেন, ‘আমার সরকার সবসময়ই ৩১ অক্টোবরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়া নিশ্চিত করাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। মুক্ত বাণিজ্য এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার ভিত্তিতে ইইউ’র সঙ্গে একটি নতুন অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার জন্য কাজ করতে আমার সরকার ইচ্ছুক।’
×