ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপিতে দালাল আছে যারা প্যারোলে মুক্তি চায়- গয়েশ্বর

প্যারোল নয়, রাজপথের আন্দোলনেই খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে- মওদুদ

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ১৫ অক্টোবর ২০১৯

প্যারোল নয়, রাজপথের আন্দোলনেই খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে- মওদুদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্যারোল নয়, রাজপথের আন্দোলনেই বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বুয়েটের ছাত্র আবরার হত্যার প্রতিবাদে ২০ দলীয় জোট আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সভায় বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপিতে দালাল আছে যারা চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি চায়। ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, দেশে আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং মানুষ যাতে সভ্যতার সঙ্গে বসবাস করতে পারে সেই সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা প্রয়োজন। তবে খালেদা জিয়ার মুক্তি আইনি প্রক্রিয়ায় হবে বলে আমি মনে করি না। সুতরাং তাকে মুক্ত করার একমাত্র পথ হতে পারে রাজপথ। রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে। সেই মুক্তি সময়ের ব্যাপার। মওদুদ বলেন, এই সরকার যত দ্রুত ক্ষমতা থেকে বিদায় নেবে দেশের জন্য তত মঙ্গল। সেজন্য আমরা দাবি করবো- অবিলম্বে এই সরকারের পদত্যাগ করা উচিত এবং একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠনের সুযোগ সৃষ্টি করা উচিত। বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মওদুদ বলেন, আপনারা যদি মনে করেন এতদিন তো আমরা সহ্য করেছি আর কতদিন। কিন্তু আমি বলবো আমাদের আরও কিছুদিন সহ্য করতে হবে। সময় আসবে, যখন এদেশে সরকার উৎখাত করার জন্য একটি জনবিস্ফোরণ ঘটবে। তিনি বলেন, আজকে আমাদের সময় হয়েছে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার। ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, আবরার ফাহাদ শহীদ হয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তিনি প্রমাণ করে দিয়ে গেছেন দেশে যদি ভিন্ন মতাবলম্বন করা হয় তবে তাকে হত্যা পর্যন্ত করতে কার্পণ্য করে না। তিনি বলেন, ২০ দলীয় জোট আছে এবং থাকবে। পাশাপাশি সর্ববৃহৎ প্লাটফর্ম তৈরির জন্য আমাদের দেশের সকল গণতন্ত্র ও মুক্তিকামী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলনের মাধ্যমে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। তিনি বলেন, শুধু বুয়েট নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের হল এবং ডরমেটরিগুলোতে ক্ষমতাসীন দলের আশীর্বাদপুষ্ট লোকজন টর্চার সেল তৈরি করেছে। মওদুদ বলেন, এই সরকার জবাবদিহিতাহীন সরকার বলেই যা হওয়ার দেশে এখন তাই হচ্ছে। জবাবদিহিতা না থাকার কারণেই আজকে এই নৈরাজ্য টেন্ডারবাজির দুর্নীতি চলছে। ছাত্রলীগ-যুবলীগের সোনার ছেলেদের ১০ বছর ধরে নৈরাজ্যে দেশের মানুষ জর্জরিত। প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার হচ্ছে। ব্যাংক লুট, শেয়ারবাজার লুট, দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে এক শ্রেণির মানুষ এই সরকারের মদদে এবং যারা এই সরকার পরিচালনা করছে তাদের প্রভাবে দেশে দুর্নীতি চলছে। স্মরণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, প্যারোলে মুক্তি নিয়ে খালেদা জিয়া বের হবেন কেন? আজকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী প্যারোল নিয়ে দেশ থেকে কিভাবে বের হবেন মানুষ সেই চিন্তা করছে। তবে প্যারোলে খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে সমঝোতা করতে আমাদের মধ্যেও একটা দালাল শ্রেণি আছে। গয়েশ্বর বলেন, ছাত্ররাজনীতি নয় ছাত্রলীগের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। কারণ, ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা আমাদের আত্মহত্যার সামিল। আজ দেশে কোন ছাত্র রাজনীতি নেই বলেই ছাত্র রাজনীতি বন্ধের কথা হচ্ছে। আজ যদি ছাত্র রাজনীতি থাকতো তবে তা বন্ধের কথা উঠতো না। তিনি বলেন, আজকে এ দেশের ইতিহাসের দিকে তাকালে আমরা দেখি ছাত্ররাই দেশের প্রত্যেকটা পরিবর্তনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এবং আগামী প্রজন্মের ছাত্ররাই দেশের সকল প্রয়োাজনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। গয়েশ্বর বলেন, বর্তমানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে যেসব ভিসিরা আছেন আমাদের ছাত্ররা তাদের পদত্যাগ চায়, কিন্তু তারা দেহত্যাগ করলেও পদত্যাগ করবেন না। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের উদ্দেশে বলেন, পদত্যাগ করলে যে আয় হয়, বরকত হয় সেটা তো আর পাওয়া যাবে না। তাই বরকতের দিকে যাদের নজর বেশি তাদের একটু লাজ-লজ্জা কম। স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জালাল, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান রেজা, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা গোলাম পরোয়ার, মাওলানা আবদুল হালিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা প্রমুখ।
×