ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁয় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটিতে বিতর্কিত ব্যক্তির নাম

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ১৪ অক্টোবর ২০১৯

নওগাঁয় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটিতে বিতর্কিত ব্যক্তির নাম

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ ॥ নওগাঁর মান্দায় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই পুনঃর্গঠিত কমিটিতে বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধা আফছার আলী মন্ডলের নাম অন্তর্ভূক্তি থাকায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ, তিনি মুক্তিযোদ্ধা নন, ভারতের কোনো ক্যাম্পেও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেননি। বিতর্কিত এই মুক্তিযোদ্ধা উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের হাজী গোবিন্দপুর গ্রামের রাজাকার মৃত সমতুল্যা মন্ডলের পুত্র। ২০১৭ সালে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য পদে থেকে তালিকায় নাম অন্তর্ভূক্তির জন্য মুক্তিযোদ্ধা নন, এমন ব্যক্তিদের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এনিয়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ নওগাঁর জেলা প্রশাসক, জামুকার চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠিয়েছেন তারা। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধা আফছার আলী মন্ডলের বাবা সমতুল্যাহ মন্ডল শান্তি কমিটির সেক্রেটারী ছিলেন। এই রাজাকারের নেতৃত্বে একাত্তরের ২৮ আগস্ট ভারশোঁ ইউনিয়নের পাকুড়িয়া গ্রামে পাকিহানাদার বাহিনী নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। সেই হত্যাযজ্ঞে সেখানে শহীদ হয়েছিলেন ওই গ্রামের ১২৮ জন নীরিহ মুক্তিকামী মানুষ। এ প্রসঙ্গে যুদ্ধকালীন কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান ও মুক্তিযোদ্ধা ইব্রাহীম হোসেন বলেন, আফছার আলী স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মান্দা উপজেলার বড়পই গ্রামে তার মামা লুৎফর রহমানের বাড়িতে থাকতেন। তখন তার বয়স ৭-৮ বছর হবে। স্থানীয় দেলুয়াবাড়ি বাজারে প্রফুল্ল ডাক্তারের ঘরে শান্তি কমিটির অফিস ছিল। সেখানে নিয়মিত শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান আহম্মেদ আলী ও আফছার আলীর বাবা শান্তি কমিটির সেক্রেটারি সমতুল্যা মন্ডল বসতেন। যুদ্ধের সময় সেখানে একবার আক্রমণের জন্য যাওয়া হয়েছিল। ওই অফিসের নির্দেশে সমতুল্ল্যার নেতৃত্বে পাকুড়িয়া গ্রামের কয়েকজনের বাড়িতে লুটপাট করা হয় এবং ১২৮ জন মুক্তিকামী মানুষকে হত্যা করা হয়। এব্যাপারে আফছার আলী মন্ডলের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সঠিক নয়। যারা প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে, তাদের মধ্যে অনেকেই স্বাধীনতার পর ডাকাতি করতো। তাদের বাড়ি থেকে ’৭৩ সালে অস্ত্র উদ্ধার করে সেনাবাহিনী। সেবছর জুন মাসে ভারতের রায়গঞ্জ ক্যাম্পে প্রথম ব্যাচে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষন গ্রহন করি। আমি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা।
×