ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

টাঙ্গাইলে নতুন বউকে তালাক দিয়ে শ্বাশুড়িকে বিয়ে

প্রকাশিত: ০০:০৪, ১৪ অক্টোবর ২০১৯

টাঙ্গাইলে নতুন বউকে তালাক দিয়ে শ্বাশুড়িকে বিয়ে

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল ॥ মাত্র ১১ দিন আগে ধূমধাম করে বিয়ে হয়েছিল নূরন্নাহার খাতুনের (১৯)। শ্বশুরবাড়িতে এক সপ্তাহ অবস্থানের পর বাবার বাড়ি ফিরে আসে গত শুক্রবার (১১ অক্টোবর)। আর শনিবার (১২ অক্টোবর) বিকালেই তার ঘর ভাঙে। বর মোনছের আলী (৩২) শ্বশুর বাড়ি এসে নববধূ নূরন্নাহারকে তালাক দিয়ে শ্বাশুড়ি মাজেদা বেগমকে (৪০) বিয়ে করে বীরদর্পে বাড়ি চলে যায়। দু’দিন আগের শ্বাশুড়ি মাজেদা এখন মোনছের আলীর স্ত্রী হয়ে দিব্যি ঘর-সংসার করছেন। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার কড়িয়াআটা গ্রামে। জানা যায়, ধনবাড়ী উপজেলার হাজরাবাড়ী পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত ওয়াহেদ আলীর পুত্র মোনছের আলী গত (২ অক্টোবর) গোপালপুর উপজেলার কড়িয়াটা গ্রামের নূর ইসলামের কন্যা নূরন্নাহার খাতুনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পরদিন (৩ অক্টোবর) শ্বাশুড়ি মাজেদা বেগম মেয়ের বাড়ি বেড়াতে যান। মেয়ের সাথে এক সপ্তাহ সেখানে অবস্থানের পর গত শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বর-কনেসহ নিজবাড়ি ফিরেন। পরদিন শনিবার (১২ অক্টোবর) সকালে নূরন্নাহার বরের সাথে সংসার করবেন না বলে বায়না ধরেন। শুরু হয় পারিবারিক কলহ। শ্বাশুড়ি মাজেদা বেগম তখন নূরন্নাহার সংসার না করলে তিনি নতুন জামাতার সংসার করবেন বলে জানান। এ অবস্থায় অসহায় শ্বশুর নূর ইসলাম গ্রাম্য সালিশ ডাকেন। হাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের তালুকদার, ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামসহ এলাকার গণ্যমান্যরা সালিশী বৈঠকে বসেন। সামাজিক বিচারে মাজেদা বেগম ও মোনছের আলীকে মারধোর করা হয়। এরপর পুরো পরিবারের সম্মতিতে নূর ইসলাম প্রথমে স্ত্রী মাজেদা বেগমকে তালাক দেন। এরপর বর মোনছের আলী নবপরিণীতা স্ত্রী নূরন্নাহারকে তালাক দেন। এরপর একই অনুষ্ঠানে সবার উপস্থিতিতে মোনছের আলীর সাথে শাশুড়ী মাজেদা বেগমের এক লক্ষ টাকা কাবিনে বিয়ে হয়। হাদিরা ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী জিনাত আলোচিত এই বিয়ের রেজিস্ট্রি করেন। তিনি জানান, ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার, গ্রাম্য মাতব্বর এবং ওই পরিবারের সকল সদস্যের সম্মতিতে দু’টি তালাক এবং একটি বিবাহের কাজ একই অনুষ্ঠানে সম্পাদন করা হয়। ইউপি মেম্বার নজরুল ইসলাম জানান, পুরো কাজটি হয়েছে ওই পরিবারের সম্মতিতে। তবে শ্বাশুড়ি বিয়ে করার ঘটনায় আপত্তি থাকায় গ্রামবাসীদের উপস্থিতিতে মোনছের ও মাজেদাকে শারীরিক শাস্তি দেয়া হয়। এ বিষয়ে হাদিরা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের তালুকদার জানান, শ্বাশুড়ির বিয়ের খবরে ক্ষুব্দ গ্রামবাসি বাড়ি ঘেরাও করে মারপিট শুরু করেন। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। পরিবারের সকলের সম্মতির বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে বিয়ের সম্মতি দেই। এদিকে শ্বাশুড়ি বিয়ের খবরে দু’দিন ধরে বহু মানুষ ভিড় করছে স্বামী মোনছের আলীর বাড়িতে।
×