ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রান্নার পুষ্টিগুণ যেভাবে ঠিক থাকে

প্রকাশিত: ০৮:২২, ১৪ অক্টোবর ২০১৯

 রান্নার পুষ্টিগুণ যেভাবে  ঠিক থাকে

রান্নার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে খাদ্যকে নরম, সুস্বাদু , সুপাচ্য ও জীবাণুমুক্ত করা। রান্নার পূর্বে কিছু কাজ করা দরকার: যেমন খাদ্যবস্তুকে কাটা, ধোয়া, পরিষ্কার করা এবং এর পরই সেদ্ধ করে, ভেজে কিংবা ফুটিয়ে খাদ্যকে রান্না করা হয়। কিন্তু খাদ্যকে রান্নার জন্য প্রস্তুত করার সময় এর কিছু পুষ্টি উপাদান নষ্ট হয়ে যায় আর বাকি যতটুকু থাকে তার মধ্যে রান্নার সময় হারিয়ে যায় আরও কিছু অংশ। খাদ্যের পুষ্টি উপাদান যেন কম নষ্ট হয় সে জন্য কিছু উপায় রয়েছে। তাই আজকে খাদ্যের পুষ্টি সংরক্ষণে কিছু উপায় নিয়ে আলোচনা করা হলো। খাদ্যের পুষ্টি উপাদান নষ্ট হওয়ার কিছু কারণ পানি : খাদ্যবস্তু ধোয়ার সময় পানিতে দ্রবণীয় কিছু ভিটামিন নষ্ট হয়ে যায়। যেমন বি এবং সি। চালের উপাদান থায়ামিন (Thiamine) চাল ধোয়ার পানিতে, ভাতের মাড় ফেলার সঙ্গে চলে যায়। উত্তাপ : খাদ্যে উত্তাপ দিলে কিছু সেনসেটিভ ভিটামিন যেমন এ, সি উড়ে যায় ও নষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া আকৃতিসহ রং নষ্ট হয়ে যায় এবং প্রোটিন জমাট বেঁধে যায়। আলো ও অক্সিজেন : বাতাসের সংস্পর্শে ভিটামিন সি নষ্ট হয়। তাছাড়া ফল ও সবজি কেটে রাখলে তা কালো হয়ে যায় অক্সিজেনের প্রভাবে। দুধ ও শাকসবজির ভিটামিন বি আলোতে নষ্ট হয়ে যায়। বিভিন্ন খাদ্যবস্তু বিভিন্ন পদ্ধতিতে রান্না করা হয়। কোন্ পদ্ধতি অবলম্বনে অপচয় কম হবে, খাদ্যমূল্যের সংরক্ষণ কিভাবে করা যাবে তা আলোচনা করা হলো। খাদ্যের পুষ্টি সংরক্ষণে কিছু উপায় শাক-সবজি শাক-সবজি ও ফল ধুয়ে কাটতে হবে। তবে খোসার নিচেই পুষ্টি উপাদান বেশি থাকে; তাই খোসা সমেত কাটলে ভাল। রান্নার পর খোসা ফেলে দেয়া যায়। আলু অবশ্যই খোসা সমেত সেদ্ধ করা উচিত। রান্নার সময় খাবার ঢেকে রান্না করা রান্নার সময় খাবার ঢেকে রান্না করলে পুষ্টি উপাদান খাবারে থেকে যায় এবং উদ্বায়ী পুষ্টি উপাদানগুলো নষ্ট কম হয়ে থাকে। উচ্চতাপে অল্প সময়ে তরকারির টুকরা ডুবে এমন পানি দিয়ে রান্না করলে রং, গন্ধ, আকৃতি তুলনামূলক ঠিক থাকে। কিন্তু অনেকক্ষণ ধরে সেদ্ধ করলে রং-গন্ধ সবই নষ্ট হয়ে যায়। ভাতের মাড় সংরক্ষণ করা ভাতের মাড় ফেলে দেয়া উচিত নয়। কারণ, মাড়ে প্রচুর শর্করা ও ভিটামিন থাকে। তাই এমন পরিমাণ পানি দেয়া উচিত যাতে মাড় ফেলতে না হয়। মাংস ও কলিজাসেদ্ধ পানি সংরক্ষণ করা মাংস ও কলিজাসেদ্ধ পানি কখন ফেলে দিতে হয় না। কারণ এতে এদের নির্যাস ও খনিজ উপাদান পানির সঙ্গে চলে যায়। খাদ্য কেনার পর তা সংরক্ষণ খাদ্য কেনার পর পরই তা সংরক্ষণ করা উচিত। মাছ, মাংস,শাক, সবজি তাড়াতাড়ি ধুয়ে পরিষ্কার করে রেফ্রিজারেটরের (Refrigerator) মধ্যে রেখে দিতে হবে। শাক-সবজি কাঁচা খাওয়া শাক-সবজি যতদূর সম্ভব কাঁচা খাওয়া ভাল। শশা, গাজর, টম্যাটো, লেটুসপাতা কাঁচা খাওয়া উত্তম। পরিমিত তেল ব্যবহার করা তেলে ভাজা খাবার খুবই মজা লাগে কিন্তু একই তেলে বার বার ভাজা হলে সেই তেল বিষাক্ত হতে থাকে। একাধিকবার একই তেলে ভাজা হলে তা শরীরের ক্ষতি করে। তাই তেলের পরিমাণ এমন নেয়া উচিত যাতে সেই তেল রান্নার পর অবশিষ্ট না থাকে। খাবার রান্না করে স্বাদ পেয়ে আঙ্গুল চাটতে থাকি আমরা সেই সঙ্গে খাবারের গুণমানে মনটাই ভালা হয়ে যায়। কিন্তু সেই খাবারটিই যদি হয় সর্বোচ্চ পুষ্টি গুণসম্পন্ন তাহলেই তা হবে পরিপূর্ণ গুণের অধিকারী। আর সেই জন্য চাই শুধু একটু সচেতনতা।
×