ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বারির ৫৫৮ উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ১২ অক্টোবর ২০১৯

বারির ৫৫৮ উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট (বারি) এ প্রর্যন্ত ৫৫৮টি উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। এর মধ্যে রয়েছে ৩৫ টি হাইব্রিড ও ২২৩ টি অন্যান্য প্রযুক্তি জাত। তিনি বলেছেন, কৃষি বিজ্ঞানীদের এই নব নব আবিষ্কারের ফলেই আজ কৃষির সাফল্য বিশ্ব স্বীকৃত। আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে কৃষিকে সমৃদ্ধ করেছেন। সে সাথে দেশে খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা মিটাতে অনন্য ভুমিকা রাখছে। কৃষিতে ভালো ফলাফলের কারনেই দেশরতœ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেরেস’ পদক পেয়েছেন। শনিবার সকালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউ (বারি) এর কাজী বদরুদ্দোজা মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় বারি'র "গবেষণা পর্যালোচনা ও কর্মসূচি প্রণয়ন কর্মশালা-২০১৯" এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালায় সারা দেশ থেকে কৃষি বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানীগণ অংশগ্রহণ করেন। কৃষি মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচন, খাদ্য নিরাপত্তা এবং টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে কৃষির অবদান সবচেয়ে বেশি। ক্রমহ্রাসমান কৃষি জমি এবং ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠীর চাহিদা মেটাতে নতুন নতুন উন্নত ফসলের জাত ও প্রযুক্তিসমূহ কৃষকের মাঠে দ্রুত পৌঁছাতে হবে। বারি এ প্রর্যন্ত ৫৫৮টি উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছে। এর মধ্যে ৩৫ টি হাইব্রিড ও ২২৩ অন্যান্য প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছেন। এবং ২০০৯ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত ২৪৪টি উচ্চ ফলনশীল উন্নত জাত ও হাইব্রিড এবং ২৫০টি উন্নত ফসল ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। তিনটি ধাপে ৭ দিনের এই গবেষণা পর্যালোচনা ও কর্মসূচি প্রণয়ন কর্মশালার মাধ্যমে গত বছরের গবেষণা কার্যাবলীর বিশ্লেষণ ও পরবর্তী বছরের গবেষণা কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়ে থাকে, যে কারণে এই কর্মশালার গুরুত্ব অপরিসীম। হওরাঞ্চল ও চরাঞ্চলে জন্য উপযোগী শস্য বিণ্যাস প্রণয়ন ও শস্য সংগ্রহোত্তর ব্যবস্হাপনা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের নানাবিধ সময়উপযোগী পদ¶পের দরুন উৎপাদন বেড়েছে ২থেকে ৬ গুণ। মন্ত্রী বলেন, বারি আমাদের সীমিত জমিতে অধিক ফসল উৎপাদনের জন্য উচ্চ ফলনশীল ফসলের নতুন নতুন জাত, আধুনিক প্রযুক্তি উদ্ভাবন, পরিচর্যা ও সংর¶ণ পদ্ধতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশ খাদ্য উৎপাদনে সয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবনের সাথে মাটির সুরক্ষার প্রতি দৃষ্টি দিতে হবে। তবে পুষ্টি নিরাপত্তা এবং বিষমুক্ত খাদ্য উৎপাদনে আরো সমৃদ্ধি অর্জনে এগিয়ে যেতে হবে। মন্ত্রী আরও বলেন, মাঠ পর্যায়ে ফসলের নানা প্রকার রোগ-বালাই সমস্যা সনাক্ত করে ভবিষৎ পরিকল্পনা গ্রহণ করে, আরো অধিক হারে ফসল উৎপাদন করে দেশের খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে উৎপাদিত ফসলকে রপ্তানি মূখী করতে হবে। বিশেষ অতিথি কৃষি সচিব মোঃ নাসিরুজ্জামান বলেন, বারি কৃষিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে, তবে তাদের আরও অবদান রাখার স¶মতা রয়েছে। এছাড়া ভবিষ্যতে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত চ্যালেজ্ঞ মোকাবেলায় এখন থেকেই বিজ্ঞানীদের কাজ করতে হবে। এবং আগামী দুই বছরের মধ্যে মল্টার উৎপাদন বাড়ীয়ে রপ্তানি বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মোঃ আবুল কালাম আযাদ এর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মো. আব্দুল মান্নান, এমপি ও কৃষি সচিব মোহাম্মদ নাসিরুজ্জামান। অনুষ্ঠানে কর্মশালার বিষয়বস্তু উপস্থাপন করেন বরি'র পরিচালক (গবেষণা) ড. মোঃ আঃ বাহার। আমন্ত্রীত বিশেষ অতিথি বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড.কাজী এম বদরুদ্দোজা, এমেরিটাস সায়েন্টিষ্ট, এনএআরএস। এর আগে মন্ত্রী বারি'র ল্যাব গুলো পরিদর্শন করেন। এখানকার ল্যাবগুলে দ্রুত অ্যাক্রিডেটেড করার কাজ এগিয়ে চলছে। এছাড়া কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বারি’র অবসরপ্রাপ্ত মহাপরিচালকবৃন্দ, পরিচালকবৃন্দ, মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শি¶কবৃন্দ এবং সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠনের প্রতিনিধিসহ বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানী উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
×