অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ক্যাসিনো পণ্য আমদানির অধিকাংশ চালানেই বড় অঙ্কের শুল্ক ফাকি দেয়া হয়েছে। আর এসব পণ্য আমদানি করেছে চার নেপালী। চীন থেকে এসব পণ্য আমদানি করে তারাই সরবরাহ করেছে বিভিন্ন ক্লাবে।
রাজধানীতে অবৈধ ক্যাসিনোর জমকালো ব্যবসার চিত্র উন্মোচনের পর সামনে আসে কীভাবে এলো এসব ক্যাসিনো সরঞ্জাম। শুল্ক গোয়েন্দার তদন্তে বেরিয়ে আসে আমদানি নীতি আদেশে, নিষিদ্ধ পণ্যের তালিকায় না থাকার সুযোগ নিয়ে খেলার সামগ্রীর আড়ালে এসেছে রকমারি ক্যাসিনো যন্ত্রপাতি। প্রাথমিক অনুসন্ধানে দীনেশ, রাজকুমার, ভাংজু ও বুম নামে চার নেপালির এ যন্ত্রপাতি আমদানিতে সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা। কয়েক হাত ঘুরে যা গেছে বিভিন্ন ক্লাবে ও ক্যাসিনোতে। এর মধ্যে কমলাপুর আইসিডি দিয়ে আমদানি হয়েছে ৪০টি ক্যাসিনো লে আউটসহ বড় চালান। এছাড়া শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে এসেছে সাড়ে তিন হাজার পিস ক্যাসিনো কয়েন। জুতার সরঞ্জামের আড়ালেও মিথ্যা ঘোষণায় এসেছে এসব যন্ত্রপাতি।
শুল্ক গোয়েন্দার প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে বাংলাদেশি আমদানিকারকদের ক্যারিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে চার জন নেপালি ক্যাসিনো যন্ত্রপাতি এনে বিভিন্ন ক্লাবে সরবরাহ করেছে। অধিকাংশ চালানে বড় অঙ্কের শুল্ক ফাঁকি দেয়া হয়েছে।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, অনুসন্ধানে দেখেছি নেপালিরা বাংলাদেশের লোকদের মাধ্যমে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আমদানি করেছে।
এ প্রেক্ষাপটে ক্যাসিনো সামগ্রী আমদানি নিষিদ্ধে পদক্ষেপ নিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। আমদানি নীতি আদেশ সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত জুয়ার আসরে ব্যবহৃত ক্যাসিনো সামগ্রী খালাস বন্ধে ব্যবস্থা নিতে সব কাস্টম হাউসকে চিঠি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। সেই সঙ্গে ক্যাসিনো সামগ্রী আমদানি নিষিদ্ধ করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আর ক্যাসিনো যন্ত্রপাতি খালাস বন্ধে নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করছে কাস্টম হাউসগুলো।
অতিরিক্ত কমিশনার, ঢাকা কাস্টম হাউসের তাসনিমুর রহমান বলেন, আমদানি নিষিদ্ধ তালিকায় ক্যাসিনোর সরঞ্জাম ছিল না। যারা পরীক্ষা-নিরীক্ষার দায়িত্বে আছেন তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে শনাক্ত হওয়া ২৯টি চালানে ক্যাসিনো সামগ্রী আমদানিকারী ২০টি প্রতিষ্ঠানকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে শুল্ক গোয়েন্দারা। এর মধ্যে চাইনিজ মালিকানাধীন ৩টি শিল্প কারখানা, দুটি রেস্টুরেন্ট ও গেস্ট হাউস থেকে উদ্ধার করা হয়েছে জুয়া খেলার ইলেক্ট্রিক মাহাজং বোর্ড।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: