বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করার প্রতিবাদে শোকর্যালি করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচার থিয়েটার ভবনের সামনে থেকে এ শোকর্যালিটি শুরু হয়। র্যালিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, শহীদ মিনার, ফুলার রোড হয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ও ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
র্যালি শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ছাত্রলীগ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যাকা-ের বিচার দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, এ হত্যাকা-ের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা আশাবাদী এ হত্যাকা-ের বিচার দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ হবে। হত্যাকা-ে জড়িতদের শুধু ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করে দায় এড়ানো কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের সংগঠনের একটি গঠনতন্ত্র আছে, সেটা অনুযায়ী সর্বোচ্চ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে পারি। আইনশৃঙ্খলার কাজ তো আমরা করতে পারব না। দেশের যে প্রচলিত আইন আছে সেই অনুযায়ী অলরেডি গ্রেফতার হয়ে গেছে সবাই। তিনি সংগঠনের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, কোন ব্যক্তির দায় সংগঠন নেবে না। ছাত্রলীগের সুনাম নষ্টকারীরা কোনভাবেই ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারবে না। এমন কোন কর্মকা- করা যাবে না, যাতে শেখ হাসিনার উন্নয়ন নষ্ট হয়।
ছাত্রলীগ সভাপতি আরও বলেন, ব্যক্তির দায় কখনও সংগঠনের ওপর পড়া উচিত না। কারণ আমি ব্যক্তিগতভাবে যদি কোন খারাপ কাজ করি, তাহলে সে দায় কিন্তু সংগঠন নেবে না। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ একটি আদর্শিক সংগঠন। এখানে কোন অপরাধীর জায়গা নেই। ব্যক্তিগতভাবে কেউ অন্যায় করে থাকলে তার দায় তাকেই নিতে হবে।
লেখক ভট্টাচার্য বলেন, এই ঘটনা ছাত্রলীগের সিদ্ধান্তে হয়নি। কয়েকজন ব্যক্তির সিদ্ধান্তে এ ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রলীগ এ ঘটনার তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছে। হলগুলোতে ছাত্রলীগের টর্চার সেল থাকার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে লেখক ভট্টাচার্য বলেন, টর্চার সেলের সঙ্গে ছাত্রলীগ পরিচিত না। ছাত্রলীগের কেউই এ সম্পর্কে জানে না। একটি মহল চক্রান্ত করে ছাত্রলীগের নামে বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে।
প্রসঙ্গত রবিবার রাত তিনটার দিকে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের দোতলার সিঁড়ি থেকে আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। জানা যায়, সম্প্রতি সম্পাদিত বাংলাদেশ-ভারত চুক্তি নিয়ে সমালোচনা করে ফেসবুকে লেখা ও শিবিরের রাজনীতিতে সক্রিয় এই সন্দেহে তাকে হলের ২০১১ নং কক্ষে স্ট্যাম্প দিয়ে পেটান বুয়েট ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। আবরারের বাবা ১৯ জনের নামে মামলা করলে পুলিশ এখন পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেফতার করে। হত্যাকা-ের ঘটনায় ছাত্রলীগ জড়িতরা ছাত্রলীগের নেতা হওয়ায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ১১ জনকে স্থায়ী বহিষ্কার করে। এছাড়া দ্রুত বিচারের দাবিতে গত বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনও করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।