ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘লেখক শেখ হাসিনা’ শীর্ষক সেমিনার

প্রকাশিত: ১১:১৬, ১০ অক্টোবর ২০১৯

‘লেখক শেখ হাসিনা’ শীর্ষক সেমিনার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে জীবনের ৭২টি বসন্ত পেরিয়ে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ৭৩ বছরে পদার্পণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও শেখ হাসিনা রচিত ও সম্পাদিত বইয়ের প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে বুধবার দিবসটি উদ্যাপন করে বাংলা একাডেমি। এদিন বিকেলে একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘লেখক শেখ হাসিনা’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এতে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কবি কামাল চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব ড. মোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামাল। বাংলা একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। কে এম খালিদ বলেন, রাজীনিতিবিদ ও রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা যতটা আলোচিত হয়েছেন লেখক শেখ হাসিনাও ঠিক ততটা আলোচনা পাওয়ার দাবিদার। বাংলার মানুষের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক এবং সামাজিক মুক্তির লক্ষ্যে নিরলস সংগ্রামের পাশাপাশি এদেশের সাংস্কৃতিক জাগরণেও শেখ হাসিনা ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করে চলেছেন। শিক্ষাজীবনে তিনি বাংলা সাহিত্যের ছাত্রী আর রাজনৈতিক জীবনেও রয়েছে সাহিত্যের নিবিড় প্রভাব। আমাদের লেখক-সাহিত্যিক এবং সংস্কৃতিজনের যে কোন প্রয়োজনে, দুর্যোগে তিনি পাশে দাঁড়ান। এভাবেই লালন, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল আর রাজনীতির কবি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা স্বপ্নকে সফল করতে রাষ্ট্রনায়ক এবং লেখক শেখ হাসিনা হেঁটে চলেছেন অবিরাম বঙ্গবন্ধুর শতবর্ষের দিকে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিকে। প্রবন্ধ উপস্থাপনে কবি কামাল চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনার মনে সবসময় লেখকসত্তা প্রকাশের আর্তি জাগিয়ে রেখেছিল তার দেশ। তিনি বাংলা সাহিত্যের ছাত্রী ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, কিন্তু তারও আগে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির একনিষ্ঠ পাঠক হিসেবে তাকে আমরা জানি তার স্মৃতিকথায়। সাহিত্যের প্রতি প্রবল অনুরাগ ও অগ্রসর রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা এ দুয়ের মিলিত প্রকাশ শেখ হাসিনার লেখকসত্তা, সেইসঙ্গে তার সৃজন ও মননচর্চার অভিজ্ঞান। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার লেখালেখিকে মোটা দাগে দুইভাগে বিভক্ত করা যায়। একটি আত্মজৈবনিক স্মৃতিকথা, যেখানে উঠে এসেছে তার গ্রাম-জীবন, শৈশব-কৈশোরের স্মৃতি, পারিবারিক জীবন, পিতার অম্লান স্মৃতিচারণ। অন্য অংশে তার রাজনৈতিক সামাজিক অর্থনৈতিক চিন্তা ও উন্নয়নদর্শন প্রতিফলিত। তার মানবিক অঙ্গীকার, উপলব্ধির সততা আর প্রকাশভঙ্গির সারল্য একজন সফল রাজনৈতিক নেতা ও রাষ্ট্রনায়কের পাশাপাশি তাকে পরিণত করেছে একজন দায়বদ্ধ লেখকে। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ত্রিশ বছর আগে শেখ হাসিনার প্রথম গ্রন্থ ‘ওরা টোকই কেন’র ভূমিকা লিখেছিলাম আমি। তখন ভাবিনি রাজনীতির প্রবল দাবি মিটিয়ে তিনি লেখালেখি অব্যাহত রাখতে পারবেন। কিন্তু আমাদের বিস্মিত করে দিয়ে রাজনীতির পাশাপাশি লেখালেখিতেও শেখ হাসিনা সমান সক্রিয়তার পরিচয় দিয়ে চলেছেন। তার রচনায় দারিদ্র্য দূরীকরণ, শিক্ষাবিস্তার এবং গণতন্ত্রের প্রসারÑ জনমানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত এই তিনটি বিষয় মূল প্রতিপাদ্য হিসেবে ধরা দেয়। এ আয়োজনের অংশ হিসেবে শেখ হাসিনা রচিত ও সম্পাদিত বই নিয়ে একাডেমি প্রাঙ্গণে সপ্তাহব্যাপী বই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রদর্শনীটি সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। আলোচনার পর শেখ হাসিনাকে নিবেদিত স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কবি রুবী রহমান, কবি মুহাম্মদ সামাদ। কবি মহাদেব সাহার কবিতা আবৃত্তি করেন মোঃ শওকত আলী, সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতা আবৃত্তি করেন আহ্কামউল্লাহ এবং শেখ হাসিনাকে নিয়ে লেখা সৈয়দ শামসুল হকের কবিতা আবৃত্তি করেন ডালিয়া আহমেদ। রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা এবং নজরুলগীতি পরিবেশন করেন খায়রুল আনাম শাকিল।
×