ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গনে বিলীন স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টার

প্রকাশিত: ০৪:০৬, ৯ অক্টোবর ২০১৯

সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গনে বিলীন স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টার

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ জেলার উজিরপুর উপজেলার গুঠিয়া ইউনিয়নের ৯০নম্বর আশোয়ার প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। মঙ্গলবার দুপুর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে সন্ধ্যা নদীর ভাঙনে বিদ্যালয়টি বিলীন হয়ে যায়। নদীর এ ভাঙন দেখে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আজ বুধবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, নদীর তীরে বসবাসকারী পরিবারগুলো তাদের স্থাপনা, বসতঘর ও মালামাল সরিয়ে নিতে শুরু করেছে। স্থানীয়রা জানায়, উজিরপুরে সন্ধ্যা নদীর ভাঙনে গত কয়েক বছরে গুঠিয়া ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের বসতঘর, আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এবছর নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেলো বিদ্যালয়টি। আশোয়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক জগদিশ চন্দ্র হালদার জানান, ২০০৮ সালে সিডরের পর ভাঙ্গন কবলিত আশোয়ার গ্রামের বাসিন্দাদের আশ্রয়নের জন্য ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে এক কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যায়ে প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টার ভবনটি নির্মান করা হয়। তিনি আরও জানান, গত কয়েক বছর ধরে সন্ধ্যা নদীর অব্যাহত করাল গ্রাসে হানুয়া ও আশোয়ার গ্রামের প্রায় দুইশতাধিক পরিবার নদী গর্ভে সর্বস্ত্র খুইয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। আর শেষ পর্যন্ত হুমকির মুখে পরে বিদ্যালয়টি। গত তিন মাস পূর্বে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিম ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মোঃ শাহে আলম বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টারটি পরিদর্শন করে ভাঙনরোধে বালুর বস্তা ফেলার নির্দেশ দেন। এর এক মাসের মাথায় ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ভাঙ্গনরোধে অস্থায়ী প্রকল্পের মাধ্যমে ঠিকাদার ৪৩ শত বস্তা বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলেন। স্থানীয় বাসিন্দা নাজিম খলিফা, আবুল হোসেন ফকির, জহির হাওলাদারসহ অনেকেই ক্ষোভের সাথে বলেন, সাইক্লোন শেল্টারটি রক্ষার জন্য সরকারী অর্থায়নে যে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে তা ভাঙ্গন কবলিত স্থানে না ফেলে কোনমতে দায়সারা ভাবে মাটির ওপরের অংশে ফেলা হয়। এ কারনেই ভাঙনের কবল থেকে সাইক্লোন শেল্টারটি রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোসলেম আলী হাওলাদার জানান, গত কয়েকদিন ধরে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা বিদ্যায়লটি রক্ষার জন্য মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এরইমধ্যে মঙ্গলবার সকলের চোখের সামনেই বিদ্যালয়টি নদীর গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা গৃহবধূ রাবেয়া বেগম জানান, নদী ভাঙন আমাদের বাড়ি ঘর গ্রাস করে নিলেও আমরা প্রায়ই সাইক্লোন শেল্টারটিতে আশ্রয় নিতে পেরেছি। কিন্তু আমাদের শেষ আশ্রয়স্থলটিও নদী ভাঙনে বিলিন হওয়ায় আমরা এখন নিঃস্ব হয়ে পরেছি। বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষকরা জানান, দুর্গাপূজার কারনে বিদ্যালয়টি বন্ধ রয়েছে। স্কুল খোলার আগেই শিক্ষার্থীদের জন্য বিকল্প কোন ব্যবস্থা করা না হলে স্কুলটি বন্ধ হয়ে যাবে। উপেজেলা শিক্ষা অফিসার তাসলিমা বেগম জানান, বিদ্যালয়টি স্থানান্তরের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে। গুঠিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডাঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমি ও স্কুল কমিটির সদস্যরা মিলে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি টিনশেড ঘর ঠিক করে দিচ্ছি। যেখানে আপাতত শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হবে।
×