ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বডিবিল্ডার হাসিব হলির সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ১২:৫৬, ৯ অক্টোবর ২০১৯

বডিবিল্ডার হাসিব হলির সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সুদর্শন তারকা এক বডিবিল্ডার তিনি। ২০১৫ সালে জাতীয় বডিবিল্ডিং প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে ‘মিস্টার বাংলাদেশ’ খেতাব পেয়েছিলেন, ২০১৭ সালে সিঙ্গাপুরে ‘নাব্বা ওয়ার্ল্ড ফিটনেস ফেডারেশন এশিয়া মাসল ওয়ার’ বডিবিল্ডিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে অনুর্ধ-২৪ বিভাগে স্বর্ণপদক জিতে আন্তর্জাতিক বডিবিল্ডিংয়ে বাংলাদেশকে ঐতিহাসিক প্রথম স্বর্ণ এনে দিয়েছিলেন, ২০১৮ সালে সিঙ্গাপুর অনুষ্ঠিত ‘মিস্টার ইউনিভার্স ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ’-এ অংশ নিয়ে বিচ মডেল ম্যানস্ ফিজিক ক্যাটাগরিতে ১৬ জনের মধ্যে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করে আলোড়ন সৃষ্টি করেন, সবশেষে এ বছরের ১৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর ডাকে তার কার্যালয়ে গিয়ে সাক্ষাত করেন। পাঠক, এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন আমি হাসিব হলির কথাই বলছি। ২৬ বছর বয়সী হলি আবারও চমক সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন। আগামী ডিসেম্বরেই তিনি দারুণ এক ধামাকা নিয়ে আসছেন। কি সেই ধামাকা? জনকণ্ঠকে দেয়া একান্ত সাক্ষাতকারে নাব্বা ওয়ার্ল্ড ফিটনেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের বাংলাদেশ সংস্থার কোষাধ্যক্ষ হাসিব হলি জানান, ‘আমাদের সংস্থার আয়োজনে আগামী ২০ ডিসেম্বরে ঢাকার তেজগাঁওয়ের শাহীনবাগের নেভি স্কুলে অনুষ্ঠিত হবে নাব্বা/ডব্লিউ ডব্লিউ এফ মিস্টার তেজগাঁও জোনাল বডিবিল্ডিং কম্পিটিশন। এতে অংশ নেবেন দেশী-বিদেশী ৫০ বডিবিল্ডার। বিজয়ীদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় প্রাইজমানি। বাংলাদেশে এ ধরনের প্রতিযোগিতা এটাই প্রথম।’ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় এই প্রতিযোগিতায় হলি আনার চেষ্টা করছেন সিঙ্গাপুরের ডেনিস টিউকে, যিনি নাব্বা ওয়ার্ল্ড ফিটনেসের এশিয়া প্যাসিফিক জোনের সভাপতি। তার অনুমতি নিয়ে প্রতিযোগিতার পোস্টারটি ডিজাইন করা হয়েছে এবং সেটা ডেনিসের পছন্দও হয়েছে বলে জানান হলি। ডেনিস ঢাকায় আসলে তিনি প্রতিযোগিতায় চীফ জাজের দায়িত্ব পালন করবেন। বডিবিল্ডিং, মেন্স ফিজিক এবং পাওয়ার লিফটিংÑ এই তিন ইভেন্টে প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ইভেন্টে ওজন ও উচ্চতা, দ্বিতীয় ইভেন্টে উচ্চতা এবং তৃতীয় ইভেন্টে ওজন (বিভিন্ন ক্যাটাগরির) শ্রেণী থাকবে প্রতিযোগীদের জন্য। বিজয়ীরা পাবেন ১০ হাজার, ৫ হাজার ও ৩ হাজার করে টাকা, পদক, স্মারক ও সনদপত্র (পরে টাকার অঙ্ক বাড়তে পারে)। শুধু এ্যামেচার এবং নবাগতরাই এই আসরে খেলতে পারবেন। মিস্টার বাংলাদেশ হয়েছেন এমন কেউ খেলতে পারবেন না। কাজেই হলিও এই আসরে খেলতে পারবেন না। এছাড়া নিয়ম অনুযায়ী এই সংস্থার প্রতিনিধির নিজ দেশে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হলে তিনি এমনিতেই খেলতে পারেন না। বাংলাদেশের বডিবিল্ডিংকে আন্তর্জাতিক মানে নেয়ার জন্য এবং এদেশের বডিবিল্ডারদের উন্নয়নের জন্য ২০১৭ সালে নাব্বা ওয়ার্ল্ড ফিটনেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের বাংলাদেশ সংস্থা চালু করার পরিকল্পনা করেন হলি। এর এশিয়ান হেডকোয়ার্টার হচ্ছে সিঙ্গাপুরে। সবচেয়ে বড় কথা এই সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশ বডিবিল্ডিং ফেডারেশনের কোন সাংঘর্ষিক সমস্যা নেই। নাব্বা ওয়ার্ল্ড ফিটনেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম শুরু করার জন্য হাসিব ২০১৭ সালের আগস্টেই সিঙ্গাপুরের হেড কোয়ার্টারের অনুমোদন পান। এরপর কিছু পেপার ওয়ার্ক সম্পন্ন করার পর বাংলাদেশের ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্সের (এনএসআই) কাছ থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন পান। অনুমোদন পাওয়ার পর ২০১৭ সালের ডিসেম্বরেই ঢাকায় একটি উন্মুক্ত বডিবিল্ডিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে চেয়েছিলেন হলি। কিন্তু সেই আয়োজন হতে যাচ্ছে দু’বছর পর। এত দেরির কারণটা কী? বাংলাদেশের প্রথম লেভেল এ্যাডভান্সড সার্টিফাইট ট্রেনার হলি বলেন, ‘বাংলাদেশ বডিবিল্ডিং ফেডারেশনের এক বিতর্কিত সাধারণ সম্পাদকের শাস্তির ভয়ে সেবার আমাকে কথা দিয়েও বিভিন্ন জিমের মালিক এবং বডিবিল্ডাররা শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে যায়। তবে আমি হাল ছাড়িনি। এই দুই বছরে আমি একেবারেই নতুন কিছু বডিবিল্ডার তৈরি করেছি এবং তিনটি নতুন জিমের সমর্থন পেয়েছি যারা ওই সাধারণ সম্পাদকের ভয়ে ভীত নয়। এ কারণেই প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করতে দেরি হয়েছে। দেরির আরেকটা কারণ পৃষ্ঠপোষক না পাওয়া। তবে এবার সেই সমস্যা নেই। আমাদের সংস্থার সভাপতি খুলনা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র মিয়া মজিবুর রহমান। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এই প্রতিযোগিতার জন্য স্পন্সর এনে দেবেন। না পারলে পুরো টাকাটাই (প্রায় ৭ লাখ টাকা) তিনি দেবেন।’ ওই তিনটি জিম হচ্ছে (জিমের মালিকরাও সবাই হলির ছাত্র!) নাখালপাড়ার থ্রি মাসলস ফিটনেস সেন্টার, সিলেটের অক্সিজেন জিম এবং এলিফ্যান্ট রোডের আয়রন লজ ফিটনেস স্টুডিও। হলি জানান, তিনি নিজে এই দুই বছরে ৮ জন ছেলেকে বডিবিল্ডার হিসেবে তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন। নাখালপাড়ার জিমটি তৈরি করেছে ২৫ জনের মতো। এখন দেখার বিষয় আগামী ডিসেম্বরে হলি কেমন চমক-ধামাকা দেখান সংগঠক হিসেবে।
×