ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শতাধিক পরিবার রক্ষা পেল নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে

আমতলীতে সেচ্ছাশ্রমে ও নিজেদের অর্থায়নে কালভার্ট নির্মাণ

প্রকাশিত: ০৯:০৭, ৭ অক্টোবর ২০১৯

 আমতলীতে সেচ্ছাশ্রমে ও নিজেদের অর্থায়নে কালভার্ট নির্মাণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা ॥ বরগুনার আমতলী পৌরসভার নয়াবেঙ্গলী খাল সেচ্ছাশ্রমে ও নিজেদের অর্থায়নে কালভার্ট নির্মাণ করেছে এলাকাবাসী। এতে ওই এলাকার শতাধিক পরিবার পায়রা নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। সেচ্ছাশ্রমে ও নিজেদের অর্থায়নে কালভার্ট নির্মাণের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মোঃ মতিয়ার রহমান সহযোগীতার আশ্বাস দিয়েছেন। জানাগেছে, ১৯৬৮ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড নয়াবেঙ্গলী খাল কেটে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ নির্মাণ করে। ওই খালের পাড়ে দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে শতাধিক পরিবার বসবাস করে আসছেন। খালটি পায়রা নদী সংলগ্ন হওয়ায় প্রতিদিন জোয়ার-ভাটার পানি উঠানামা করে। এতে খালের পাড়ে বসবাসরত পরিবারের বাড়ী-ঘর ভেঙ্গে যাচ্ছে এবং নদীর নোনা পানি ঢুকে পুকুরের পানি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বাড়ী-ঘর ভাঙ্গন ও নোনা পানির হাত থেকে রক্ষায় উবিঘœ হয়ে পরে এলাকাবাসী। পরে স্থানীয় লোকজন সেচ্ছাশ্রমে ও নিজেদের অর্থায়নে কালভার্ট নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ওই এলাকার শতাধিক পরিবার চাঁদা তুলে সেচ্ছাশ্রমে নিজস্ব প্লানে ৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কালভার্ট নির্মাণ করে। কিন্তু অর্থাভাবে পুর্নাঙ্গ কালভার্ট নির্মাণ করতে পারেনি। এখনো পুর্নাঙ্গ কালভার্ট নির্মাণ করতে আরো প্রায় ৫ লক্ষ টাকার প্রয়োজন বলে জানান এলাকাবাসী। কালভার্ট নির্মাণ করায় ওই এলাকার শতাধিক পরিবার পায়রা নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। এতে এলাকাবাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। সেচ্ছাশ্রমিক জাহিদ জুবায়ের, জালাল আকন, মোঃ রাহাত,রাকিব,রবিন ও হিমু ফকির বলেন, নিজেরা শ্রম ও অর্থ দিয়ে কালভার্ট নির্মাণ করেছি। এর মজাই আলাদা। তারা আরো বলেন, কালভার্ট নির্মাণ করায় পায়রা নদীর পানি ঢুকে এখন আর বাড়ী-ঘর ভাঙ্গতে ও পুকুরের পানি নষ্ট করতে পারছে না। খবির ফকির বলেন, প্রবল ¯্রােতে ঘর-বাড়ী ভেঙ্গে যেত। নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে এলাকার শতাধিক পরিবারকে রক্ষায় নিজেদের অর্থায়নে ও সেচ্ছাশ্রমে কালভার্ট নির্মাণ করেছি। এতে বাড়ী-ঘর ভাঙ্গনের হাত থেকে শতাধিক পরিবার রক্ষা পেয়েছে। নজির শরীফ বলেন, সেচ্ছাশ্রমে এবং নিজস্ব অর্থায়নে কাজ করার মজাই আলাদা। আমরা এলাকাবাসী মিলে ৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে যে কাজ করেছি, যদি ওই পরিমান কাজ কোন ঠিকাদার করতো তাহলে প্রয়োজন হতো প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। তারপরও মান সম্মত কাজ হতো কিনা তার নিশ্চয়তা ছিল না। তিনি আরো বলেন, এখনো পুরাপুরি কাজ শেষ হয়নি। কাজ শেষ করতে আরো ৫ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। যদি কেউ এগিয়ে আসে তো ভালো, নয়তো চাঁদা তুলে নিজেরাই কাজ শেষ করবো। সেচ্ছাশ্রমে ও নিজস্ব অর্থায়নে কালভার্ট নির্মাণের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে কাউন্সিলর জিএম মুছা বলেন, সরকারী ও পৌরসভার বরাদ্দের দিকে না তাকিয়ে এলাকাবাসী সেচ্ছাশ্রমে ও নিজেদের অর্থায়নে যে কাজটি করেছে তা প্রশংসনীয়। আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মোঃ মতিয়ার রহমান বলেন, সেচ্ছাশ্রমে ও নিজেদের অর্থায়নে কালভার্ট নির্মাণ করেছে এটা অত্যান্ত ভালো। প্রতিটি মানুষের ভালো কাজে এগিয়ে আসা উচিত। একটি ভালো কাজই পারে আরেকটি ভালো কাজে উৎসাহিত করতে। তিনি আরো বলেন, ওই খাল দিয়ে পায়রা নদীর পানি ঢুকে পুকুরের মিঠা পানি দুষিত করে এবং পানি ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। আমি ওই এলাকা পরিদর্শন করবো। যাতে আরো ভালো হয় সেই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমতলী উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ গোলাম সরোয়ার ফোরকান বলেন, এলাকাবাসী মিলে সেচ্ছাশ্রমে কালভার্ট নির্মাণ করেছে এটা একটি ভালো উদ্যোগ। ভালো কাজে সকলেরই এগিয়ে আসা উচিত।
×