ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দৌলতপুরে পানিবন্দী ১৫ হাজার পরিবারের দূর্ভোগ চরমে

প্রকাশিত: ০৮:২১, ৩ অক্টোবর ২০১৯

 দৌলতপুরে পানিবন্দী ১৫ হাজার পরিবারের দূর্ভোগ চরমে

নিজস্ব সংবাদদাতা, দৌলতপুর, কুষ্টিয়া ॥ কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের কোন গ্রামে বা বাড়ি আঙিনায় বন্যার পানি যেতে আর বাঁকী নেই। দুই ইউনিয়নের পানিবন্দী অসহায় পরিবারের চরম দুর্ভোগে পড়েছে। বাড়ির আঙিনায় ও ঘরের মধ্যে কোমর পানির মধ্যে অবর্ননীয় কষ্টে বসবাস করছেন প্রায় ১৫ হাজার পরিবার। বাঁধ উপচে ও স্লুইচ গেট ভেঙ্গে বন্যার পানি ঢুকেছে ফিলিপনগর ও মরিচা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে। বন্যার পানি বৃদ্ধির তীব্রতায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের পানিবন্দী সব মানুষসহ ফিলিপনগর ও মরিচা ইউনিয়নের বন্যাকবলিতরা। এদিকে বন্যার পানিতে ডুবে সোহাগ (৭) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ভাগজোত কলনীপাড়া এলাকায় বাড়ির পাশে জলমগ্ন বন্যার পানিতে ডুবে ওই শিশুর মৃত্যু হয়। সে একই এলাকার ইকবাল হোসেনের ছেলে। বিকেলে বাড়ির পাশে বন্যার পানিতে পড়ে সে তলিয়ে যায়। পরে তার ভাষমান লাশ উদ্ধার করে এলাকাবাসী। এছাড়াও সাপসহ বিভিন্ন প্রকার বিষাক্ত পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়েছে। যার কারনে আতংকেও রয়েছে বানভাষীরা। তবে বন্যাকবলিতদের মাঝে ত্রান তৎপরাতা অব্যাহত রয়েছে। দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার জানিয়েছেন, চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বন্যার্তদের মাঝে প্রতি প্যাকেট ১৬ কেজি পরিমান ৯০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন আরও ১০ টন চাল ত্রান হিসেবে বরাদ্দ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বন্যার্তদের মাঝে শুকনো খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। তিনি বলেন, বন্যার্তদের পাশে থেকে সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে। উল্লেখ্য, পদ্মা নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির ফলে চিলমারী ইউনিয়নের ১৮টি গ্রাম এবং রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নে ১৯টি গ্রামসহ ৩৭টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়ে সব মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বন্যাকবলিত পানিবন্দী মানুষের দূর্ভোগ দূর্দশা চরম আকার ধারণ করেছে। বিশুদ্ধ পানি ও গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। প্রায় ১৫০০ হেক্টর জমির মাসকলাইসহ বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে কৃষকদের প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের বৈরাগীরচর এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙ্গে পদ্মার পানি প্রবেশ করে বিভিন্ন এলকা প্লাবিত হয়েছে। ভুরকা এলাকায় স্লুইচ গেট ভেঙ্গে বন্যার পানি ঢুকে ভুরকা, বালিরদিয়াড়, মাজদিয়াড়, বৈরাগীরচর উত্তরপাড়া ও বৈরাগীরচরো বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে কৃষকের ফসল ও বাড়ি-ঘর। এদিকে পদ্মা নদীর পানি হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর প্রবাহিত হচ্ছে। কুষ্টিয়ার পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য মতে, পদ্মা নদীতে হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টে পানি প্রবাহের বিপদসীমা ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত পানি প্রবাহের মাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৩৩ সেন্টিমিটার। যা বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
×