ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সীতাকুণ্ডে ৩ দিনে ২০০ মেট্রিক টন ইলিশ আটক

প্রকাশিত: ০৬:৫৭, ৩ অক্টোবর ২০১৯

  সীতাকুণ্ডে ৩ দিনে ২০০ মেট্রিক টন ইলিশ আটক

নিজস্ব সংবাদদাতা, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) ॥ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য অধিদপ্তর কর্তৃক ঘোষিত মা মাছ না ধরার কারনে বিগত বছরের ন্যায় এ বছর প্রচুর ইলিশ ধরা পড়েছে জেলেদের জালে। গত কয়েক বছর ইলিশ মাছের অনেকটা আকাল ছিল সমুদ্রে। কিন্তু গত ২/১ বছর দেশের সবগুলো উপকূলীয় এলাকায় জেলেদের মুখে হাসি। পক্ষান্তরে বরফ অপ্রতুল ও দাম সীমাহীন হওয়ায় মাছ নিয়ে মজুদে বিপাকে পড়ছে সাধারণ জেলেরা। বরফের সংকট ও অতিরিক্ত ছোট ইলিশ মাছ জেলেদের জালে আটকা পড়লেও বিক্রি করতে না পারার কারনে, মাছ পচে যাওয়ায় সাগরে ফেলে দিচ্ছে জেলেরা। তবে ঝাঁকে ঝাঁকে ছোট ইলিশ ধরা পড়লেও বড় ইলিশ তুলনামূলক কম পড়ায় দামও ছিল খুব বেশি। জানা যায়, বঙ্গাংব্দ মাস আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র মাসে মাছের মৌসুম। বছরের এ মাস গুলোতে জেলেরা তাদের সকল দেনা-পাওনা মিটিয়ে স্বাবলম্বী পথ বেছে নেয়। কিন্তু মজুদকৃত বরফ থেকে জেলেদের জালে বেশি মাছ ধরায়,বরফ সংকটে মাছ নিয়ে হিমসিম খেতে দেখা গেছে জেলেদের। উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের কুমিরাঘাট, বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বোয়ালিয়াকুল, সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ফকিরহাট, মির্জানগর জেলেপাড়া, ভাটিয়ারী শনিঠাকুর পাড়া, ফৌজদারহাট সাগরপাড়ে সরেজমিনে দেখা যায়, জেলেরা সমুদ্র থেকে মাছ আহরণ করে লাল বোড নিয়ে আসার আগে, সাধারণ মানুষদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ করা যায় সমুদ্র উপকুলে। মাছ নিয়ে লাল বোড তীরে ভীর করার পর সাথে সাথে সাধারণ ক্রেতারা খাছি অনুযায়ী দরকষাকষির ও মাছ বেশি ধরা পরায় সুযোগ বুঝে সাধারণ ক্রেতারা কম দাম দিয়ে মাছ ক্রয় করে নেয়। তবে সীতাকুণ্ড পৌরসদর আড়ৎ থেকে ছোট ইলিশ ১৫০/২০০টাকা ক্রয় করা গেলেও এক কেজি ওজনের ইলিশ ক্রেতারা ক্রয় করছে ৪০০/৫০০টাকায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বড় ইলিশ কিনতে আসা ছোট দারোগারহাটের মো.মোশারফ বলেন,‘টনে টনে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়লেও আকারে খুবই ছোট। বড় ইলিশ কিনতে ঠিকই আগের মত ৪শত থেকে ৫শত টাকা লাগছে।’ মির্জানগরের রাখাল জলদাস জানান, ‘সৃষ্টিকর্তার কৃপায় গত বছরের মত এবারও প্রচুর মা মাছ সহ ছোট সাইজের ইলিশ ধরা পড়ছে আমাদের জালে। প্রতিদিন চার বার আমরা সাগর থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাছ ধরে তীরে নিয়ে আসি। আসা করি যে, এবার ন্যায্য মূল্য পাব। কিন্তু না। তীরে দেখি কিছু অসাধু বরফ ব্যবসায়ী বরফ দাম দ্বিগুণ ও সংকট করে দেওয়ার তীরে আনা তরতাজা মাছ গুলো নিয়ে হিমসীম খাচ্ছি। পক্ষান্তরে দেখা যায়, চলতি বছরে নতুন করে হিজরার মহিলার একটি গ্রুপ(৬-৭জন) রাতে তীরে মাছ নিয়ে আসার পর প্রত্যেক খাছি থেকে জোড় পূর্বক দু-একটা বড় বড় (৮০০গ্রাম প্রায়) নিয়ে যায়। কথাটি জেলে সর্দ্দারকে সহ দাতন দাতাকে অবগত করলে তারা আশ্বাস দেয় আমরা ওদের বুঝিয়ে বলল। যদি তাতে না হয় আমরা প্রশাসনের আশ্রয় গ্রহণ করব।’ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার মো.শামীম উদ্দিন জানান, ‘এ বছরের জন্য ইলিশের এটাই শেষ অমবশ্যা। আগামী ০৯ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত মা ইলিশ ধরা সম্পর্ণ বন্ধ থাকবে। বিগত তিন দিনে সীতাকুণ্ড উপজেলা ২০০ মেট্রিক টনের অধিক মাছ ধরা পড়েছে। গত বছরের তুলনা জেলেদের এটা জেনে খুশি হবে মা মাছ ধরা প্রায় দুই সপ্তাহ কমে আসছে। মা মাছ ধরা বন্ধ করার কয়েক দিন পূর্বে উপজেলার সকল স্থানে প্রচার ও মাইকিংসহ বিভিন্ন সর্তকবর্তা ব্যানার ও নোটিশ জারি করা হবে। যদি কেউ সরকারের এ আইন লঙ্গন করেন তার বিরুদ্ধে মৎস্য আইন অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি জানান।’
×