ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্নীতির অভিযোগে রাবিউপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ৩ অক্টোবর ২০১৯

  দুর্নীতির অভিযোগে রাবিউপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি

রাবি সংবাদদাতা ॥ নিয়োগে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি উঠেছে। সম্প্রতি বিশ^বিদ্যালয়টির উপ-উপাচার্য চৌধুরী মো. জাকারিয়ার সঙ্গে এক চাকরি প্রত্যাশীর স্ত্রীর দরকষাকষির ফোনালাপ ফাঁস হওয়ায় এই দাবি ওঠে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেএই দাবিতে ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচী পালন করছেন বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এদিন সকাল ১০টায় দুর্নীতি মুক্ত শিক্ষাঙ্গনের দাবিতে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ফরিদ উদ্দীন নগ্ন পায়ে জোহা চত্বরে অবস্থান নেন। পরে সিনেট ভবনের সামনে ‘দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষক সমাজ’র ব্যানারে বর্তমান প্রশাসনকে ‘স্বাধীনতাবিরোধী ও দুর্নীতিবাজ’ উল্লেখ করে প্রশাসনের অপসারণ দাবি করেন বেশ কিছু শিক্ষক। সেখানে তারা প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।একই দাবিতে সংহতি জানিয়ে শিক্ষকদের কর্মসূচিতে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। পূজার ছুটির মধ্যে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য পদত্যাগ না করলে আরও বড় আন্দোলনের ঘোষণা দেন তারা। এর আগে বুধবার দুপুরে প্রশাসনের আহ্বানে উপাচার্য আব্দুস সোবাহানের সঙ্গে আলোচনায় বসেন প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা। এসময় তারা উপ-উপাচার্য চৌধুরী মো. জাকারিয়ার অপসারণ দাবি করেন। আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় এদিন সন্ধ্যায় তারা ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল করে এবং লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেয়। শিক্ষকদের কর্মসূচিতে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সুজিত কুমার বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন ঘুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন তখন রাবির একজন কর্ণধার চৌধুরী জাকারিয়া বলেন, তোমরা কতটাকা দিতে পারবা? এর মানে কি দাঁড়ায়? তাই আমি দুর্নীতির সাথে জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ক্যাম্পাসের সাংবাদিকরা সঠিকভাবে বস্তুনিষ্ঠভাবে মতপ্রকাশ করতে পারছে না। একটা বাধা আছে। সেটা সরে গেলেই জাতির সামনে দেশের সামনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক দুর্নীতির খবর বেরিয়ে আসবে। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সাবেক প্রশাসক অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদী বলেন, বর্তমান প্রশাসনের দুর্নীতির কারণে সর্বোচ্চ রেজাল্ট ৩.৮৬৯ পেয়েও শিক্ষক হতে পারে না, কিন্তু উপাচার্যের জামাতা হওয়ার কারণে ৩.২৫ হওয়ার কারণে তাকে চাকুরিতে নিয়েছেন। একই ঘটনা উপ-উপাচার্যের জামাতার ক্ষেত্রেও। প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাতে উপ-উপাচার্য চৌধুরী মো. জাকারিয়ার সঙ্গে আইন বিভাগের চাকরি প্রত্যাশী নুরুল হুদার স্ত্রীর দর কষাকষির ফোনালাপ ফাঁস হয়। ওই নিয়োগে উপ-উপাচার্যের জামাতা এবং এক আওয়ামীলীগ নেতার মেয়ের নিয়োগ হলেও অনুষদে সেরা ফলাফল করায় প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক প্রাপ্ত শিক্ষার্থী নুরুল হুদার চাকরী হয়নি। এর আগে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের নিয়ম পরিবর্তন করে জামাতাকে নিয়োগ দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে উপাচার্য আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে।এছাড়াও গত সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে ‘জয় হিন্দ’ স্লোগান দিয়েও ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন উপাচার্য।
×