ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশে রেনিটিডিন ট্যাবলেট উৎপাদন ও বিক্রি নিষিদ্ধ

প্রকাশিত: ১০:২২, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 বাংলাদেশে রেনিটিডিন ট্যাবলেট উৎপাদন ও বিক্রি নিষিদ্ধ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবশেষে দেশের বাজারে রেনিটিডিন ওষুধের কাঁচামাল আমদানি, উৎপাদন ও বিক্রি সাময়িক নিষিদ্ধ হয়েছে। রবিবার মহাখালীতে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের সভাকক্ষে বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর ওষুধ প্রশাসন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে আজ সকল জাতীয় দৈনিকে গণবিজ্ঞপ্তি জারি হবে। বিশ্বের শীর্ষ ওষুধ প্রস্তুতকারী ব্রিটিশ সংস্থা গ্ল্যাক্সো স্মিথ ক্লাইন (জিএসকে) এক সময় গ্যাস্ট্রিক চিকিৎসায় বহুল ব্যবহৃত রেনিটিডিন ট্যাবলেটে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদানের উপস্থিতি ধরা পড়ার পর বিশ্ববাজার থেকে ওষুধটি তুলে নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। এ কারণে বাংলাদেশও ওষুধটি বিক্রি নিষিদ্ধ করল। ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান জনকণ্ঠকে জানান, ভারতের মেসার্স সারাকা ল্যাবরেটরিজ লিঃ এবং ডক্টর রেড্ডি নামীয় কাঁচামাল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান দুটি থেকে আমদানি করা রেনিটিডিন হাইড্রোক্লোরাইড কাঁচামাল দিয়ে রেনিটিডিন জাতীয় সব ধরনের ডোসেজ ফর্মের ওষুধ উৎপাদন সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে উল্লিখিত সোর্স দুটি থেকে আমদানি হওয়া রেনিটিডিন হাইড্রোক্লোরাইড কাঁচামালে উৎপাদিত সব ওষুধ কোয়ারেন্টাইন করে রাখতে হবে, বিক্রি ও বিতরণ করা যাবে না। উল্লিখিত সোর্স থেকে রেনিটিডিন হাইড্রোক্লোরাইড কাঁচামাল আমদানিও করা যাবে না। রেনিটিডিন হাইড্রোক্লোরাইডে ‘এনজিএমএ’র মাত্রা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃত ল্যাবরেটরির মাধ্যমে পরীক্ষা করে সার্টিফিকেট অব এ্যানালাইসিস রিপোর্ট ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরে দাখিল করতে হবে। এ বিষয়ে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে এবং অন্যান্য রেগুলেটরি অথরিটি গৃহীত ব্যবস্থার আলোকে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। মহাপরিচালক বলেন, রেনিটিডিন কাঁচামাল আমদানি, উৎপাদন ও বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা সাময়িক। কোম্পানিগুলো বাজার থেকে রেনিটিডিন নমুনা সংগ্রহ করে নিজস্ব ল্যাবে ক্ষতিকর কিছু আছে কিনা তা দেখে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরকে অবহিত করবে। এছাড়া অধিদফতরও নিজস্ব উদ্যোগে রেনিটিডিন ট্যাবলেটের গুণগত মান পরীক্ষা করবে। ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর জানায়, বর্তমানে বাংলাদেশের ৩১ ওষুধ কোম্পানি প্রতিবেশী দেশ ভারতের ফারাক্কা নামক একটি কোম্পানি থেকে রেনিটিডিন ট্যাবলেটের কাঁচামাল আমদানি করে। ডক্টর রেড্ডি নামে আরেকটি কোম্পানির কাঁচামাল আমদানিতে আগে থেকেই কালো তালিকাভুক্ত থাকায় সেখান থেকে আমদানি করা হয়নি। জনস্বার্থ বিবেচনায় এ দুটি কোম্পানি থেকে রেনিটিডিনের কাঁচামাল আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়। ওই কোম্পানি থেকে আমদানি করা কাঁচামাল দিয়ে নতুন করে কোন রেনিটিডিন উৎপাদন করা যাবে না। শুধু তাই নয়, বাজার থেকে কোম্পানিগুলো স্ব উদ্যোগে রেনিটিডিন ট্যাবলেট প্রত্যাহার করে নেবে। বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির নেতাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, সরকার জনস্বাস্থ্য বিষয়ে অনেক সতর্ক ও সচেতন। বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির নেতারা জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় নিয়ে স্বপ্রণোদিতভাবে বাজার থেকে রেনিটিডিন প্রত্যাহার, নতুন করে কাঁচামাল আমদানি ও উৎপাদন না করার বিষয়ে সর্বসম্মত হন।
×