ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সারাদেশে হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি

প্রকাশিত: ১০:২২, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সারাদেশে হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিদায়ের আগে সক্রিয় হয়ে উঠেছে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু। কাগজে-কলমে শরৎকাল হলেও অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যেই বিদায় নিচ্ছে বর্ষা। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের অনেক স্থানে রবিবার হাল্কা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হয়েছে। এতে সচিবালয়সহ নগরীর বেশ কিছু এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে সাময়িক জলাবব্ধতা। অক্টোবরে এক থেকে দুটি মৌসুমি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে, ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে একটি। আজ সোমবারও দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়া অফিস জানায়, শরৎকালের চারভাগের তিনভাগ চলে গেছে। এ সময় রবিবার হঠাৎ করেই তৈরি হয় বর্ষার আবহ। দুপুরের দিকে শুরু হয় ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। মাঝে মধ্যেই তা বেড়ে যায়। এভাবে একটানা প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৃষ্টি ঝরেছে রাজধানীতে। অপ্রস্তুত নগরবাসী পড়ে চরম দুর্ভোগে। অনেকেই বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে হেটে যান। এরপর থেমে থেমে বৃষ্টি রাত পর্যন্ত চলে। কখনও ঝিরিঝিরি, কখনও মুষলধারার বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়ে কর্মস্থল থেকে বাসায় ফিরেছেন কর্মজীবী মানুষ। নগরীর অনেক জায়গায় বৃষ্টির পানিতে ভরে গেছে খানাখন্দ। এসব জায়গায় বহু পথচারী দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। ফুটপাথের দোকানপাট উঠে গেছে। রবিবারের বৃষ্টিতে সচিবালয়, হাজারীবাগের নিম্নাঞ্চল, রাজধানী সুপার মার্কেট, নিউ মার্কেট, ধানম-ির অনেক স্থানেই চরম দুর্ভোগে পড়ে মানুষ। পুরান ঢাকা, পীরেরবাগ, সেনপাড়া পর্বতা, শ্যাওড়াপাড়া, আদাবর, মোহাম্মদপুর, নাখালপাড়া, মিরপুর, টিকাটুলি, বাসাবো, মুগদা, শ্যামলী, রামপুরা, রাজারবাগ, ফকিরাপুল, শান্তিনগর, মৌচাক, মালিবাগ, মতিঝিলসহ আশপাশের এলাকায় সৃষ্টি হয় সাময়িক জলাবদ্ধতা। বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার অজুহাত দেখিয়ে চালকরা অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়ে দেন রিক্সা, অটোরিক্সা ও ট্যাক্সিক্যাবের ভাড়া। রাজধানীর অনেক এলাকার মতো প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়েও অল্প বৃষ্টিতেই পা ডোবে পানিতে। রবিবারের বৃষ্টিতে সচিবালয়ের ভেতরে চার জায়গায় পানি জমে যায়। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমছে, আর তা আটকে থাকছে দীর্ঘ সময়। এতে চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। রবিবার দুপুরে সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের মূল প্রবেশ পথে সবচেয়ে বেশি পানি জমে ছিল। ৩ নম্বর ভবনের পূর্ব পাশ ও মাঝের বাগানে, ৫ নম্বর ভবনের পশ্চিম দিকে ফটকের সামনে ক্লিনিক ভবনের পেছনেও পানি জমে থাকে অনেকক্ষণ। গাড়িতে যারা ৬ নম্বর ভবনে আসেন, তাদের একেবারে ভবন ঘেঁষে গাড়ি দাঁড় করিয়ে নামতে হয়েছে। অনেককেই দেখা যায় এক ভবন থেকে আরেক ভবনে যাচ্ছেন জুতা-স্যান্ডেল হাতে নিয়ে। আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, অক্টোবরে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টি হতে পারে। এ মাসে ঢাকা বিভাগে ১৫২ মিলিমিটার, ময়মনসিংহে ১৯১ মিমি, চট্টগ্রামে ১৮৬ মিমি, সিলেটে ১৮৭ মিমি, রাজশাহীতে ১১৩ মিমি, রংপুরে ১৩৪ মিমি, খুলনায় ১২০ মিমি ও বরিশালে ১৭৬ মিলিমিটার স্বাভাবিক বৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়া অফিস বলছে, এখন মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয়। ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে মাঝারি বা ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকাসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলেছে, মৌসুমি বায়ু বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে অসম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। একটি অংশ উত্তর পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত হলেও তা দুর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
×