ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

স্বামীর বেধড়ক মারধরে গৃহবধূ আহত

প্রকাশিত: ০৭:০৩, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

  স্বামীর বেধড়ক মারধরে গৃহবধূ আহত

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া ॥ কৃষিকাজে ব্যবহারের কোদালের কোপে গলা কেটে হত্যা চেষ্টা চালানো হয়েছিল। চর-থাপ্পড়ে কানে এখন ঠিকমতো শুনতে পায়না। শরীরের না দেখানো জায়গায় ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। বলতে না পারার মতো অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে। নির্মম আচরণের শিকার এই তরুণী গৃহবধূ তাবিকুন্নাহার ঝুমুর এখন হাসপাতালের শয্যায় কাতরাচ্ছেন। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র এলাকা চরনিশানবাড়িয়া এলাকায় স্বামী মীর রফিকুল ইসলামকে নিয়ে এ গৃহবধূর ১৭ বছরের ঘরসংসার। ঝুমুর জানায়, গেল বছর হঠাৎ স্বামীর পরকীয়ায় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু দমাতে পারেন নি। ওই মহিলা (অন্যের স্ত্রী) জোসনাকে নিয়ে উধাও হয়। এরপরে মাস তিনেক আগে তাকে নিয়ে কলাপাড়া পৌরশহরে বসবাস করছে। এসব বিষয় নিয়ে জীবন দুর্বিসহ হয়ে ওঠে ঝুমুরের। দশম শ্রেণি, পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া ছাড়াও দুই বছর বয়সী এক কন্যা সন্তানসহ তিন মেয়েকে নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ঝুমুর কান্নাঝড়া কন্ঠে জানান, বিয়ের পর থেকে এক ধরনের বন্দী করে রাখা হতো। মোবাইল ব্যবহার করতে দেয়া হয়নি। মারধর, জ্বালাতন নিত্যদিনের ঘটনা ছিল। মানসিক পীড়নে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। এরপরে আরেকটি বিয়ে। সন্তানদের লেখাপড়াসহ নিজের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। ভাইদের কাছে পড়শি একজনের মোবাইলে খবর দেয়। তারা আনতে গেলে তাড়িয়ে দেয়। সবশেষ এ কারণে আরও ক্ষীপ্ত হয়ে রফিকুল মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে পরিকল্পিতভাবে গালাগাল থেকে মারধর শুরু হয়। এক পর্যায় জবাই করে হত্যার ঘোষণা দিয়ে দাও খুজতে থাকে রফিকুল। দৌড়ে দোতলায় ওঠতে যায় ঝুমুর। সিঁড়ির কাছে কোদাল পেয়ে রফিকুল তা দিয়েই ঘাঁড়ের ওপর কোপ দেয়। কিছুটা আঘাত লেগে থেতলে যায়। পড়শি একজনে মোবাইলে ঝুমুরের এক ভাইকে জানায়। এলাকার মেম্বারের সহায়তায় পরের দিন উদ্ধার হয়। বুধবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে। চিকিৎসক আশরাফুল জানান, শরীরের বিভিন্ন ধরনের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এখন ফের কানের পর্দায় সমস্যার কথা বলছে। ওই চিকিৎসা অন্যত্র করাতে হবে। ঝুমুর কান্নাজড়িত কন্ঠে এসব বলে জানায়, আমারে বন্দী কারাগারের মতো রাখা হতো। কোন আত্মীয় সজনের সঙ্গে দেখা করতে দিতনা। সবশেষ মঙ্গলবার রাইতে খুন করতে চেয়েছিল। দিশেহারা এ গৃহবধুকে তার শ্বশুর আব্দুল হক ও শাশুড়ির সামনে বসেই এমন নির্দয় নির্যাতন করা হতো বলে ঝুমুরের দাবি। বর্তমানে সে দিশেহারা হয়ে গেছে। তিন সন্তান নিয়ে কী করবেন তাও বুঝে উঠতে পারছেন না। শুধু চোখের জল ফেলে কান্না করছেন। করছেন আহাজারি। অভিযুক্ত মীর রফিকুলকে মোবাইল করলে তিনি রিসিভ করেননি। কলাপাড়া থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম জানান, তিনি এ ধরনের কোন অভিযোগ পাননি। পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×