ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

হবিগঞ্জে মাদ্রাসা শিক্ষকের বেত্রাঘাতে শিশু শিক্ষার্থী অন্ধ হবার উপক্রম

প্রকাশিত: ০৯:২৩, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯

হবিগঞ্জে মাদ্রাসা শিক্ষকের বেত্রাঘাতে শিশু শিক্ষার্থী  অন্ধ হবার উপক্রম

নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ ॥ দায়িত্ব পালনে উদাসিন হবিগঞ্জের হাতিরখান হাফিজিয়া মাদ্রাসার এক শিক্ষকের নিষ্ঠুর নির্যাতনে শিকার হয়েছেন মোজাম্মেল হোসেন (৭) নামে এক শিশু ছাত্র। বেদম বেত্রাঘাতে দু’চোখ ও দেহের নানা স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে এই শিশুটি এখন হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে মৃত্যু যন্ত্রনায় ছটফট করছে। ইতিমধ্যে শিশুটির দু’চোখই থেতলে গেছে বলে কর্তব্যরত ডাক্তারগণ জানিয়েছেন। সেই সাথে চোখ দুটি নস্ট হয়ে অন্ধও হয়ে যেতে পাওে শিশুটি এমন আশংকাই করছেন ডাক্তার সহ পরিবারের সদস্যরা। সে জেলার বাহুবল উপজেলাধীন হাফিজপুর গ্রামের বিল্লাল হোসেনের ছেলে। পুলিশ, সহপাঠি ও শিক্ষরা জানায়, শ্রেনী কক্ষে পাঠদান না করে বরং গতকাল ২০ সেপ্টেম্বর দুপুরে ওই মাদ্রাসায় বসে লুডু খেলছিলেন শিক্ষক হাফেজ নাঈম আহমেদ। এসময় শিশু মোজাম্মেল সেখানে উপস্থিত হয়ে তার এই শিক্ষকের সাথে কোন একটা কিছু বলতে চাইছিল। কিন্তু শিক্ষক বিরক্ত মোজাম্মেলকে বেদড়ক বেত্রাঘাত শুরু করেন। এতে শিশুটি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং তার দুই চোঁখ ও দেহের একাধিক স্থানে মারাত্মক জখমপ্রাপ্ত হয়। এদিকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ মোজাম্মেলের বাবা-মাকে জানায় তাদের সন্তান দুর্ঘটনায় ব্যথা পেয়েছে। এ খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন মাদ্রাসায় এসে দেখতে পান মোজাম্মেল গুরুতর আহত অবস্থায় ছটফট করছে। তখন তারা মোজাম্মেলের এমন অবস্থা জানতে চাইলে কর্তৃপক্ষ নানা বিরক্তিকর কথাবার্তা বলে এবং তাকে বাড়ীতে বা হাসপাতালে নিয়ে যেতেও বাঁধা দেন। এসময় ব্যাপক তোপের মুখে কর্তৃপক্ষ পড়লে শেষ পর্যন্ত মোজাম্মেলকে তার মায়ের সাথে যেতে দেয় তারা। এরই ফলশ্রুতিতে এদিন মোজাম্মেলকে প্রথমে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেপ্লক্সে এবং পরিবর্তিতে গতকাল রবিবার রাতে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মোজাম্মেলকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে প্রেরন করেন ডাক্তার। যথারীতি তাকে ভর্তি করা হয় এই হাসপাতালে। এখন চিকিৎসা চললেও কর্তব্যরত ডাক্তার জানিয়েছেন মোজাম্মেলের দু’চোঁখ সহ দেহের বিভিন্ন স্থানে বেত্রাঘাতের গুরুতর জখম রয়েছে। এছাড়া তার দু’চোখ থেতলে গেলেও বাম চোখ বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। প্রয়োজনে ঢাকায় পাঠানো হতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত সংশ্লিস্ট উপজেলা বা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এমনকি পুলিশ বা জেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করায় মোজাম্মেলের পরিবার সহ এলাকার মানুষ চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষকের সাথে নানাভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সন্ধান মেলেনি।
×