ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বঙ্গবন্ধু প্রযুক্তি ভার্সিটিতে অনশনসহ শান্তিপূর্ণ আন্দোলন

প্রকাশিত: ০৯:৩৯, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 বঙ্গবন্ধু প্রযুক্তি  ভার্সিটিতে অনশনসহ  শান্তিপূর্ণ  আন্দোলন

নিজস্ব সংবাদদাতা, গোপালগঞ্জ, ২২ সেপ্টেম্বর ॥ গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিনের অপসারণের দাবিতে চলছে আমরণ অনশনসহ শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন। এ আন্দোলনের চতুর্থ দিনে রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনশনরত শিক্ষার্থীরা তাদের ওই এক দফা, এক দাবি জানিয়ে এ ভিসির অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবেই বলে ঘোষণা দিয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থী-আন্দোলন থামাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শনিবার সকাল ১০ টার মধ্যে শিক্ষার্থীদেরকে আবাসিক হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়; কিন্তু তারা হল ত্যাগ করেনি। শুক্রবার রাতেই সকল হলে ডাইনিং বন্ধ করে দেয়। শনিবার ভোর থেকে হলসমূহের বিদ্যুত ও পানির লাইন বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসহ সকল প্রবেশদ্বার বন্ধ করে দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াতের সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। তাতেও যখন শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের পথ ছাড়েনি তখন ভিসি সমর্থিত পেটোয়া বাহিনী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়, তাদের মধ্যে অন্তত ১৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়; অনেকে পানি ঝাঁপিয়ে, বিল পাড়ি দিয়ে প্রাণ বাঁচায়। তারপরও শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ছাড়েনি বরং তাদের আন্দোলন ক্রমেই বেগবান হয়ে ওঠে এবং উৎকণ্ঠা, উত্তেজনা ও আশঙ্কার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে ভিসিবিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকে। এদিকে গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভার্সিটির এসব খবরে খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদের ঝড় ও গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারের ফলে শনিবার বিকেল নাগাদ ভিসি সমর্থিত বহিরাগতরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা পুনরায় শান্তিপূর্ণ আমরণ অনশনসহ আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকে। পরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার দায় এড়াতে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোঃ নূরউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে হামলার বিষয়টি তদন্তের জন্য তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট প্রদানের নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রবিবার বেলা ১২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের অনশনসহ চলমান আন্দোলনে ইউনিয়নবাসী নিয়ে একাত্মতা ঘোষণা করেন পার্শ্ববর্তী গোবরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান চৌধুরী সফিকুর রহমান (টুটুল)। এর কিছুক্ষণ পরই সেখানে যান গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী এমদাদুল হক, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, সহসভাপতি শেখ রুহুল আমীন, প্রচার সম্পাদক বদরুল আলম বদর, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও গোপালগঞ্জ পৌর মেয়র কাজী লিয়াকত আলী লেকু, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিটু, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা সোলায়মান বিশ্বাস, জেলা যুবলীগ সভাপতি জি এম সাহাবুদ্দিন আযম, সাধারণ সম্পাদক এম বি সাইফ বি মোল্যা ও জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল হামিদসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বেশ কয়েক নেতৃবৃন্দ। সেখানে তারা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য রেখে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মুহূর্তে দেশের বাইরে আছেন, তিনি দেশে ফিরলেই বিষয়টির সমাধান করা হবে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী দেশে না ফেরা পর্যন্ত তারা শিক্ষার্থীদেরকে এ আন্দোলন স্থগিত রাখার অনুরোধ জানান। ভিসির কুশপুতুল দাহ ॥ ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ভিসি খোন্দকার নাসির উদ্দিনের কুশপুতুল দাহ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থী। ভিসির অপসারণ ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীর ওপর হামলাকারীদের শাস্তির দাবিতে এ কর্মসূচী পালন করে তারা। শনিবার রাত ৮ টার দিকে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ ম্যুরালের সামনে ভিসির কুশপুতুল দাহের এ প্রতিবাদী কর্মসূচী পালন করে শিক্ষার্থীরা।
×