ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রযুক্তিনির্ভর জ্ঞানার্জনে ‘ফ্রি ইন্টারনেট’ সুবিধা পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ১০:১৮, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 প্রযুক্তিনির্ভর জ্ঞানার্জনে ‘ফ্রি ইন্টারনেট’ সুবিধা পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা

জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ প্রযুক্তিনির্ভর জ্ঞানার্জনে ছাত্রছাত্রীদের ফ্রি ইন্টারনেট সুবিধার আওতায় আনা হচ্ছে। বিটিসিএল ‘ইনস্টলেশন অব অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক এ্যাট অল গবর্মেন্ট কলেজ, ইউনিভারসিটি এ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট’ (ওএফসি) নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৫৮৭ সরকারী কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে। ৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পের কাজ এ বছরের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। বিটিসিএল সূত্র জানায়, দেশের সব সরকারী কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল নেটওয়ার্ক স্থাপন হলে শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ওয়াইফাই ব্যবহার করতে পারবে। ফ্রি ইন্টারনেট ব্যবহার করে প্রযুক্তিনির্ভর জ্ঞানার্জনের সুযোগ পাবে। ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ কেনার মতো অবস্থা নেই এমন শিক্ষার্থীরাও এই সুযোগ গ্রহণ করবে। দেশে তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বাড়বে। এই চিন্তা থেকেই সরকার দেশের সরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসছে। গত বছরের জুলাইয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। কাজটি দ্রুত শেষ করতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় তাগিদ দেয়ায় বেশিরভাগ কাজ শেষও হয়েছে। প্রকল্পের পিডি আমিনুর রহমান বলেন, নেটওয়ার্কিংয়ের কাজ অনেকটাই শেষ। তবে এখনও ইন্টারনেট কানেকশন দেয়া হয়নি। এখন চলছে ইনস্টলেশনের কাজ। এই পর্ব শেষ হলে চলবে কমিশনিংয়ের কাজ। এরপর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া হবে। কাজটি করতে একটু সময় লাগবে। প্রকল্প ছোট হলেও সারাদেশেই সরকারী কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে কানেকশন দিতে হবে। ৫৮৭ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ব্রডব্যান্ডের আওতায় আনতে অনেকগুলো বিষয় রয়েছে। যদিও বিটিসিএল থেকেই ব্যান্ডউইথ দেয়া হবে। ইন্টারনেট সংযোগ দেয়ার পর যেসব সঠিকভাবে কাজ করবে তা কিন্তু নয়। কারণ এখানে রাওটার সেটআপের বিষয় রয়েছে। তবে, হ্যাঁ, প্রকল্পের বেঁধে দেয়া সময়সীমার মধ্যেই কাজ শেষ হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র মতে, সারাদেশের সব সরকারী কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল নেটওয়ার্ক স্থাপন হলে ছাত্রছাত্রীদের তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে কোন বাধাই থাকবে না। এভাবেই সব প্রতিষ্ঠান ইন্টারনেট ব্রডব্যান্ড সেবার আওতায় চলে আসবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় জানায়, এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে উল্লিখিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ইন্টারনেটের আওতায় চলে আসবে। পর্যায়ক্রমে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া হবে। যদিও রাজধানীর বাইরে ইন্টারনেট ব্যবস্থা নাজুক। এ থেকে উত্তরণের জন্য মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। সরকার দেশে নিরবচ্ছিন্ন আধুনিক ও উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড সেবা নিশ্চিতকল্পে উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল স্থাপন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিটিসিএল জিওবি ও বিটিসিএলের নিজস্ব অর্থায়নে দেশের সকল জেলা ও উপজেলা সদরসহ প্রায় দেড় হাজার ইউনিয়ন পরিষদে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল স্থাপনের কাজ শেষ করেছে। বাকি সাড়ে তিন হাজার ইউনিয়নে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ফাইবার ক্যাবল স্থাপনের কাজ করছে। সব ইউনিয়ন পরিষদ অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল নেটওয়ার্কের মধ্যে নিয়ে আসার কাজ ’২১ সালের মধ্যেই শেষ হবে। সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্য অর্জনে এই অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল স্থাপন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির ধারা টেকসই রাখতে হলে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন শিক্ষিত জনগোষ্ঠী তৈরি অপরিহার্য। এজন্য প্রয়োজন উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ সুবিধা। দেশের ভবিষ্যত প্রজন্মকে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তিতে শিক্ষিত করার জন্য উপযুক্ত স্থান হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আধুনিক বিশ্বে মানোপযোগী শিক্ষা হচ্ছে ই-লার্নিং। সরকার এই ই-লার্নিংয়ের কাজটিই করে দিচ্ছে। প্রকল্পের আওতাভুক্ত ১০৪১ কিমি অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল স্থাপন করতে হয়েছে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও ট্রেনিং সেন্টারে সংযোগ দেয়ার জন্য। এদিকে, সারাদেশে ইতোমধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার কিমির বেশি অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল স্থাপন করা হয়েছে, আইপিভিত্তিক সেবা দেয়ার জন্য। ৪২ জেলার দেড় শতাধিক নোডে মোট ৪৬ হাজার ক্ষমতাসম্পন্ন এডিএসএল এক্সেস নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে। ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের চার্জ কমিয়ে আনা হয়েছে। ব্যয়বহুল কপার ক্যাবলের বদলে অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহারে খরচ কমেছে। বিটিসিএলের অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবলের সংযোগ এখন প্রায় সব জায়গায়ই রয়েছে। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) ক্যাবলগুলোর নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকায় টার্মিনাল নির্মাণের সরঞ্জাম স্থাপনের একটি প্রস্তাব করা হয়েছে।
×