ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

জলবায়ু পরিবর্তনের কুফল

সাতক্ষীরা সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের মুখে

প্রকাশিত: ০৯:১০, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 সাতক্ষীরা সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের মুখে

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির মুখে বাংলাদেশ। এর প্রভাবে দেশের উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা সবচেয়ে বেশি বিপর্যয়ের মুখোমুখি। মানব জীবন প্রাণিসম্পদ ও সবুজ প্রকৃতিকে সুরক্ষা দিতে এই ক্ষতি ও সম্ভাব্য সব ঝুঁকি মোকাবেলা এখন জরুরী। এই বাস্তবতাকে সামনে রেখে সাতক্ষীরায় বেসরকারী পর্যায় থেকে শুরু হয়েছে ‘বৈশ্বিক জলবায়ু কর্মসূচী সপ্তাহ।’ শুক্রবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে এই কর্মসূচী। এতে বলা হয় নিউইয়র্কে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর শুরু হচ্ছে ‘জাতিসংঘের ক্লাইমেট এ্যাকশন সামিট।’ এই সামিটে বাংলাদেশের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি তুলে ধরে ক্ষতিপূরণ চাওয়া হবে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বেসরকারী সংস্থার ‘লিডার্স’ নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মন্ডল বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে আবহাওয়া জলবায়ু বৈরী হয়ে উঠছে। ভূপৃষ্ঠ অতিমাত্রায় উত্তপ্ত হয়ে উঠায় পানিতে ও জমিতে বাড়ছে লবণাক্ততা। জলাবদ্ধতা ও লবণাক্ততার পাশাপাশি প্রকৃতি নিচ্ছে রুদ্র রূপ। ফলে ঝড় বন্যা জলোচ্ছ্বাস নদী ভাঙ্গন উপকূলীয় জেলাগুলোর বাসিন্দাদের বারবার বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। বলা হয় জলবায়ু পরিবর্তনে মানবজীবনের ক্ষতি নিয়ে ১৯৯৫ সালে জার্মানির বার্লিনে শুরু হয় জলবায়ু সম্মেলন। এর পর থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত গত ২৪ বছরে ২৪টি সম্মেলন হলেও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো যেমন কোন ক্ষতিপূরণ পায়নি, তেমনি কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে কার্যকর ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়নি। ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় বিশ্বব্যাপী ক্ষতি তো কমেইনি বরং তা কোন কোন ক্ষেত্রে বেড়েছে। যার কুফল ভোগ করতে হচ্ছে উপকূলবাসীকে। এখানে জীবন প্রকৃতি পানি কৃষি প্রাণী সুন্দরবন মাটি এমনকি স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। বিশ্বব্যাপী একই ধরনের ক্ষয় ক্ষতি হয়ে আসছে। এ প্রসঙ্গে ধনী দেশগুলোর অতিমাত্রায় কার্বন নিঃসরণকে দায়ী করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় এভাবে কার্বন নিঃসরণ হতে থাকলে এক সময় মানবজীবন ও প্রাণিজগত ঝুঁকির মুখে পড়বে। ধরণীকে বাঁচানোর তাগিদ দিয়ে সুইডেনের ১৬ বছর বয়সী স্কুলছাত্রী গ্রেটা থানবার্গ গড়ে তুলেছেন ‘ফ্রাইডেস ফর ফিউচার’। গত মার্চে গ্রেটার আহ্বানে বিশ্বের ১০০টি শহরের ১৪ লাখ ছাত্রছাত্রী পথে নেমে এসেছিল। গ্রেটা থানবার্গ এবার ছোট নৌকায় নিউইয়র্ক পৌঁছে গেছেন। তিনি জাতিসংঘ মহাসচিবের ক্লাইমেট এ্যাকশন সামিটে যোগ দিয়ে ধরণীকে রক্ষার জোর তাগিদ দেবেন। তার ডাকে এরই মধ্যে বিশ্বের ৪০০ শহরে এক কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী পথে নেমে এসেছে। সংবাদ সম্মেলনে জলবায়ু সপ্তাহের কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে স্কুল ধর্মঘট, পদযাত্রা, যুবদের কর্মশালা, সাইকেল র‌্যালি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রতীকী গণআদালত, মানববন্ধন এবং প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ।
×