ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মাইকেল জ্যাকসনের পোশাক ও জুতোয় ছিল রহস্য

প্রকাশিত: ০২:২৫, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯

মাইকেল জ্যাকসনের পোশাক ও জুতোয় ছিল রহস্য

অনলাইন ডেস্ক ॥ ফ্লোরে পা রেখে শরীরকে ফ্লোরের সঙ্গে ৪৫ ডিগ্রি কোণ করে বাঁকিয়ে রাখা। টেলিভিশন স্ক্রিনে এ দৃশ্য সকলের কাছেই পরিচিত। প্রযুক্তির ব্যবহার করে দড়ির সাহায্যে এমন করা কঠিন কিছু নয়। কিন্তু বাস্তবে! পারবেন নিজের দেহকে এ ভাবে হেলিয়ে রাখতে? অসম্ভব! মাইকেল জ্যাকসন কিন্তু তারের সাহায্য ছাড়াই লাইভ অনুষ্ঠানে এ রকম করে দেখিয়েছিলেন। একে বলা হয় ‘অ্যান্টি গ্রাভিটি’ ডান্স। মাইকেল জ্যাকসনের ডান্স মুভ আমরা অনেকেই ছোটবেলায় কম-বেশি নকল করার চেষ্টা করেছি বাড়িতে। যাঁরা নাচে পারদর্শী তাঁরা অনেকটাই বা পুরোটাই নকল করতে পারেন হয়তো। কিন্তু তাঁরাও মাইকেল জ্যাকসনের মতো নিজের শরীরকে ৪৫ ডিগ্রি হেলিয়ে রাখতে পারবেন না। শরীরকে ৪৫ ডিগ্রি কোণ করে হেলাতে গেলে আমাদের শরীরের ভরকেন্দ্রের অবস্থানের বদল ঘটে। ভরকেন্দ্রের অবস্থানের বদল ঘটলে ভারসাম্য নষ্ট হবে। পড়ে যাবেন। ফলে মানুষের ক্ষেত্রে এটা করা অসম্ভব। তাহলে মাইকেল জ্যাকসন কী ভাবে এমন করতেন? এর পিছনে একটা বড় রহস্য রয়েছে। রহস্যটা লুকিয়ে রয়েছে মাইকেল জ্যাকসনের পোশাকের মধ্যেই। কৃতিত্ব তাঁর পোশাক ডিজাইনার ডেনিস টমকিন্সের। মিউজিক অনুষ্ঠানে কী ধরনের পোশাক পরবেন মাইকেল জ্যাকসন, তা ঠিক করার দায়িত্ব ছিল ডেনিস টমকিন্সের উপরেই। নাচ এবং গান দুটোটেই দুর্ধর্ষ ছিলেন মাইকেল। ১৯৮৭ সালে তিনি একটি অনুষ্ঠানে প্রথম নাচের সময় সামনের দিকে ঝুঁকেছিলেন। সেটায় অবশ্য দড়ির সাহায্য নিয়েছিলেন। কিন্তু মাইকেলের ইচ্ছা হয়েছিল কোনওরকম দড়ির সাহায্য ছাড়াই তিনি নাচের মধ্যে সামনের দিকে অনেকটা ঝুঁকবেন। ইচ্ছার কথা পোশাক ডিজাইনারকে জানান মাইকেল। যেমন ইচ্ছা, তেমন কাজ। ১৯৯২ সালে একটা লাইভ মিউজিক কনসার্টে দড়ির সাহায্য ছাড়াই এমন স্টান্ট করে দেখান মাইকেল জ্যাকসন। বিস্ময় এবং চাঞ্চল্য একসঙ্গে দর্শকদেরই নাড়িয়ে দিয়েছিল ওই দিন। পরে তাঁর এই কৃতিত্বের রহস্যের উন্মোচন ঘটে। ম্যাজিকটা আসলে লুকিয়ে ছিল তাঁর জুতোতে। যা মাইকেল জ্যাকসনের ‘ম্যাজিক সু’ নামে পরিচিত সারা বিশ্বে। ম্যাজিকটা কী রকম? ডিজাইনার ডেনিস বিশেষ প্রযুক্তির জুতো জোড়া বানিয়েছিলেন। ফ্লোরে ডান্স করার সময় আঁকড়ে ধরার একটি প্রযুক্তি এতে ছিল। এতটাই শক্তভাবে তা মেঝে আঁকড়ে ধরত যে মাইকেল খুব নিরাপদেই সামনের দিকে অনেকটা ঝুঁকতে পারতেন। এই জুতোর হিলটাতেও ম্যাজিক ছিল। জুতো যখন মেঝে আঁকড়ে ধরত, হিল উপরের দিকে ঠেলে কিছুটা তুলে দিত মাইকেলকে। কোন সময়ে জুতোয় এই ম্যাজিক হবে তা স্থির করতে পারতেন মাইকেল। সঙ্গে অবশ্যই কাজে লাগাতে হত মাইকেলের পায়ের ক্ষমতা। তা নাহলে শরীরকে সোজা রাখাটা যাবে না। মাইকেলের এই নাচ দারুণ জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ১৯৯৩ সালে ‘ম্যাজিক সু’-র জন্য আমেরিকা মাইকেল এবং তাঁর ডিজাইনার ডেনিসকে পেটেন্ট দেয়। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি আটকাতে তার মেরামতি করেন ডেনিস। বাকি জীবনটা নিশ্চিন্তে ‘অ্যান্টি গ্রাভিটি’ নাচ দেখিয়েছিলেন দর্শকদের।জুতো জোড়া বর্তমানে মস্কোর হার্ড রক ক্যাফেতে রয়েছে। মাইকেলের মৃত্যুর পর ৪ কোটি ২৫ লক্ষ ২৫ হাজার ৯০০ টাকায় নিলাম হয়েছিল সেটি। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×