ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সিদ্ধিরগঞ্জে মা ও দুই মেয়েকে গলা কেটে হত্যা

প্রকাশিত: ১১:০৬, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯

সিদ্ধিরগঞ্জে মা ও দুই মেয়েকে গলা কেটে হত্যা

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের সিআইখোলা এলাকায় মা নাজমীন ও তার দুই মেয়ে নুসরাত ও খাদিজাকে নৃশংসভাবে হত্যা করার কথা ঘাতক আব্বাস উদ্দিন পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। মূলত তাকে (আব্বাস উদ্দিনকে) শ্যালকের চড় মারা ও স্ত্রীর ওপর ক্ষোভের প্রতিশোধ নিতেই আব্বাস উদ্দিন তার শ্যালিকা নাজমীনসহ তিনজনকে হত্যা করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, কিছু হলেই নিহত আব্বাসের স্ত্রী ইয়াছমিন বেগম বোন নাজমীন বেগমের সিদ্ধিরগঞ্জের সিআইখোলার বাসায় চলে যেত। এ নিয়ে মাদকাসক্ত আব্বাস উদ্দিনের মধ্যে চরম ক্ষোভ ছিল। আর সেই ক্ষোভের কারণেই পরিকল্পিতভাবে মা নাজমীন বেগম ও দুই মেয়ে নুসরাত ও খাদিজাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে এবং গলাকেটে হত্যা করে। একই সঙ্গে নিজের প্রতিবন্ধী মেয়ে সুমাইয়াকেও হত্যার জন্য ছুরিকাঘাত করে সে। বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসপি হারুন অর রশিদ এসব তথ্য জানান। পুলিশ সুপার জানান, মা ও দুই মেয়েকে হত্যার সঙ্গে জড়িত ঘাতক আসামিকে হত্যাকা-ের পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিদ্ধিরগঞ্জের পাওয়ার স্টেশন সংলগ্ন একটি কমিউনিটি সেন্টারে খাবারের টেবিলের নিচে লুকিয়ে ছিল। সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকা-ের কথা স্বীকারও করেছে। তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে আব্বাস উদ্দিনের স্ত্রী ইয়াছমিনের ছোট ভাই নাছির উদ্দিন কোন একটি কারণে আব্বাসকে চড় মারে। এছাড়াও তার স্ত্রী ইয়াছমিন তার প্রতিবন্ধী মেয়ে সুমাইয়াকে নিয়ে রাগ করে প্রায় সময় বোনের বাসায় চলে আসত। এসব কারণে আব্বাস উদ্দিন শ্যালক ও শ্যালিকার ওপর ক্ষুব্ধ ছিল। বৃহস্পতিবার আব্বাস উদ্দিনের শ্যালক নাসির উদ্দিন, স্ত্রী ইয়াছমিন বেগম ও নাজমীন বেগমের স্বামী সুমন মিয়া কাজের জন্য বাইরে গেলে সিআইখোলার বাসায় যায় আব্বাস উদ্দিন। সেখানে গিয়ে সে নাজমীন বেগমের সঙ্গে তর্কাতকিতে জড়িয়ে পরে। পরে একে একে মা ও দুই মেয়েকে হত্যা করে। কিন্তু হত্যাকা-ের বিষয়টি নিজের প্রতিবন্ধী মেয়ে সুমাইয়া দেখে ফেলায় তাকেও ছুরিকাঘাত করে এবং এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। পুলিশ জানায়, হত্যাকা-ে ব্যবহৃত ছুরিসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জের সিআইখোলা এলাকায় একটি সাত তলা ভবনের ষষ্ঠ তলার ফ্ল্যাট বাসা থেকে পুলিশ আব্বাস উদ্দিনের শ্যালিকা নাজমীন (২৮), নাজমীনের দুই শিশু কন্যা নুসরাত (৬) ও খাদিজার (২) লাশ উদ্ধার করে। পুলিশ তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাতের চিহ্নসহ গলাকাটা অবস্থায় পায়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহগুলো সদর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। হত্যাকা-ের পর পুলিশ আব্বাস উদ্দিনকে সন্দেহ করে এবং তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রাখে।
×