ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নওগাঁ অঞ্চলে দিন দিন বাড়ছে অধিক লাভজনক মাল্টা চাষ

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

  নওগাঁ অঞ্চলে দিন দিন বাড়ছে অধিক লাভজনক মাল্টা চাষ

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ ॥ মাল্টা বিদেশী ফল হলেও বর্তমানে চাষ হচ্ছে নওগাঁ জেলার রাণীনগর, সাপাহার ও ধামইরহাটসহ বিভিন্ন উপজেলায়। দেশের উত্তরাঞ্চলের খাদ্য ভান্ডার খ্যাত এই নওগাঁ জেলা। ধান উৎপাদনের জন্য প্রসিদ্ধ এই জেলা। বর্তমানে এই জেলায় ধানের পাশাপাশি অধিক লাভজনক মাল্টা চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই জেলা এখন মাল্টা চাষের জেলা হিসেবেও পরিচিতি লাভ করতে শুরু করেছে। আর আর্থিক ভাবেও লাভবান হচ্ছে ধান চাষে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। ধানের দাম না থাকায় জেলার কৃষকরা ধানে লাগাতার লোকসান দিয়ে আসছেন। যার কারণে এই অঞ্চলের মানুষ ধানের পাশাপাশি অধিক লাভজনক মাল্টা চাষের দিকে বেশি ঝুঁকছেন। দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এই মাল্টা চাষের পরিসর। আবার মাল্টা বাগান দেখে উপজেলার অনেক মানুষই উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন নতুন মাল্টার বাগান তৈরি করার জন্য। নওগাঁর রানীনগর উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় ভার্মিক পদ্ধতিতে বারি-১ জাতের মাল্টার বাগান তৈরি করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই এই সব বাগানে মাল্টার গাছে থোকায় থোকায় মাল্টা ধরেছে। এই বাগানগুলো দেখার জন্য প্রতিদিনই অন্যান্য এলাকার মানুষরা আসছেন। তবে দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটিতে ভাল জাতের মাল্টা গাছের চারা রোপণ করতে পারলে এবং নিবিড় পরিচর্যায় মাল্টার ফলন ভালো হয়। এই অঞ্চলে উৎপাদিত মাল্টার স্বাদ ও গুনগত মানও খুবই ভাল। রানীনগর উপজেলার খট্টেশ্বর গ্রামের মাল্টা চাষী সরফরাজ খাঁন বলেন, তিনি ১৫শতাংশ পতিত জমিতে কৃষি বিভাগের পরামর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে দু’বছর আগে তাদের সরবরাহকৃত মাল্টা চারা নিয়ে তৈরি করেন মাল্টা বাগান। বর্তমানে তার বাগানের প্রতিটি মাল্টা গাছে থোকায় থোকায় সবুজ মাল্টা ঝুলছে। গাছ লাগানোর ১৮মাস পরই গাছে মাল্টা ধরতে শুরু করেছে। স্বাদে ও গুনে বিদেশী মাল্টার মতই। বর্তমানে তিনি প্রতি কেজি মাল্টা ৭০-৮০টাকা দরে কেজিতে বিক্রি করছেন। চলতি মৌসুমে প্রতিটি গাছে প্রায় ১০কেজি করে মাল্টা ফল এসেছে। আগামী বছরে প্রতিটি গাছে ৭০-৮০ কেজি মাল্টা পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান। তিনি আগামীতে এই বাগানের পরিসর আরো বৃদ্ধি করবেন বলে জানান। প্রতিদিনই তার মাল্টার বাগান দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসছে। তারাও এই রকম বাগান তৈরি করার আশা প্রকাশ করছে। আমিও দর্শনার্থীদের বাগান তৈরি করার সকল পরামর্শ দিয়ে আসছি। প্রথম বছরেই তিনি মাল্টা চাষে অভাবনীয় সফলতা পেয়েছেন বলে জানান। সরফরাজ খাঁনের মাল্টা বাগান দেখতে আসা দর্শনার্থী রফিকুল ইসলাম, জব্বার মিয়াসহ অনেকেই বলেন, মাল্টা চাষে সরফরাজ খাঁন একজন মডেল। তার বাগানে গাছে মাল্টা ফল দেখে মন ভরে গেছে। তিনি দেখে দিলেন বিদেশী ফলও আমাদের এলাকায় চাষ করা সম্ভব। এটি নাকি অনেক লাভজনক একটি ফসল। তাই আমরাও আগামীতে মাল্টার বাগান তৈরি করবো। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো:ঃ শহীদুল ইসলাম বলেন, এই উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া মাল্টা চাষের জন্য খুবই পজেটিভ। মাল্টা পুষ্টিকর ও রসালো একটি ফল। বাজারে মাল্টার চাহিদা বেশি থাকায় দামও ভাল রয়েছে। তাই মাল্টা চাষীরা দাম ভালো পেয়ে অনেক খুশি। ধানে লোকসান হওয়ার কারণে এলাকার মানুষরা দিন দিন অধিক লাভজনক ফসল মাল্টা চাষের দিকে বেশি ঝুঁকছেন। যারা এই ধরনের বাগান তৈরি করবেন তাদের জন্য আমাদের সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দেয়ার জন্য সব সময় আমার অফিসের দুয়ার খোলা আছে।
×