ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

লেবু জাতীয় ফসলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে হবে

প্রকাশিত: ০৪:৪৫, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

  লেবু জাতীয় ফসলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে হবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার \ কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ভিটামিন সি খাদ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, প্রতিদিনই যার প্রয়োজন। উৎপাদন বাড়িয়ে লেবু জাতীয় ফসলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে হবে। সিলেটের আগের সেই স্মৃতিময় সুস্বাদু কমলা ফিরিয়ে আনতে হবে। সিলেটে নতুন করে কমলার বাগান করতে হবে। এ কমলা ফিরিয়ে আনার জন্য বাগান তৈরির উদ্যোগ নিলে সরকার প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। দেশে লেবু জাতীয় ফসলের উৎপাদন চহিদার চেয়ে অনেক কম এবং আমদানি নির্ভর। প্রতিবছর বিপুল পরিমান কমলা, মাল্টা আমদানি করতে হয়। দেশে আমদানিকৃত এসব কমলা নিম্ন মানের। বৃহস্পতিবার রাজধানীর খামাড়বাড়ীর আ ক মু গিয়াস উদ্দিন মিলকী অডিটরিয়ামে লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প এর উদ্যোগে প্রকল্প অবহিতকরণ কর্মশালা-২০১৯ তিনি এসব কথা বলেন। কৃষি মন্ত্রী বলেন, আমদানিকৃত লেবুজাতীয় ফলের দাম বেশী হওয়ায় সবার পক্ষে ক্রয় করা সম্ভব না। এর প্রেক্ষিতে সরকার দেশের লেবু জাতীয় ফসলের স¤প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে। ফলে দেশে লেবু জাতীয় ফসলের উৎপাদন দিনে দিনে বাড়ছে তবে চাহিদার তুলনায় অনেক কম। কিছু পরিমান লেবু রপ্তানি হচ্ছে। দেশে মাল্টা, বাতাবি লেবু, কমলা, এলাচি লেবু, জারা লেবু, কলম্বো লেবু, সাতকরা, আদাজামিরসহ নানা ধরনের লেবুজাতীয় ফল রয়েছে। এসব ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য দেশ ব্যাপী বিপ্লব ঘটাতে হবে। এগুলোর প্রসার ও উন্নয়নে সবাইকে আন্তরিক হতে হবে। সাইট্রাস বা লেবুজাতীয় ফলের মধ্যে দেশে মাল্টা, কমলা ও বাতাবি লেবুর চাষের প্রচুর সম্ভাবনাও রয়েছে। বৃষ্টিবহুল ও উঁচু পাহাড়ী অঞ্চলে এ ফল ভাল হয়। লেবুজাতীয় ফলের চাষকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে। মন্ত্রী এসময় উপস্থিত সংবাদ কর্মীদের উদ্দেশ্যে কৃষির সাফল্যে কৃষকের অবদানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশে ফসলের বিপ্লবের পিছনে মুলত: কৃষকদেরই অবদান বেশি। তবে এক্ষেত্রে সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীদের অবদানও কম নয়। তাদের সাফল্যের কথাও প্রচার হওয়া দরকারা। কৃষি বিজ্ঞানীদের বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে, তাদের সমস্যা সমাধানে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে কথা বলবেন এবং সমস্যার সমাধান করবেন বলে জানান তিনি। ঢাকা মহানগরের ক্যাসিনোতে অভিযানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা আগে জানতাম না, ঢাকায় এতগুলো ক্যাসিনো রয়েছে। এর বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে। সমাজের অস্থিরতা কমাতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঢাকাসহ সারা দেশে অপকর্ম ও অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এদেরকে আইনের আওতায় এনে নির্মূল করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর এই নিদের্শনার জন্য তাঁকে অভিবাদন জানাই। বিশেষ অতিথি কৃষি সচিব মো: নাসিরুজ্জামান বলেন, প্রকল্পের কার্যকারীতা সম্পর্কে বাস্তবায়নকারী ও উপকারভোগীদেও সম্পৃক্ত করতে হবে। বছরে ১৭ কোটি টাকার কমলা ও মাল্টা আমদানি করতে হয়, আর রপ্তানি মাত্র ১০ কোটি টাকা। আমদানি নির্ভর কমাতে না পারলে এ প্রকল্পের কোন গ্রহণযোগ্যতা থাকেব না। আগামীতে অন্তত পক্ষে মাল্টা যেনো আমদানী না করতে এর জন্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। বারি মাল্টা-১ খুবই ভালো মানের মাল্টা। আমাদের কমলা ও মাল্টাতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে হবে এবং রপ্তানির যোগ্যতা অর্জন করতে হবে এই লক্ষ্য নিয়ে সবাইকে কাজ করতে হবে। উল্লেখ্য, এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৬ কোটি ৪৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। পুরোটাই সরকারি অর্থায়নে। প্রকল্পের মেয়াকাল ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতর (ডিএই)। লেবুজাতীয় ফসলের স¤প্রসারণ ও উৎপাদন বাড়াতে দেশের সাতটি বিভাগের ৩০টি জেলার ১২৩টি উপজেলায় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল মুঈদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকল্প পরিচালক ফারুখ আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এপিএ পুলের সদস্য কৃষিবিদ হামিদুর রহমান।
×