ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফকিরাপুলে জুয়ার আসর থেকে ১৪২ নারী পুরুষ আটক

প্রকাশিত: ১১:১৬, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ফকিরাপুলে জুয়ার আসর থেকে ১৪২ নারী পুরুষ আটক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকায় অবৈধ জুয়ার আসর থেকে র‌্যাবের অভিযানে ১৪২ নারী-পুরুষ আটক হয়েছে। ক্যাসিনোটি চালানোর দায়ে গুলশান থেকে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে আটক করেছে র‌্যাব। তার বাসা থেকে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও বুলেট উদ্ধার হয়েছে। বুধবার বিকেলে রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকায় ইয়ংমেন্স ক্লাবের নিষিদ্ধ জুয়া ক্যাসিনোতে অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযানে ক্যাসিনোর ভেতর থেকে ১৪২ নারী-পুরুষকে আটক করা হয়। অভিযানের নেতৃত্ব দেন র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। অভিযানের আগ থেকেই ক্লাবটি ঘিরে রাখেন র‌্যাবের সদস্যরা। দুপুর থেকে কাউকে ঢুকতে ও বের হতে দেয়া হয়নি। ক্যাসিনোতে জুয়া খেলা অবস্থায় ১৪২ জনকে আটক করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ক্যাসিনো থেকে বিপুল টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। টাকার গণনা চলছে। এছাড়া ক্যাসিনোটি থেকে দেশী-বিদেশী মদ, বিয়ার, জুয়া খেলার তাস, ক্যাসিনো চালানোর বোর্ডসহ নানা জিনিসপত্র জব্দ করা হয়। ক্যাসিনোটিতে চালানোর জন্য ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার গুলশানের বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। বুধবার সন্ধ্যায় খালেদ মাহমুদের গুলশান-২ এর ৫৯ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর বাড়িতে অভিযান শুরু হয়। অভিযান চালানোর আগে দুপুর থেকেই বাড়িটি ঘিরে রাখে র‌্যাবের শতাধিক সদস্য। র‌্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের উপ-পরিচালক জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, অবৈধ জুয়ার আসর ক্যাসিনো চালানোর দায়ে আওয়ামী লীগের ওই নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বাসা থেকে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও বুলেট উদ্ধার হয়েছে। এ ঘটনায় অস্ত্র আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া ক্যাসিনো থেকে উদ্ধারকৃত অবৈধ জিনিসপত্র জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত মালামাল মামলার আলামত হিসেবে দেখানো হবে। পল্টন থেকে গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেয়া হবে। প্রসঙ্গত, গত বছরের মার্চে পুরানা পল্টনের ৩৭/২ প্রীতম জামান টাওয়ারের ১৩ ও ১৪ তলায় থাকা ক্যাসিনো বন্ধ করে দেয় পুলিশ। অনলাইন জুয়ার আসরটি ওই সময় পুলিশ সিলগালা করে দিয়েছিল। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৬ অক্টোবর প্রীতম জামান টাওয়ারের ১৪ তলায় অনলাইন ক্যাসিনো বসানো হয়। ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া ও ফিলিপিন্সের নামকরা ক্যাসিনোর সঙ্গে সার্ভার লিঙ্কের মাধ্যমে সরাসরি এই খেলা চালানোর মিথ্যা প্রলোভন দেয়া হতো জুয়াড়িদের। কিন্তু বাস্তবে সফটওয়্যার কারসাজির মাধ্যমে মালয়েশিয়া থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হতো সব কিছু। ভবনটির প্রথম ১৪ তলায় ৪৯টি ও পরে ভবনটির ১৩ তলায় আরও ৩৬টি কম্পিউটার বসায় চক্রটি। ১৩ তলায় ভিআইপিরা জুয়া খেলত। আরও ২৬টি কম্পিউটারে বিশেষ শ্রেণীর লোকজন জুয়া খেলত। চব্বিশ ঘণ্টা চলত জুয়া। জুয়ার সঙ্গে চলতো মাদক সেবন। নারায়ণগঞ্জের এক ব্যবসায়ীসহ বাংলাদেশের কয়েক প্রভাবশালীর সঙ্গে ট্যুরিস্ট ভিসায় আসা চীনা বংশোদ্ভূত মালয়েশিয়ার চার নাগরিক এনে ক্যাসিনো নিয়ন্ত্রণ করা হতো। অবৈধভাবে রোজগার করা টাকার মধ্যে অন্তত ১০ কোটি টাকা মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম করেছেন ওই ব্যবসায়ী। ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোনে বিশেষ এ্যাপসের মাধ্যমেও এই জুয়া চালানো হতো।
×