ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রংপুর-৩ উপনির্বাচন

পছন্দের প্রার্থী না থাকায় হতাশ জাপা বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ভোটাররা

প্রকাশিত: ১১:১৬, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

পছন্দের প্রার্থী না থাকায় হতাশ জাপা বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ভোটাররা

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর, ১৮ সেপ্টেম্বর ॥ রংপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন নিয়ে কর্মী ও ভোটারদের মধ্যে খুব একটা উৎসাহ দেখা যাচ্ছে না। আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী না দেয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী-সমর্থক এবং সাধারণ ভোটাররা হতাশ। স্থানীয় প্রার্থী বাদ দিয়ে রাজনীতিতে সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ এবং অপরিচিত সাদ এরশাদকে মনোনয়ন দেয়ায় মনঃকষ্টে আছে জাপার অধিকাংশ স্থানীয় নেতা-কর্মী। বিদেশ থেকে আমদানি করা অন্য দল থেকে আসা বিতর্কিত রিটা রহমানকে ধানের শীষের প্রার্থী করায় সুখে নেই বিএনপিও। গত ১৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার প্রতীক পাওয়ার পর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন প্রার্থীরা। কিন্তু প্রার্থীদের সঙ্গে প্রচারে অংশ নিতে জাপা এবং বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা-কর্মীদের এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি। মাঠে নেই আওয়ামী লীগের কোন নেতা-কর্মী। ভোটযুদ্ধের প্রচারে হেভিওয়েট প্রার্থী সাদ এরশাদ ও রিটা রহমানের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী এরশাদের অভিমানী ভাতিজা আসিফ শাহরিয়ার স্থানীয় হিসেবে রয়েছেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। মনে করা হচ্ছে আসিফ শাহরিয়ার জাপার জন্য দলের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। নির্বাচনী প্রচারের শুরুতেই বিএনপি প্রার্থী রিটা রহমান বুধবার দুপুরে স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে বলেন, তার স্বামী মেজর মোহাম্মদ খায়রুজ্জামান বঙ্গবন্ধু হত্যা ও জেলহত্যা মামলায় জড়িত ছিলেন না। ‘বঙ্গবন্ধুর খুনীর স্ত্রীকে বিএনপির মনোনয়ন’ সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন তথ্য ছড়িয়ে পড়ায় তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি বলেন, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একটি মহল আমার স্বামী খায়রুজ্জামানকে বঙ্গবন্ধু ও জেলহত্যা মামলার আসামি বলে প্রচার করছেন। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমাকে নির্বাচনে ঘায়েল করতে একতরফাভাবে ভিত্তিহীন এই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’ তিনি দাবি করেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তার স্বামী ভারতে ট্রেনিংয়ে ছিলেন। এ কারণে তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার চার্জশীটে ছিলেন না। এই রেকর্ড বঙ্গবন্ধুর হত্যা মামলার ফাইল খুললেই পাওয়া যাবে।’ বিএনপির এ প্রার্থী বলেন, ‘মেজর খায়রুজ্জামান আসামি না হলেও ১৯৯৬ সালের ১৩ আগস্ট তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাকে জেলহত্যা মামলায় আসামি করা হয়। ২০০২ সালে খায়রুজ্জামানসহ পাঁচ জনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। তারপরও আমার স্বামী ও পরিবারকে ঘিরে মিথ্যাচার করা হচ্ছে। এটা হলুদ সাংবাদিকতা।’ এসব মিথ্যাচার বন্ধ করা না হলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করার হুমকি দেন তিনি। একই সঙ্গে সাংবাদিকদের ওয়াচডগের ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন অবাধ এবং নিরপেক্ষ হবে বলে আশা করছি। এদিকে, সংবাদ সম্মেলনে জেলা ও মহানগর বিএনপির স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের দেখা যায়নি। এতে উপস্থিত ছিলেন- মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি সামসুজ্জামান সামু, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান, মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক লিটন পারভেজ, জেলা যুবদলের সাধারণ শামসুল হক ঝন্টু, যুগ্ম সম্পাদক শাহ্ জিল্লুর রহমান, মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জহির আলম নয়ন, রংপুর সরকারী কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি প্রমুখ। বুধবার বিকেলে রংপুর সদর উপজেলার পাগলাপীর সলেয়াশাতে সাদ এরশাদের নির্বাচনী পথসভা হয়। এরপর তিনি পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে প্রচার চালান। তার সঙ্গে দলের সিনিয়র নেতাদের দেখা যায়নি। এ সময় শতভাগ জয়ের নিশ্চয়তা দিয়ে রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমাদের মহাজোটের প্রার্থী সাদ এরশাদ। তার সঙ্গে শুধু জাতীয় পার্টি নয়, আওয়ামী লীগও আছে। আমরা রংপুরবাসী বারবার লাঙ্গল ও এরশাদকে ভোট দিয়েছি। এবার তার পুত্র সাদ এরশাদকে আমরা বিপুল ভোটে জয়ী করব। আমরা প্রমাণ করব রংপুর মানেই এরশাদ ও লাঙ্গল।’
×