ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

একজন হিন্দুর নামও বাদ যাবে না॥ সায়ন্তন বসু

প্রকাশিত: ২৩:৪০, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯

একজন হিন্দুর নামও বাদ যাবে না॥ সায়ন্তন বসু

অনলাইন ডেস্ক ॥ শুধু বাংলাদেশ নয় বরং, মঙ্গলগ্রহ থেকে আসা হিন্দুদের জন্যও ছাড় থাকবে। পশ্চিমবঙ্গে আসামের মতো নাগরিক তালিকা হলে তা থেকে একজনও হিন্দুর নাম বাদ যাবে না। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ারে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। প্রতিবেশী রাজ্য আসামে এনআরসি চালু হওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কুচবিহার, আলিপুরদুয়ারের মতো সীমান্তবর্তী জেলা বা মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুরের মতো বাংলাদেশ ঘেঁষা জেলাগুলোতে এই সংশয়ের মাত্রা কিছুটা হলেও বেশি। স্থানীয় লোকজনের দাবি, এর যথেষ্ট কারণও রয়েছে। আসামে ১৯ লাখ মানুষের নাম জাতীয় নাগরিক তালিকায় ওঠেনি। এর মধ্যে অধিকাংশই মুসলিম। তবে হিন্দুও অনেক আছে। সব মিলিয়ে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে মুসলিমদের পাশাপাশি অনেক হিন্দুও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। সায়ন্তন বসুর আলিপুরদুয়ারে এসে এনআরসি নিয়ে বক্তব্য রাখার কারণও সেটাই বলে মনে করছেন অনেকেই। সায়ন্তনও তার বক্তৃতায় স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, হিন্দুদের কোনও চিন্তা নেই। বিভিন্ন বিধানসভা এলাকার নেতাদের সঙ্গে সাংগঠনিক বৈঠকে যোগ দিতে সোমবার আলিপুরদুয়ারে আসেন সায়ন্তন। মঙ্গলবার ওই বৈঠক শুরুর আগে দলের জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনার সময় এনআরসি প্রসঙ্গ ওঠে। সায়ন্তন বলেন, পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি হতেই পারে। কিন্তু একজন হিন্দুর নামও বাদ পড়বে না। ওই হিন্দুরা বাংলাদেশ, আফগানিস্তান কিংবা মঙ্গলগ্রহ যেখান থেকেই আসুক। একই সঙ্গে তিনি বলেন, তৃণমূলের বাধায় আটকে যাওয়া নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আমরা রাজ্যসভায় পাশ করাব। কিন্তু এনআরসি নিয়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে আলাদা নীতি কেন? সায়ন্তন অবশ্য বলেন, এ নিয়ে আমাদের দলের কোনও দ্বিচারিতা নেই। কারণ, দেশটা ভাগ হয়েছিল ধর্মের ভিত্তিতেই। সায়ন্তনের এমন মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী। তিনি বলেন, ভারত ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। এখানে ধর্মের ভিত্তিতে কাউকে ভাগ করা যাবে না। কিন্তু বিজেপি নেতারা এ ধরনের কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে দেশের ধর্মনিরপেক্ষতাকে আঘাত করার চেষ্টা করছেন। তার মতে, এনআরসি হলে হিন্দু বাঙালির নাম কাটা যাবে কিনা, তা আসামের তালিকাই প্রমাণ করে দিয়েছে। সেখানে যে সাড়ে উনিশ লাখ মানুষের নাম কাটা গেছে তার বেশির ভাগই হিন্দু বাঙালি। যদিও বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মার অভিযোগ, তৃণমূল সরকার সঠিক সময়ে নথিপত্র যাচাই করে দেয়নি বলেই আসামে অনেক হিন্দু বাঙালীর নাম এনআরসির তালিকায় জায়গা পায়নি। তবে শেষ পর্যন্ত তারা বাদ পড়বেন না বলে দাবি গঙ্গা প্রসাদের। দলের সাংগঠনিক নির্বাচন পর্ব শেষ হওয়ার পরই আসামের মতোই আলিপুরদুয়ারে এনআরসি চালুর দাবিতে আন্দোলনে নামার কথা ঘোষণা করেন বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। সায়ন্তন অবশ্য মনে করেন, পশ্চিমবঙ্গ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার পরই এ রাজ্যে এনআরসি করা দরকার।
×