ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে নানা সমস্যা ॥ ঝরছে প্রাণ

সড়ক মহাসড়কে ছোট যানে বড় বিপত্তি

প্রকাশিত: ১০:৫৩, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯

সড়ক মহাসড়কে ছোট যানে বড় বিপত্তি

ওয়াজেদ হীরা ॥ কেড়ে নিচ্ছে স্বপ্ন, কেড়ে নিচ্ছে তাজা প্রাণ, মহাসড়কে যমদূত তিন চাকার যান। হাইকোর্টের রায় আর মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞার নির্দেশনা থাকলেও থেমে নেই মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল। এতে সড়ক মহাসড়কে ছোট যানে ঘটছে বড় বিপত্তি। নিষেধাজ্ঞার চার বছর পেরিয়ে গেলেও দেশের অনেক মহাসড়কে তিন চাকার যান বন্ধ হয়নি। ফলে হরহামেশাই ঘটছে দুর্ঘটনা। দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। যেখানে তাজা প্রাণ ঝরে যাচ্ছে আর সমাধি হচ্ছে একটি পরিবারের নানা স্বপ্নেরও। অথচ এ বিষয় নিয়ে যাদের তদারকি করার কথা সেই হাইওয়ে পুলিশ অনেক স্থানেই নির্বিকার। অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ ও স্থানীয় পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে মহাসড়কে উঠাতে পারছেন এ ধরনের যান। পাল্টাপাল্টি অভিযোগের কারণে অনেকেই মনে করেন ‘ক্যারিশম্যাটিক’ ক্ষমতা দেখিয়ে চলছে এসব যান। জানা গেছে, ছোট যানের গতি যেমন কম তেমনি এদিক সেদিক যাতায়াতের ক্ষেত্রে মানে না নিয়ম কানুনও। এতে ঘটে বিভিন্ন দুর্ঘটনা। আর তাই সরকার দেশের নির্দিষ্ট কিছু সড়কে এই তিন চাকার যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এ ধরনের যানের মধ্যে রয়েছে সিএনজি, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, ইঞ্জিনচালিত থ্রি-হুইলার ও ব্যাটারিচালিত রিক্সা ভ্যান। তবে নিষেধাজ্ঞার চার বছরেও এখনও দেশের অনেক সড়ক-মহাসড়কে দেখা মিলছে এ ধরনের যানবাহনের। সম্প্রতি সরেজমিনে ঢাকা-ময়মনসিংহ ফোরলেনের ময়মনসিংহ অংশের একাধিক স্থানে দেখা গেছে এই যান। এছাড়াও ময়মনসিংহ থেকে নেত্রকোনা, টাঙ্গাইল, জামালপুর যাওয়ার সড়কেও দেখা মেলে এ ধরনের যান। এতে সাধারণ যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে আরও বেশি প্রশ্ন উঠেছে। এ অঞ্চলের মতো দেশের অন্যান্য মহাসড়কেও তিন চাকার যান চলাচলের তথ্য পাওয়া গেছে। সড়ক ও জনপথ (সওজ) এবং হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সভাকক্ষে সড়ক তদারক কমিটির এক পর্যালোচনা সভায় দুর্ঘটনা রোধে দেশের ২২টি মহাসড়কে সিএনজি, অটোরিক্সা, টেম্পো, ব্যাটারিচালিত রিক্সা এবং অযান্ত্রিক যানসহ সব ধরনের তিন চাকার যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয় ২০১৫ সালের পহেলা আগস্ট। এরপর দেশের ২২টি মহাসড়কে অটোরিক্সা, ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিক্সাসহ তিন চাকার যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। অভিযান শুরু হয়। এখনও অনেক স্থানে অভিযান চলে। কোথাও কোথাও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে চলাচল করে আর কোথাও সমঝোতার মাধ্যমে চলাচল করছে বলেও জানা গেছে। ফলে নিষেধাজ্ঞার চার বছর পরও এখনও অনেক স্থানে হরহামেশাই চোখে পড়ছে এ ধরনের যান। কোনভাবেই স্থায়ী বন্ধ হচ্ছে না মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন চলাচল। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী একাধিকবার এসব যান চলাচল বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কঠোর নির্দেশনা দিলেও অনেক স্থানে সেটি মানা হচ্ছে না। আর মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তারাও বলছেন মাঠ পর্যায়ে হাইওয়ে পুলিশ সংশ্লিষ্টরা এটি দেখবেন। সরেজমিনে ময়মনসিংহ-ঢাকা মহাসড়কে দেখা যায় কখনও কখনও উল্টো পথে আসছে এ ধরনের তিন চাকার যান। আবার কখনও বড় গাড়ির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে। বড় গাড়ি বিশেষ করে বাস, ট্রাক অনেক দ্রুতগতিতে চলে যাওয়া জন্য সংকেত দিলেও ‘সাইড’ দেয়া হয় না। মহাসড়কের চুরখাই, বইলর, ত্রিশাল অংশে এ ধরনের যান চলাচল করতে দেখা যায়। আবার অনেক সময় ত্রিশাল থেকে যাত্রী নিয়ে সিএনজি চালকরা ভালুকা বা ময়মনসিংহে যাত্রা করেন। একই দৃশ্য অন্যান্য আঞ্চলিক সড়কেও দেখা গেছে। নিকট দূরবতী বা ১০-২০ কিমি যাতায়াতের ক্ষেত্রে তিন চাকার যান হিসেবে সিএনজি ব্যবহার করছেন। এতে হরহামেশাই আঞ্চলিক সড়ক বা মহাসড়ক ব্যবহার করছেন চালকরা। ময়মনসিংহ থেকে মুক্তাগাছা, জামালপুর সড়ক, টাঙ্গাইল সড়ক, শেরপুর সড়কেও দেখা যায় তিন চাকার যান চলাচলের দৃশ্য। সাধারণ মানুষ যারা সচেতন তারা এড়িয়ে গেলেও অনেকেই নিকট দূরত্বে যাতায়াত করতে বাসে উঠতে চান না। অনেক সময় বাস পাওয়াও দুষ্কর। ফলে যাত্রীরও অভাব নেই। আর চালকরা বলছেন প্রতিদিনই একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিয়ে চলাচল করছে তারা। পরিবহন শ্রমিকদের সংগঠনের নেতা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রত্যেকের কাছেই এই টাকা চলে যায় বলেও জানান একাধিক চালক। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট এলাকার পরিবহন শ্রমিকদের নামে একাধিক সংগঠনের নেতারাও বিষয়টি স্বীকার করেন। এক নেতা জানান, চালকদের কাছ থেকে জিবি নেয়া হয়। আর কেউ মহাসড়কে গেলে কিছু বাড়তি নেয়া হয়। কিসের জিবি জানতে চাইলে ওই নেতা জানান পরিবহন শ্রমিকদের নিয়ম এটি। বিভিন্ন এলাকায় এই জিবি বিভিন্ন যান হিসেবে ৪০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। আবার নিষিদ্ধ সড়কে যাতায়াত করতে কোথাও কোথাও এক মাসের জন্য টোকেনও বিক্রি হয়। হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি জনকণ্ঠকে বলেন, আমাদের কর্মকর্তাদের নামে কোন অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তবে আমরা এই নিয়ে কাজ করছি। আমাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনায় আছে পরিধি বাড়ানোর। অনেক থানা এলাকার এরিয়া বেশি সেসব জায়গায় হয়তো কভার করা সম্ভব হয় না তখন কেউ কেউ লুকিয়ে সড়কে উঠে আসে বলেও মনে করেন। তবে এটি নিয়ে হাইওয়ে পুলিশ সক্রিয়ভাবে কাজ করছে বলেও জানান তিনি। সূত্র জানিয়েছে, ময়মনসিংহ শহর, ময়মনসিংহ-ঢাকা, ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কসহ ১৩টি উপজেলার বিভিন্ন রুটে ত্রিশ হাজারের বেশি সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, মাহেন্দ্র ও লেগুনা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। প্রতিদিনই বাড়ছে এসব ছোট যানের সংখ্যা। লোকাল বাসের সংখ্যা কমে যাওয়া ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে যাত্রীরাও বাধ্য হয়েই চড়ে বসছেন এসব ছোট যানে। বইলর এলাকার বাসিন্দা ইসরাফিল আনাম বলেন, এরা যখন তখন লেন পরিবর্তন করে। ফলে দুর্ঘটনা হয়। আর বড় চেয়ে ছোট গাড়ির গতি কম কিন্তু এরা বড় গাড়িকে যাওয়ার রাস্তা দেয় না বরং পাল্লা (প্রতিযোগিতা) দেয়। ফুলবাড়িয়া উপজেলার এক সিএনজি চালক বলেন, আমাদের চলাচলে অনেক খরচ। বিভিন্ন নেতাদের টাকা দিতে হয়। পুলিশ আটকালে দিতে হয়। জিবি খরচ আছে। নিজেদেরও তো সংসার আছে বলেন তিনি। ময়মনসিংহ শহর ও আশপাশে হাইওয়ে পুলিশের টিম নেই। যেটি আছে তা অনেক দূরে। একটি ভরাডোবা ফাঁড়ি, একটি নেত্রকোনার শ্যামগঞ্জ ফাঁড়ি, টাঙ্গাইলের মধুপুর ফাঁড়ি আর নতুন হয়েছে জামালপুরের বকশিগঞ্জ হাইওয়ে। সব কমপক্ষে ১৫ কিমি দূরে হওয়ার কারণে ময়মনসিংহ থেকে অনায়াসে মহাসড়ক বা আঞ্চলিক সড়ক ব্যবহার করা যায়। এ বিষয়ে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মোঃ শাহ আবিদ হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, কোন গাড়ি চলবে না চলবে সেই পুরো বিষয়টা হাইওয়ে পুলিশের। তবে নিকটস্থ এরিয়াতে হাইওয়ে পুলিশ নেই সেটিও বলেন। তাহলে জেলা পুলিশ বা থানার পুলিশ কোন পদক্ষেপ নিতে পারবে কিনা সে বিষয়েও কিছু বলেনি এই কর্মকর্তা। এক কথায় উত্তর দেন এটি হাইওয়ে পুলিশের বিষয়। এ বিষয়ে ভরাডোবা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শাহজালাল বলেন, এই ধরনের যান ধরতে সর্বদাই আমরা কাজ করছি। আগে ধরে মামলা দিতাম এখন আমাদের নির্দেশনা আছে গাড়ি ধরলে আর ছাড়া হয় না ডাম্পিংয়ের জন্য পাঠিয়ে দেই। আরো একাধিক ফাঁড়িতে যোগাযোগ করে জানা যায় হাইওয়ে পুলিশ কাজ করলেও লোকবল আর নানা সীমাবদ্ধতার কথা। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ও হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়ক দুটিও রয়েছে নিষেধাজ্ঞার ২২টি সড়কের মধ্যে। এখানেও চলাচল করছে তিন চাকার যান। সূত্র জানিয়েছেন, এই দুই মহাসড়কের মধ্যে কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়কের কুমিল্লা জেলার ৪০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অটোরিক্সা সব সময়ই চলে। কিন্তু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলাচল করে অটোরিকশা। কোথাও কোথাও এক পাশ থেকে আরেক পাশে পার হচ্ছে তিন চাকার বাহন। জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার নন্দনপুর, পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডের উত্তর রামপুর ইউটার্ন, সদর দক্ষিণ উপজেলা ফটক, সুয়াগাজী ও চৌদ্দগ্রামের মিয়াবাজার এলাকা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে অটোরিক্সা পার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সুয়াগাজী এলাকা দিয়ে চলে অটোরিক্সা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার সৈয়দপুর এলাকায়, চান্দিনা, রায়পুর এলাকায়ও তিন চাকার বাহন চলছে দেখা যায়। কুমিল্ল-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়কের দেবীদ্বার, দেবপুর, কংশনগর, কোম্পানীগঞ্জ এলাকায় তিন চাকার বাহন চলে। সওজের উর্ধতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, তিন চাকার বাহনের কারণে মহাসড়কে দুর্ঘটনা বাড়ছে এটা সত্য। অনেক জায়গা এটি নেই তবে একেবারে বন্ধও নেই এটিও সত্য। মহাসড়কের বিষয়গুলো দেখবে পুলিশ তারাইতো ব্যবস্থা নেবে। না নিলে নিশ্চয় গরবর আছে বলেন ঐ কর্মকর্তা। বিআরটিএ কুমিল্লা সূত্র জানিয়েছে, কুমিল্লা জেলায় বৈধ সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা ১২ হাজারের মতো। লাইসেন্সবিহীন আছে আরও অন্তত ১০ হাজার। বিআরটিএ এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন বিভিন্ন সময় অভিযানের কথাও। অভিযানের সময় হাইওয়ে পুলিশ সঙ্গে থাকে সেটিও বলেন। এছাড়াও যশোরের সব মহাসড়কে ইজিবাইক চলাচল করার তথ্য পাওয়া গেছে। একাধিক সূত্র ও সম্প্রতি সময়ে সড়ক পথে যাওয়া ভারত ফেরত যাত্রীদের নিকট থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। যশোর-খুলনা, যশোর-বেনাপোল, যশোর-ঝিনাইদহ ও যশোর-মাগুরা মহাসড়কের পাশাপাশি আঞ্চলিক মহাসড়কেও নিষিদ্ধ তিন চাকার যানবাহন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বলে জানা যায়। ভারত থেকে ফেরা ইমতিয়াজ আলম বলেন, এ ধরনের যানবাহনের জন্য আমাদের বাস প্রচুর হর্ণ দিচ্ছিল, গাড়িও ধীরে ধীরে চালাতে হয়েছে। এটা একটি বিরক্তিকর বিষয়। যদিও এসব সড়কে নাকি এ ধরনের যান চলাচল নিষিদ্ধ তাহলে কেমনে চলে সেই প্রশ্ন রাখেন ব্যবসায়ী ইমতিয়াজ। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ইজিবাইক মালিক-শ্রমিকদের নামে একাধিক সংগঠন চাঁদা তুলে সব সংস্থাকে ম্যানেজ করে মহাসড়কে এসব অবৈধ যান চালাচ্ছে বলে অনেকেই অভিযোগ করে প্রতিনিয়ত। যশোরের উর্ধতন একাধিক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলে জানা গেছে, সড়ক-মহাসড়কে ইজিবাইকসহ অন্যান্য যানবাহন বন্ধ তবে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে চালানোর চেষ্টাও হয়। পুলিশ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে বলেও জানান একাধিক কর্মকর্তা। কুমিল্লা, বগুড়া ও যশোর অঞ্চলের একাধিক মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা কয়েকটি সীমাবদ্ধতার কথা বলেন। এর মধ্যে অন্যতম সড়কে এ ধরনের যান ধরা হলে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ অতিমাত্রার চাপ প্রয়োগ করে। অধিকাংশ সময় দরিদ্ররা ঋণ করে এই ধরনের ইজিবাইক বা অন্যান্য যান কিনে থাকেন। মানবিকতার কারণে ছেড়ে দেয়া হলেও বার বার তারা অতি লোভে সড়ক বা মহাসড়কে উঠে আসেন। তবে মহাসড়কে এখন আর কোন ছাড় দেয়া হচ্ছে না জানান মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। অপরাধ বিশ্লেষক ও শিক্ষক তৌহিদুল হক বলেন, আমাদের দায়িত্ব সঠিক বাস্তবায়ন দরকার। যে কোন নির্দেশনা যাদের ওপর বর্তায় তারা দায়িত্ব যেন সঠিক পালন করে। আমাদের সড়কের শৃঙ্খলাটা দরকার। নিষিদ্ধ সড়কে যদি যান একেবারেই না উঠে দেখবেন দুর্ঘটনা আরও কমে আসবে। ঢাকার গণমাধ্যমকর্মীদের সংগঠন শিপিং এ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরাম (এসসিআরএফ) এর তথ্য মতে, চলতি বছরের গত আট মাসে ২ ৮০৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৮৪ নারী ও ৪৭৮ শিশুসহ ৩,০৭৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে। আর এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৫,৬৯৭ জন। সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত সংগঠনটির নিয়মিত মাসিক জরিপ ও পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। দেশের ২২টি জাতীয় দৈনিক, ১০টি আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং আটটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সংবাদ সংস্থার তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। সর্বশেষ আগস্ট মাসে ৩৩৭টি দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটেছে ৩৯৮ জনের আর আহতের সংখ্যা ৮২৩ জন। শিপিং এ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের (এসসিআরএফ) সভাপতি আশীষ কুমার দে বলেন, নিয়মিত পর্যবেক্ষণে সড়ক দুর্ঘটনার জন্য ১০টি প্রধান কারণ চিহ্নিত করা হয়। যার মধ্যে অন্যতম সড়ক-মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন চলাচল বৃদ্ধি উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসেবে দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ২০১৬ সালে চার হাজার, ২০১৭ সালে পাঁচ হাজার এবং ২০১৮ সালে সাত হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতিরও তাদের হিসেবে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে অন্যতম কারণ দেখাচ্ছেন এই নিষিদ্ধ সড়কে তিন চাকার যান চলাচলের বিষয়টি। সবাই প্রত্যাশা করেন নির্দেশনার সঠিক বাস্তবায়ন। আর সাধারণ মানুষ নিরাপদে চলতে চায়। সংশ্লিষ্টরা আরে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখবে সচেতন নাগরিকদের প্রত্যাশা সেটিই।
×