ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হারের যন্ত্রণা ভুলে এখন জাপানে মনোযোগী মারিয়ারা

প্রকাশিত: ০৭:৩৩, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

হারের যন্ত্রণা ভুলে এখন জাপানে মনোযোগী মারিয়ারা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ম্যাচটা জিততেও পারতো তারা। কিন্তু গোল করার একাধিক সূবর্ণ সুযোগ নষ্ট করলে তার খেসারত তো দিতে হবেই। সেটা দিয়েছেও বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৬ জাতীয় নারী ফুটবল দল। এএফসি অ-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্তপর্বে নিজেদের প্রথম গ্রুপ ম্যাচে তারা ০-১ গোলে হেরে গেছে স্বাগতিক থাইল্যান্ডের কাছে। সেই হারের দুঃসহ যন্ত্রণা ভুলে এখন তারা মনোযোগী হয়েছে পরের ম্যাচের দিকে। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর তাদের দ্বিতীয় প্রতিপক্ষ শক্তিশালী জাপান। ভেন্যু থাইল্যান্ডের আইপিই চনবুরি স্টেডিয়াম। এই আসরে ২০১৭ সালেও জাপানের মুখোমুখি হয়েছিল লাল-সবুজ বাহিনী। সেবার জাপানের কাছে তারা হেরেছিল ৩-০ গোলে। তবে এবার সেই হারের পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, তা নিয়ে আপ্রাণ চেষ্টা করবে গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যারা। এই লক্ষ্যে সোমবার ওয়াকিং সেশন, সুইমিং সেশন এবং রিকভারি সেশন করে তারা। এছাড়া জাপান দলের খেলার ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে খেলোয়াড়দের প্রয়োজনীয় দিক-নিদের্শনা দেন কোচিং স্টাফরা। এদিকে রবিবার যারা থাইল্যান্ড-বাংলাদেশ ম্যাচটি দেখেছেন, তারা সবাই আফসোস করছেন বাংলাদেশ দল হেরে যাওয়াতে। কেননা ম্যাচে বেশ ভালই খেরেছে বাংলাদেশ দল। দুই ফরোয়ার্ড তহুরা খাতুন এবং আনুচিং মগিনি গোল করার দারুন সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু দুভার্গ্যবশত সেগুলো অল্পের জন্য গোলে পরিণত হতে পারেনি। তাছাড়া ম্যাচটি বাংলাদেশকে খেলতে হয়েছে দর্শক সমর্থনপুষ্ট থাই-দলের বিরুদ্ধে। আবহাওয়াও ছিল তাদের পক্ষে। কিন্তু সবকিছু সামলে দুর্দান্ত আক্রমণাত্নক ফুটবল উপহার দেয় মারিয়ারা। কিন্তু আসল কাজের কাজ গোলটাই শুধু করতে পারেনি তারা! বিশেষ করে প্রথমার্ধে বাংলাদেশই বেমি প্রাধান্য বিস্তার করে খেলে। থাই দল বার বার হিমশিম খাচ্ছিল বাংলাদেশ দলের মুর্হূমুর্হূ আক্রমণগুলো রুখতে গিয়ে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে একটি ফ্রি কিকের বল মাথার ওপর দিয়ে জালে গিয়ে আশ্রয় নেয়ায় পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। অনেক চেষ্টা করেও বলটি ধরতে পারেনি বাংলাদেশের গোলরক্ষক রূপনা চাকমা। অনেক চেষ্টা করেও সেই গোলটি আর শোধ করতে পারেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। আনুচিংয়ের বদলে ঋতুপর্ণা চাকমাকে এবং তহুরার পরিবর্তে সাজেদা খাতুনকে নামালেও কোন লাভ হয়নি। তবে শেষেরদিকে একটি পেনাল্টি মিস না করলে ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারতো থাইকন্যারা। ম্যাচ শেষে কোচ ছোটন জানান, ম্যাচে তার মেয়েরা ভালই খেলেছে, কিন্তু গোল করতে না পারায় তিনি হতাশ। তবে হতাশা ঝেড়ে ফেলে তিনি পরের ম্যাচ নিয়েই ভাবছেন। জাপানের বিরুদ্ধে মেয়েরা কঠোর পরিশ্রম করতে পাররে এবং নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারলে এই ম্যাচে ভাল ফল করা সম্ভব। এই আসরটি আগামী বছর ভারতে অনুষ্ঠেয় ফিফা অ-১৭ নারী বিশ্বকাপের বাছাইও বটে। আট দলের মধ্যে সেরা দুই দলের একটি হয়ে বিশ্বকাপে নাম লেখানোটা পাওয়া বাংলাদেশের জন্য খুবই কঠিন। তারপরও চেষ্টা করতে চায় লাল-সবুজ বাহিনী। এএফসি অনুর্ধ্ব-১৬ নারী আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাই পর্বে (সাউথ এ্যান্ড সেন্ট্রাল) নিজেদের মাঠে ২০১৬ সালেও বাংলাদেশ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। তারপর ২০১৭ সালে থাইল্যান্ডে এই আসরের মূল পর্বে অংশ নিলেও কঠিন প্রতিপক্ষদের বিপক্ষে ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। এই আসরের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ এই দুটি দল ফিফা অ-১৭ নারী বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। আগে তিনটি দল অংশ নিতে পারতো। ভারত যেহেতু ফিফা অ-১৭ নারী বিশ্বকাপের আয়োজক, সেহেতু তারা এই আসরে সরাসরি খেলবে। কাজেই এবার এশিয়া কোটা থেকে ১টি দল কমে গেছে। এটা বাংলাদেশ দলের জন্য দুঃসংবাদই বটে! ২০১৬ আসরে মূলপর্বে যেতে একটি ধাপ পেরুতে হয়েছিল। কিন্তু এবার দল বেশি থাকায় দুটি ধাপ পেরুতে হয় বাংলাদেশকে।
×