ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

“দ্রুত রাজনৈতিক সমঝোতা” ॥ ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

প্রকাশিত: ০৮:৪০, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 “দ্রুত রাজনৈতিক সমঝোতা” ॥ ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

১৯৭১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর দিনটি ছিল মঙ্গলবার। এইদিন ২নং সেক্টরে মুক্তিফৌজের রেইডিং পার্টি সকাল ৮টায় কায়েমপুরের পাকসেনা অবস্থানের ওপর রকেট ল্যাঞ্চারের সাহায্যে আক্রমণ চালায়। এতে পাকসেনাদের দুটি বাঙ্কার ধ্বংস হয় এবং ১৬জন পাকসৈন্য নিহত ও ৮ জন আহত হয়। শালদার এবং জগন্নাথ দীঘির পাকসেনাদের কামানের ঘাঁটিগুলোকে ধ্বংস করে দেবার জন্য সকালে মুক্তিফৌজের একটি কোম্পানিকে তিনটি মর্টার সহ পাকসেনাদের অবস্থানের পেঁছনে পাঠানো হয়। গোপন পথে অনুপ্রবেশ করে এই দলটি বিকেল নাগাদ ফেনী বিমান বন্দরের পশ্চিমে পৌঁছে এবং পাকসেনাদের ব্রিঞ্চিতে অবস্থিত কামানঘাঁটি সম্বন্ধে বিস্তারিত খবর সংগ্রহ করে রাত ১.৩০টায় পাক অবস্থানের উপর মর্টারের সাহায্যে অতর্কিত আক্রমণ চালায়। পাকসেনারা এই ধরণের আক্রমণের জন্য মোটেই প্রস্তুত ছিলোনা। আক্রমণের ভয়াবহতায় উপায়ান্তর না দেখে তারা ফেনিতে অবস্থিত তাদের অন্য গোলন্দাজ বাহিনীর সাহায্যের আবেদন জানায়। ফেনী থেকে পাকসেনাদের কামানগুলো মুক্তিফৌজের অবস্থানের উপর প্রচন্ড আক্রমণ চালায়। মুক্তিফৌজের দুর্ধর্ষ গোলন্দাজ বাহিনী পাকসেনাদের ফেনী অবস্থানের উপর পাল্টা আক্রমণ চালায়। দুঘণ্টা যুদ্ধের পর মুক্তিফৌজের রেইডিং পার্টি পাকসেনাদের ১০ জনকে হত্যা, ১৬ জনকে আহত এবং তাদের আরও বহু ক্ষতি সাধন করে নিরাপদে নিজেদের অবস্থানে ফিরে আসে। মুক্তিফৌজের কামানের আক্রমণ পাকসেনাদের ঘাঁটির যথেষ্ট ক্ষতিসাধন করে এবং তারা তাদের গোলাবর্ষণ বন্ধ করতে বাধ্য হয়। মুক্তিফৌজের এই আক্রমণের ফলে পাকসেনাদের গোলন্দাজ ঘাঁটিতে ১১ জন পাকসেনা নিহত এবং ২৩ জন আহত হয়। ব্রিঞ্চিতে ৩ টি জিপ ধ্বংস হয়ে যায়। একটি কামানেরও মারাত্মক ক্ষতি হয়। ফেনীতে পাকসেনাদের মনোবল অনেকটা ভেঙ্গে পড়ে। বিশেষ করে পাকসেনাদের সহকারী শান্তি কমটির সদস্য দালালরা ভয়ে ফেনী শহর পরিত্যাগ করে অন্যত্র চলে যায়। অপরদিকে এই আক্রমণের ফলে মুক্তিফৌজ ও স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণের মনোবল আরো বৃদ্ধি পায়। মুক্তিবাহিনী কোম্পানীগঞ্জ থানার বসুরহাটের কাছে পাক মিলিশিয়াদের অ্যামবুশ করে। এই অ্যামবুশে পাক মিলিশিয়াদের একটি টয়েটা জিপ ধ্বংস হয় এবং ৩০ জন পাকসৈন্য হতাহত হয়। সংঘর্ষে মুক্তিযোদ্ধা নুরুন্নবী আহত হন। মুক্তিবাহিনী পাকসেনাদের ফেনী অবস্থানের ওপর মর্টার আক্রমণ চালায়। এতে পাকসেনাদের কামানের সাহায্যে মুক্তিবাহিনীর অবস্থানের দিকে পাল্টা আক্রমণ করে। দুঘন্টা স্থায়ী এই যুদ্ধে পাকবাহিনীর ১০ জন সৈন্য নিহত এবং ১৬ জন আহত হয়। পাক বাহিনীর প্রায় দুই ব্যাটালিয়ন সৈন্য একই সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর বিয়ানীবাজার, বড়লেখা, জকিগঞ্জ থানা অবস্থানে ব্যাপকভাবে আক্রমণ করে। মুক্তিবাহিনী পাকিস্তানিদের সম্ভাব্য আক্রমণের জন্য প্রস্তুত না থাকায় তাঁরা বেশ কিছু ক্ষতির সম্মুখীন হয় এবং পিছু হটতে বাধ্য হয়। এই সংঘর্ষে মুক্তিবাহিনীর ৭ জন বীর যোদ্ধা শহীদ ও কয়েকজন আহত হন। খুলনার আলফাপুর এলাকায় মুক্তিবাহিনীর এক দুঃসাহসিক অভিযানে পাকসেনাদের ২৭ জন সৈন্য নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের কাছ থেকে ১৬ টি রাইফেল ও ৭টি চাইনিজ গোলার বাক্স উদ্ধার করে। মুক্তিবাহিনী কুমিল্লার কসবা এলাকায় পাকসেনাদেরকে অতর্কিত আক্রমণ করে। এই আক্রমণে ২ জন পাকসৈন্য নিহত হয়। মুক্তিবাহিনী রাজশাহীর পাগলাদিয়ানাহাটে পাকসেনা অবস্থানের ওপর আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণে পাকবাহিনীর ৮ জন সৈন্য নিহত হয়। মুক্তিবাহিনীর ৩০০ সদস্যের একটি দল রাজশাহীর খানজানপুরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে শত্রুবাহিনীকে পর্যুদস্ত করে। মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের কাছ থেকে বিপুল অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ দখল করে। ১নং সেক্টরের মুক্তিবাহিনীর সেনা অফিসারদের সাথে ভারতীয় সেনা কমান্ডার লেঃ জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার একটি গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় মুক্তিবাহিনীর গেরিলা যোদ্ধাদের কর্মতৎপরতার বিষয়টি সবিস্তারে আলোচিত হয়। পূর্ব পাকিস্তানের গভর্ণর ডাঃ আবদুল মোতালেব মালিক বেতার ভাষণে বলেন, ‘জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের উদ্যোগ শুরু করার উদ্দেশ্যে প্রেসিডেন্ট আমাকে এই প্রদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান নিযুক্ত করেছেন। আমি আপনাদের সাহায্য ও সহযোগিতা কামনা করছি এই জন্য যাতে প্রদেশে শান্তি ফিরিয়ে আনা যায়। আজকের যুবক শ্রেণী তো জানে না যে, নতুন এক জাতির বাসভূমি আমাদের এই পাকিস্তানকে বাস্তবে রূপায়িত করার জন্য আমাদের কত পরিশ্রম করতে হয়েছে। পরিশেষে আমি আরো বলতে চাই যে, আমার সরকার একটি অন্তবর্তীকালীন সরকার। যে মুহুর্তে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে এবং নির্ধারিত কার্যক্রম অনুসারে উপনির্বাচন সমাপ্ত করা হবে, সেই মুহুর্তে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে জনগণের সার্বভৌমত্ব পূনঃপ্রতিষ্ঠিত করা হবে। ’প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া পাক-ভারত বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্যে তেহরানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। বিমানবন্দরে তাকে অভিনন্দন জানান ইরানের শাহ রেজা পাহলভি। সোভিয়েত রাষ্ট্রপতি নিকোলাই পডগোর্নি দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি রক্ষার্থে বাংলাদেশে “দ্রুত রাজনৈতিক সমঝোতা” আহবান করেন। এইদিন (১৪ সেপ্টেম্বর) আফগান রাজা মোহাম্মদ জহির শাহের আগমনে ক্রেমলিনে আয়োজিত এক ভোজসভায় তিনি এই বক্তব্য রাখেন। সোভিয়েত রাষ্ট্রপতি বলেন, “সম্প্রতি এশীয় উপমহাদেশের পরিস্থিতিতে অবনতি পরিলক্ষিত হয়েছে। তিনি মনে করেন, শরণার্থীদের সমস্যাগুলো বাংলাদেশের চলমান ঘটনাবলীর সাথেই উদিত হচ্ছে। সোভিয়েত রাষ্ট্রপতির ভোজসভার বক্তব্যের জবাবে আফগান রাজা বলেন, “আমাদের মতে বিরোধ সমাধানে যে কোন সামরিক চাপ সৃষ্টি ভয়াবহ পরিণতির দিকে নিয়ে যাবে। মানুষ ও জাতির অবিচ্ছেদ্য অধিকার নিশ্চিত করেই সকল বিরোধ রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হবে...।” ভারতের রাষ্ট্রপতি ভি.ভি. গিরি গত সপ্তাহে সিঙ্গাপুরে এক বক্তব্যে বলেন যে, ষাট লক্ষের অধিক উদ্বাস্তুর অন্তঃপ্রবাহ ভারতের জন্য বিশেষ সমস্যার সৃষ্টি করছে। তিনি তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট করেন যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি বিশ্বাস থেকে, যতদিন না উদ্বাস্তুরা নিজের দেশে নিরাপত্তা ও সম্মানের সাথে ফিরে যেতে পারছে ততদিন ভারত তাদের সাময়িক আশ্রয় দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, অভীষ্ট অর্জনে প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরী করা সে সময়ে জরুরী ছিল। বিবিসির খবরে বলা হয়, ওয়াশিংটনস্থ ইসলামাবাদ মিশনের আরও কয়েকজন বাঙালি কূটনীতিবিদ বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন । অবশ্য বিবিসি এইসব বাঙ্গালী কূটনীতিবিদদের নাম বা পদবী ঘোষণা করেনি । এদিকে বাংলাদেশ সরকার ইসলামাবাদের যে সমস্ত বিদেশী দূতাবাসে এখনও বাঙ্গালী কূটনীতিবিদ রয়েছেন, তাদের প্রতি আগামী এক পক্ষকালের মধ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন । উক্ত নির্দেশে আরও বলা হয়েছে যে, যে সকল বাঙালি কূটনীতিবিদ আগামী এক পক্ষকালের মধ্যে বিদেশী হানাদার ইসলামাবাদ সরকারের সহিত সম্পর্ক ছিন্ন করে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশে ব্যর্থ হবেন, তারা দেশদ্রোহী বলে পরিগনিত হবেন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের এই গোপন নির্দেশ ইতিমধ্যেই ইসলামাবাদের বিদেশস্থ কূটনৈতিক মিশনের বাঙ্গালী কূটনীতিবিদদের নিকট পৌঁছেছে। এই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে লন্ডন, ওয়াশিংটন এবং ম্যানিলাস্থ ইসলামাবাদ দূতাবাসের বাঙালি কূটনীতিবিদগণ জঙ্গীশাহীর চাকুরী ইস্তফা দিয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন । জনাব কায়সার এবং সিরিয়ার ইসলামাবাদের বাঙালি দূত জনাব হুমায়ূন পন্নী ইয়ালামাবাদ চক্রের সহিত সম্পর্ক ছিন্নের সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছেন । এদিকে ইরানে নিযুক্ত ইসলামাবাদের সাবেক বাঙালি রাষ্ট্রদূত জনাব ফতেহ ইসলামাবাদের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে যে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খোন্দকার মুশতাক তার তীব্র নিন্দা করেছেন । তিনি ইসলামাবাদ চক্রের এই জঘন্য মিথ্যা অভিযোগে বিস্ময় প্রকাশ করেন । পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জনাব ফতেহ ইসলামাবাদের অর্থ নিয়ে এসে বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশই কেবল পালন করেছেন এবং বাংলাদেশের ন্যায্য প্রাপ্য যথাসময়ে বাংলাদেশের পক্ষ হতে আদায় করেছেন । তিনি আরও বলেন, উক্ত অর্থ এখন স্বাধীন সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তহবিলে জমা হয়েছে এবং জমাকৃত অর্থ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ব্যয়িত হবে। অ্যামস্টারড্যাম থেকে প্রকাশিত দ্য টাইড ‘আন্তরিক শ্রদ্ধা? বিভিন্ন সময়ে’ শিরোনামের মন্তব্য প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই নিবন্ধটি পূর্ব পাকিস্তানের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দেয় এবং আর্টিকেলটির লেখক পাক রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে সবচেয়ে দুর্বিনীত, অবমাননাকর এবং মানহানিকর ভাষা ব্যবহার করেছেন। এবং তিনি পাক সরকারের বিরুদ্ধে ঘৃণার বীজ বপন করেছেন। নেদারল্যান্ডসের মতো একটি দেশ যার সাথে পাকিস্তান বন্ধুত্বপূর্ণ ও সুখী সম্পর্ক বজায় রাখে, তাতে এমন একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হতে পারে, এ ব্যাপারে পাক দূতাবাস ‘আহত ও ব্যথিত’। পাক দূতাবাস এই কলামের প্রকাশনার বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রতিবাদ জানাচ্ছে এবং আশা করছে যে এই বিষয়ে মন্ত্রণালয় ‘যথাযথ ব্যবস্থা’ গ্রহণ করবেন। লেখক বলেন” মাননীয় রাষ্ট্রদূত “কেউ যদি তা ব্যাখ্যা করতে পারেন” শিরোনামে আমার লেখা একটি নিবন্ধে রুষ্ট হয়েছিলেন। আমার শেষ বক্তব্য ছিলো: “ভবিষ্যত যদি গৌরবান্বিতও হয়, শান্তি, সুখ ও ন্যায়বিচারে পরিপূর্ণ হয় বিশ্ব, তারপরও তা পূর্ব পাকিস্তান, বায়াফ্রা এবং ভিয়েতনামের জনগণের কোনোই কাজে আসবেনা। তারা কেবল একবারই বাঁচবে এবং কেন তাদের এভাবে ভুগতে হবে তা কেউই তাদের কাছে ব্যাখ্যা করতে পারবেনা। “এ অংশটি অবশ্যই রাষ্ট্রদূতের ক্রোধের কারণ নয়। তিনি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন; কিন্তু সত্যি বলতে, তা মোটেই আমার উদ্দেশ্য ছিলো না। লেখাটিকে কেবল তখনই খারাপ বলা যেত, যদি তিনি তাতে সন্তুষ্ট হতেন। বিশেষত পাক রাষ্ট্রপতি জেনারেল ইয়াহিয়া খান সম্পর্কে আমি যা লিখেছিলাম, মহামান্য রাষ্ট্রদূত তাতেই ক্ষুব্ধ। আমি আরো লিখেছিলাম, “ইয়াহিয়া সেই ব্যাক্তি যে পূর্ব পাকিস্তানিদের অবদমিত রাখতে তার সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা তাকে একজন খলনায়ক হিসেবেই বিবেচনা করে থাকি, একজন বিশৃঙ্খল অপরাধী যাকে গ্রেফতার করা উচিত, যাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত করা উচিত, অথবা অন্ততপক্ষে পাগলাগারদে রাখা উচিত, কারণ তিনি উম্মাদ হয়ে থাকতে পারেন, তা নাহলে তিনি এমন নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দিতে পারতেন না: হাজার হাজার, লাখ লাখ স্বদেশী জনগণের ওপর ঠান্ডা মাথায় খুনো মনোবৃত্তি নিয়ে আক্রমণ চালানো, রাষ্ট্রপতি হিসেবে যাদেরকে কিনা তার রক্ষা করার কথা! প্রকৃতপক্ষেই, এমন একজন মানুষ অবশ্যই অপরাধী। “ এছাড়াও আমি সানডে টাইমস-এর একজন সাংবাদিককে উদ্ধৃত করেছিলাম, যার মতে ইয়াহিয়া বাস্তবিকই এই ধারণায় বিশ্বাসী ছিলেন যে, যেকোনো মূল্যে পাক একতা রক্ষা করা তার দায়িত্ব। আমি লিখেছিলাম: “তিনি অনুধাবনই করতে পারছেন না যে তিনি কোনো অপরাধে অপরাধী। ক্ষমতার সর্বোচ্চ শিখরে থেকেও তিনি ক্ষমতার ব্যবহার সম্বন্ধে অবগত নন”। এবং: “বিশ্বের বর্তমান অরাজক পরিস্থিতির কারণেই তা সম্ভব হচ্ছে। “এরই মধ্যে আমরা পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি সম্পর্কে বহু কিছু জানতে পেরেছি। লেখক : শিক্ষাবিদ ও গবেষক [email protected]
×