স্টাফ রিপোর্টার ॥ গাড়ি চালানোর সময় মোবাইলে কথা বললে চালক আটক ও গাড়ি জব্দ করতে ট্রাফিক বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া। রবিবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে রাজমনি ক্রসিংয়ে ‘পথচারীর করণীয়’ শীর্ষক সচেতনতামূলক কর্মসূচী এবং ‘ক্যাশ কার্ডের মাধ্যমে ট্রাফিক প্রসিকিউশনের জরিমানা আদায়’ ব্যবস্থার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এমন নির্দেশনা দেন। ডিএমপি কমিশনার জানান, চলন্ত গাড়িতে যদি চালক মোবাইলে কথা বলেন, তাহলে ড্রাইভিংয়ে মনোযোগ থাকে না। মোবাইলে কথা বলা চালকরা অনেক প্রাণহানি ঘটিয়ে থাকেন। তাই গাড়ি চালানোর সময় মোবাইলে কথা বললে সঙ্গে সঙ্গে চালককে আটক করে গাড়ি জব্দ করা হবে। সড়কের বাম লেন খালি রাখবেন। কেউ বাম লেন দখল করে দাঁড়িয়ে থাকলে তাদের গাড়িও রেকারিংয়ে নিতে ট্রাফিক বিভাগকে নির্দেশ দেন কমিশনার। তিনি জানান, এখন থেকে ট্রাফিক প্রসিকিউশনের জরিমানার টাকার জন্য চালক ও গাড়ির কাগজপত্র জব্দ করা হবে না। জরিমানার টাকা এখন থেকে অন স্পটে যেকোন ব্যাংকের ডেবিট, ক্রেডিট, ভিসা, ক্যাশ, বিকাশ, রকেট ও অন্য কার্ড ব্যবহার করে পরিশোধ করতে পারবেন।
পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া জানান, আগে মামলা দেয়ার সময় গাড়িচালক বা গাড়ির ডকুমেন্ট রেখে ডিজিটাল প্রিন্টেড কেস স্লিপ দেয়া হতো। ওই কেস স্লিপের জরিমানা ব্যাংকে পরিশোধ করে ট্রাফিক অফিসে গিয়ে জব্দ ডকুমেন্ট ফেরত নিতে হতো। যা ছিল অনেক কষ্টসাধ্য এবং সময়সাপেক্ষ। এই টাকা আদায়ে সীমাহীন অনিয়ম ছিল, দুর্নীতি হতো। দুই হাজার টাকা নেয়া হলেও অল্প টাকা সরকারী কোষাগারে জমা করা হতো। এখন থেকে সেটি আর হবে না। এতদিন ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবিএল) মাধ্যমে টাকা জমা দিতে হতো। টাকা আদায় না হওয়া পর্যন্ত কাগজপত্র আটকা থাকত। টাকা দিতে দেরি হলে আরও ভোগান্তি বাড়ত। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে কাগজপত্র পাঠাতেও বিভিন্ন ধরনের বিড়ম্বনা ও হয়রানি হতে হতো। এ সেবা সহজ করার মধ্য দিয়ে ভোগান্তি কমে আসবে। ডিএমপি কমিশনার জানান, এখন যেকোন কার্ড ব্যবহার করে জরিমানার টাকা সঙ্গে সঙ্গে পরিশোধ করতে পারবেন। এখন থেকে কারও গাড়ির কাগজপত্র জব্দও করা হবে না। আর কাউকে হয়রানির মুখেও পড়তে হবে না। রেকারিংয়ের বিষয়ে আছাদুজ্জামান মিয়া জানান, ভুল পার্কিং ও কাগজপত্র না থাকার কারণে গাড়ি রেকারিং করা হতো। রেকারিংয়ের জরিমানার টাকা কর্মকর্তারা হাতে হাতে নগদ হিসেবে নিতো। এখন থেকে নগদ নয়, ই-ক্যাশের মাধ্যমে জমা নেয়া হবে। নগদ টাকা লেনদেন হলে দুর্নীতি ও অসচ্ছতার সুযোগ থাকে। পুলিশ কমিশনার জানান, ঢাকা শহরে অনেক পথচারীকে হেডফোন কিংবা মোবাইল কানে ধরে রাস্তা পার হতে দেখা যায়। বাচ্চা নিয়ে রোড ডিভাইডার পার হতে দেখেছি। রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে হাত দিয়ে ইশারায় গাড়ি থামানোর সঙ্কেত দিতে দেখেছি। জেব্রা ক্রসিং ব্যবহার করেন না। তাদের বিরুদ্ধেও এখন থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে।