ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদে লিপ্ত তারা ইসলামের শত্রু ॥ আহলে সুন্নাত

প্রকাশিত: ১০:১৭, ৭ জুলাই ২০১৯

 যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদে লিপ্ত তারা ইসলামের  শত্রু ॥ আহলে সুন্নাত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শান্তির ধর্ম ইসলামের মাধ্যমে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। ইসলামের নামে যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গী তৎপরতায় লিপ্ত তারা দেশ, জাতি ও ইসলামের চরম শত্রু। যুগে-যুগে এরা ইসলামকে কলুষিত করেছে। ধর্মের নামে সন্ত্রাস শুধু ইসলাম ধর্মেই নয়, সকল ধর্মের অনুসারীদের মধ্যেই সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসী আছে। ইসলামে সন্ত্রাস এ জঙ্গীবাদের কোন স্থান নেই। শনিবার রাজধানীতে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআ’ত আয়োজিত সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও মাদকবিরোধী ওলামা-মাশায়েখ ও বুদ্ধিজীবী কনভেনশনে এ অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে। রাজধানীর বিএমএ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত কনভেনশনে সভাপতিত্ব করেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআ’তের শীর্ষনেতা শেরে মিল্লাত আল্লামা মুফতি ওবায়দুল হক নঈমী। কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মুফতি আবুল কাশেম মোহাম্মদ ফজলুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পিএইচপি গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ সুফী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আলহাজ মুহাম্মদ মহসিন, চট্টগ্রাম জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আল্লামা মুফতি সৈয়দ অসিউর রহমান, আঞ্জুমান রিসার্চ সেন্টারের মহাপরিচালক লেখক ও গবেষক আল্লামা এম এ মান্নান, পীরে তরিকত আল্লামা আব্দুল বারী জিহাদী, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত বাংলাদেশের মহাসচিব পীরে তরিকত সৈয়দ মুহাম্মদ মছিহুদৌলা, শাইখুল হাদিস আল্লামা কাজী মঈনুদ্দিন আশরাফী, আল্লামা আশরাফুজ্জামান আল-কাদেরী, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আব্দুল্লাহ আল-মারুফ শাহ্, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মুদাররেসীন যুগ্ম-মহাসচিব ড. অধ্যক্ষ একেএম মাহবুবুর রহমান, জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক মুহাম্মদ আব্দুল অদুদ প্রমুখ। কনভেনশনে বক্তারা বলেন, ধর্মের নামে যারাই সন্ত্রাস করবে তাদের সঙ্গে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই। জেহাদের নামে যারাই সন্ত্রাস করছে তারা আদর্শিকভাবে কখনও সালাফী, কখনও খারেজী, কখনও বা অন্য কোন বিকৃত সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ৭১-এর স্বাধীনতার বিরোধিতারাও কোন না কোনভাবে আদর্শিকভাবে এসব জেহাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত, যে কারণে স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় অসংখ্য মানুষ হতাহত হয়েছে। মা-বোনের ইজ্জত লুণ্ঠিত হয়েছে। এরা সবাই মূলত ইসলামের মূলধারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের মতাদর্শবিরোধী। তারা আরও বলেন, ইসলামের নামে সন্ত্রাস জঙ্গীবাদে জড়িতদের প্রধান টার্গেট সুফিবাদে বিশ্বাসী শান্তিপ্রিয় মানুষগুলো। সালাফী তথা আহলে হাদিস মতবাদে বিশ্বাসী ধর্মীয় নেতাদের কুরআন-হাদিসের অপব্যাখ্যা ও বাংলাদেশের সংবিধান, গণতন্ত্র, জাতীয় সঙ্গীত ও পতাকা, জাতীয় দিবস বিদ্বেষী বক্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়ে ধর্মীয় জ্ঞানশূন্য তরুণ প্রজন্ম জঙ্গীদের দিকে ঝুঁকছে। সরাসরি জঙ্গীদের সমর্থনে ওদের অনেক বক্তব্য ইউটিউব জুড়ে বিস্তৃত। যেখানে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে ওদের মতবাদে বিশ্বাসী ছাড়া বাকিরা সবাই মুশরিক। প্রত্যেক মুশরিককেই কতল করতে হবে জিহাদের অংশ হিসেবে। অথচ ইসলামের নামে নিরপরাধ মানুষ খুন করে তাদের সঙ্গে ইসলামের কোন সম্পর্ক নাই। ইসলাম শান্তির ধর্ম। সমাজে সকল শ্রেণীর মানুষের জন্য শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যই ইসলামের আগমন। এজন্য আমাদের সুন্নি ওলামা-মাশায়েখ ও বুদ্ধিজীবী মহলকে ঐক্যবদ্ধভাবে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া সময়ের দাবিতে রূপ নিয়েছে। তারা আরও বলেন, আমাদের তরুণ প্রজন্ম আশঙ্কাজনক হারে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের দিকে ঝুঁকছে। এর পেছনে অনেক কারণ আছে। একদিকে কোরআন ও হাদিসের অপব্যাখ্যা করে সাধারণ ইসলাম-প্রিয় তরুণদের আকৃষ্ট করছে কিছু বিভ্রান্ত গোষ্ঠী। ইসলামের পবিত্র পরিভাষা ‘জিহাদ’ এর ভুল ব্যাখ্যা করে তাদের জঙ্গীবাদে আকৃষ্ট করা হচ্ছে। অথচ জিহাদ আর তথাকথিত জঙ্গীবাদের মধ্যে দূরতম কোন সম্পর্কও নেই।
×