ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় অজগরের ডিম ফুটে ২৬ সাপ বের হয়েছে

প্রকাশিত: ১১:৪০, ১৫ জুন ২০১৯

 চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় অজগরের  ডিম ফুটে ২৬ সাপ বের হয়েছে

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ ‘অ’ তে অজগর ওই আসছে তেড়ে। বাংলা বর্ণমালার শুরুতেই এই শব্দ। কেউ পড়েনি যদি বলে থাকেন তা সত্য নয়। সোনামণিদের জন্য বিভিন্ন নামের বাংলা বইতে ‘অ’ তে অজগর এটাই প্রথম শব্দ। এই অজগর নাম শুনে শুধু শিশু কেন বুড়োরাও ভয়ে কাঁপে। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় অজগরের প্রজনন হচ্ছে। কথাটা শুনে সকলেই অবাক হচ্ছে। আবার কেউবা কৌতূহলী হয়ে নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছেন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ৩০ বছরের জীবনেই নয় দেশে এই প্রথম অজগর সাপের বাচ্চার প্রজনন করা হলো। শুধু তাই নয় দেশে এই প্রথম কোন চিড়িয়াখানায় এমন কৌতূহলী ঘটনা ঘটেছে। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার তথ্য অনুযায়ী, এই চিড়িয়াখানায় মোট ২০ অজগর আছে। গত এপ্রিলে এরা মোট ৩৫ ডিম পেড়েছে। বাচ্চা ফোটানোর উদ্দেশে এগুলো কে খাঁচা থেকে সরিয়ে হাতে তৈরি ইউকেবেটরে রাখা হয়। কারণ এর আগেও এই চিড়িয়াখানায় অজগর ডিম পেড়েছে। তবে এবার বাচ্চা ফোটাতে ইউকেবেটরে নজর রাখা হয় কৌতূহলীভাবে। দেখতে দেখতে ৬০ দিন পার হলো। এ ৬০ দিন বিভিন্ন তাপমাত্রায় ডিমগুলোকে রাখা হয়। এর মধ্যে নয়টি ডিম নষ্ট হয়ে গেছে। বাকি ২৬ ডিম ফেটে বাচ্চা বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৭ বাচ্চা ডিম থেকে বেরিয়ে এসছে। বাকি বাচ্চাগুলো ডিম ফেটে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে। শনিবারের মধ্যে বাকি বাচ্চাগুলো ডিমের খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসবে। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডাক্তার শাহদাত হোসেন শুভ জানান, এই প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে কাজটি করা গেল। আগামী ১৫ দিন পর এসব বাচ্চা আবার চামড়া বদল করবে। ধীরে ধীরে এদের খাবার দেয়া হবে। আগামী তিন মাস এদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ করতে হবে। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা নির্বাহী কমিটির সদস্য সচিব ও হাটহাজারীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রুহুল আমিন জনকণ্ঠকে জানান, বাংলাদেশে এই প্রথম কোন চিড়িয়াখানা অজগর সাপের খাঁচা থেকে ডিম সংগ্রহ করেছে। এমনকি কৃত্রিমভাবে প্রজননে সফল হয়েছে। এসব অজগর সাপ পরিপূর্ণতা পেলে চিড়িয়াখানার অভয়ারণ্যে ছেড়ে দেয়া হবে। তবে চট্টগ্রাম থেকেই শুরু হলো বণ্যপ্রাণী নিয়ে গবেষণার নতুন দুয়ার। আগামীতে এ ধরনের গবেষণা কাজে নেতৃত্ব দিবে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ৩০ বছরের জীবনে প্রথম কোন পক্ষীশালার জন্ম দিয়ে গত নবেম্বরে দেশে একমাত্র উদহারণ সৃষ্টি করেছিল।
×