ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আজ উদ্বোধন করবেন প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবী শেঠী

চট্টগ্রামেই বিশ্বমানের ইম্পেরিয়াল হসপিটাল

প্রকাশিত: ১১:৩৯, ১৫ জুন ২০১৯

 চট্টগ্রামেই বিশ্বমানের  ইম্পেরিয়াল হসপিটাল

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে বেসরকারী খাতে প্রায় সাড়ে ৮শ’ কোটি টাকায় নির্মিত ‘ইম্পেরিয়াল হসপিটাল’ আজ শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করছে তার সেবা কার্যক্রম। চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়তলীতে মনোরম পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত ৩৭৫ শয্যার এ হসপিটালের যাত্রা শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিকমানের সেবার অঙ্গীকার নিয়ে। সকালে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও ভারতের নারায়না হেলথ এর চেয়ারম্যান ডাঃ দেবী প্রসাদ শেঠী। সর্বাধুনিক চিকিৎসা সেবা প্রদানের প্রত্যয় নিয়ে প্রায় সাড়ে ৮শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে উঠেছে বিশ্বমানের এ হাসপাতাল। নগরীর জাকির হোসেন সড়কে পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালের পাশে সাত একর জমির ওপর নির্মিত এ হাসপাতালের লক্ষ্য দেশেই বিশ্বমানের চিকিৎসা সেবা প্রদান করে রোগীদের বিদেশমুখিতা বন্ধ করা। ইম্পেরিয়ার হসপিটালের বোর্ড চেয়ারম্যান আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাঃ রবিউল হোসেন জানান, এ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগ পরিচালনার দায়িত্বে থাকছে ভারতের বিখ্যাত নারায়না হেলথ। বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ দেবী শেঠী এ হাসপাতালের মাধ্যমেই বাংলাদেশে তার চিকিৎসা সেবার হাত বাড়িয়েছেন। আমরা ভবন এবং যন্ত্রপাতি দিচ্ছি, আর বিভাগ পরিচালনা সম্পূর্ণ দায়িত্ব তাদের। এছাড়া অন্য সকল বিভাগেও রয়েছে চিকিৎসার সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। ইউরোপের অস্টিয়াসহ কয়েকটি দেশের ৫২ জন ট্রেনার ইম্পেরিয়াল হসপিটালের চিকিৎসক, নার্স এবং বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। বাংলাদেশের চিকিৎসকদেরও বিদেশে পাঠিয়ে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে এবং হচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য উন্নত চিকিৎসা প্রদানের পাশাপাশি এই খাতে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা। তিনি জানান, এই পরিকল্পনা প্রায় দশ বছরের। প্রায় চারবছর লেগেছে অবকাঠামো গড়ে তুলতে। ৭ একর জায়গার ওপর ৩৭৫ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, নার্সেস এবং টেকনিশিয়ান প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং যাবতীয় আনুষাঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ৫টি ভবন গড়ে তোলা হয়েছে। মোট ৬ লাখ ৬০ হাজার বর্গফুট জায়গার ওপর এ হাসপাতাল। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি বিখ্যাত স্থাপত্য সংস্থা এ হাসপাতালের মূল নক্সা প্রণয়ন করে। সে নক্সা অনুযায়ী প্রকৌশল, তথ্যপ্রযুক্তি এবং বায়োমেডিক্যাল কারিগরি সহায়তা দিয়ে বাস্তবায়নের কাজ করেছে একটি ইউরোপীয় কনসালট্যান্ট গ্রুপ। হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় কিছু বিষয়কে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ, রোগী ও কর্মীদের নিরাপত্তা, উন্নতমানের সার্বক্ষণিক ইমার্জেন্সি সেবা এবং কার্ডিয়াক, ট্রান্সপ্ল্যান্ট, নিউরো, অর্থপেডিক ও গাইনি অবস ইত্যাদি। থাকছে ১৪টি মডিউলার অপারেশন থিয়েটার, ১৬টি নার্স স্টেশন, ৬২টি কনসালটেন্ট রুম সম্বলিত বহির্বিভাগ, আধুনিক গুণগতমান সম্পন্ন ৬৪টি ক্রিটিক্যাল কেয়ার বেড, নবজাতকদের জন্য ৪৪ শয্যাবিশিষ্ট নিউনেটাল ইউনিট এবং ৮টি পেডিয়াট্রিক আইসিইউ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, এ হাসপাতালে অস্বচ্ছল রোগীদের জন্য ১০ শতাংশ চিকিৎসা সুবিধা, আধুনিক লাইফ সাপোর্ট চিকিৎসা সুবিধা সম্বলিত এ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা, সঙ্কটাপন্ন এলাকা থেকে রোগীদের আনতে হেলিপ্যাড সেবা রয়েছে। দূরবর্তী রোগীদের স্বজন ও দর্শনার্থীদের থাকার সুবিধার্থে হাসপাতার ক্যাম্পাসেই সীমিত আবাসন সুযোগ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রকৌশল পরামর্শকারী সংস্থা কেএমডিএ’র স্থাপত্য ডিজাইন, ড্রয়িং এবং অস্টিয়াভিত্তিক বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ভেমেড এর পরিকল্পনা, প্রযুক্তি ও প্রকৌশল সহযোগিতা অনুযায়ী হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে শুধু সিঙ্গাপুর কিংবা থাইল্যান্ডের হাসপাতালের মতো মানই নয়, ইউরোপীয় স্ট্যান্ডার্ড বজায় রাখা হয়েছে।
×