ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রোহিঙ্গা যাচাইয়ে আরও সময় প্রয়োজন ॥ উইন মিয়াত আয়ে

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ৮ এপ্রিল ২০১৮

রোহিঙ্গা যাচাইয়ে আরও সময় প্রয়োজন ॥ উইন মিয়াত আয়ে

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ফেরত নেয়ার আগে রোহিঙ্গাদের পরিচয় যাচাইয়ের আরও সময় নেয়ার কথা বললেন মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসনমন্ত্রী উইন মিয়াত আয়ে। প্রতিশ্রুতি দেয়ার পরও রোহিঙ্গা ফেরত নিয়ে মিয়ানমারের গড়িমসির অভিযোগের প্রেক্ষাপটে শুক্রবার রেডিও ফ্রি এশিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে একথা বলেন তিনি। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের পক্ষে নেতৃত্বে থাকা উইন আয়ে আগামী ১১ এপ্রিল ঢাকা আসছেন; সফরে তিনি কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে যাবেন বলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশ সীমান্তে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। কয়েক মাসেই এই সংখ্যা ছয় লাখ ছাড়িয়ে যায়। বাংলাদেশে আগে থেকে আশ্রয় নিয়েছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা। রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে মানতে নারাজ হলেও সর্বশেষ ঘটনার পর আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে মিয়ানমার তার দেশের এই মুসলিম বাসিন্দাদের ফেরত নিতে রাজি হয়। চার মাস আগে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একটি সম্মতিপত্র সই হলেও এরপর তার অগ্রগতি নেই। ওই সম্মতিপত্রের ভিত্তিতে দুই দেশ গত ১৯ ডিসেম্বর যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করে। রোহিঙ্গাদের পরিচয় যাচাইয়ের জন্য একটি ফরমও চূড়ান্ত করা হয় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রথম যে ৮ হাজারের তালিকা দেয়া হয়েছিল, তার মধ্যে মাত্র ৫০০ জনের পরিচয় যাচাই করে নিশ্চিত হওয়ার কথা জানিয়েছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। এই প্রক্রিয়ায় দেরি দেখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবারই জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেসের সঙ্গে টেলি আলাপে মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি বাস্তবায়নে সহযোগিতা চেয়েছেন। একই দিন রেডিও ফ্রি এশিয়াকে দেয়া সাক্ষাতকারে মিয়ানমারের মন্ত্রী উইন আয়ে বলেন, শরণার্থীদের পূরণ করা ফরম চুক্তির আলোকে পূরণ না হওয়ায় এখানে জটিলতা তৈরি হয়েছে। “যদি প্রক্রিয়াটি চুক্তি অনুসরণে চলে, যদি ফরমটি চুক্তির আলোকে পূরণ হয়, তবে তো দেরি হওয়ার কথা নয়। কিন্তু এটা সেই পথে হচ্ছে না, যা আমরা প্রত্যাশা করছি। যদি শরণার্থীরা চুক্তি অনুযায়ী ফরমটি পূর্ণ করে, তবে প্রক্রিয়াটি আরও দ্রুততর হতে পারে।” গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ সরকার যে ৮ হাজার ৩২ জনের তালিকা দিয়েছিল, তার মধ্যে ৫০০ মুসলিম রোহিঙ্গার পরিচয় যাচাইয়ের কথা জানান মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ত থু। এছাড়া আরও ৪০০ হিন্দু শরণার্থীকে যাচাইকে করে নিশ্চিত করেছে তারা। এই দেরি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে উইন আয়ে বলেন, “আমি তো আগেই বলেছি, শরণার্থীরা ফরমটি চুক্তির আলোকে পূরণ করছে না। ফলে আমাদের যাচাইয়ে সময় লাগছে।” যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশকে একটি তালিকা পাঠিয়ে এখনও কোন সাড়া পাননি বলে দাবি করেন মিয়ানমারের এই মন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমাদের যেসব নাগরিক পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন, তাদের ফেরত আনা আমাদের দায়িত্ব।” আসন্ন ঢাকা সফরের বিষয়ে তিনি বলেন, শরণার্থীদের এই সমস্যায় দুটি দেশই ভুগছে। শরণার্থী প্রত্যাবাসনে দুই পক্ষই সম্মত। এখন কীভাবে প্রক্রিয়াটি এগিয়ে নেয়া যায়, সহযোগিতা কীভাবে বাড়ানো যায়, সেই বিষয়ে সফরে আলোচনা করবেন তিনি।
×