ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রিজভীর অভিযোগ

স্বাস্থ্য পরীক্ষার নামে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ৮ এপ্রিল ২০১৮

স্বাস্থ্য পরীক্ষার নামে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বাস্থ্য পরীক্ষার নামে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে বাধ্য করে হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, অনেকটা জোর করেই হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় দেশনেত্রীকে এক রকম জোর করেই গাড়িতে উঠিয়ে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। কোন চিকিৎসাই সেখানে তাকে দেয়া হয়নি। সুচিকিৎসার অভাবে দেশনেত্রীর কোন ক্ষতি হলে এর দায় সরকারকেই নিতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। শনিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। এর আগে দুপুরে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে খালেদা জিয়াকে শাহবাগের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে নিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়। স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে হাসপাতাল থেকে খালেদাকে কারাগারে ফেরত নেয়ার কয়েক ঘণ্টা পর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। বলেন, শুনেছি, কারাগারে তার কক্ষে গিয়ে বার বার তাগিদ দিয়েছে দ্রুত প্রস্তুতি নিতে। প্রিয়নেত্রীকে তো কখনও এই লেবাসে দেখিনি। একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম নারী হিসেবে ৩০/৩২ বছর ধরে তিনি শাড়ির ওপর চাদর অথবা ওড়না পরিধান করেন। আজকে সেটি পরিধান করারও সুযোগ দেয়া হয়নি। এছাড়াও তিনি অভিযোগ করেন বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার নামে সরকার নাটক করছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে চিকিৎসার নামে তাকে হেনস্তা করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন। পুরোপুরি অপ্রস্তুতভাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বিএসএমএমইউতে আনা হলেও সেখানে তার কোন চিকিৎসাই করা হয়নি। এমনকি ব্যক্তিগত চিকিৎসকদেরও তার সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হয়নি। দেশনেত্রীর চিকিৎসার কিছুই হয়নি। শুধু হেনস্তা করা হলো, হয়রানি করা হলো। শুধু মানসিকভাবে, শারীরিকভাবে কষ্ট দেয়ার জন্য সরকার এই নাটকটি করেছে, এই বায়স্কোপটি করেছে, এই প্রহসন করেছে উল্লেখ করেন। রিজভী বলেন, দেশনেত্রীর চিকিৎসার বিষয়ে সরকার যে বায়োস্কোপ দেখাল, তার নিন্দা করার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। সরকারের এ বাতিকগ্রস্ত উদ্ভট আচরণের তীব্র প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছি। আওয়ামী রাজত্বের ছাইপাঁশের সঙ্গে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান, দফতর, সেবা বিভাগ বলপূর্বক হরণের ধারায় বেঁধে ফেলা হয়েছে বলেই সরকারী হাসপাতালে বিরোধী দলের সেবা পাওয়ার কোন সুযোগ নেই। সেই সুযোগ ও অধিকারহীনতার শিকার হলেন খালেদা জিয়া। একজন বন্দী আগে যেসব চিকিৎসকের চিকিৎসা নিতেন, কারাগারেও তাদের চিকিৎসা নিতে পারবেন- আইনে এমন রয়েছে দাবি করে রিজভী বলেন, এই আইন থাকলেও সরকার খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দেখা বা পরামর্শ করতে দিচ্ছে না। গত বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে প্রধান কারারক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে, কিন্তু এর কোন প্রতিফলন আজকে দেখা যায়নি। খালেদা জিয়াকে নিয়ে ‘ছিনিমিনি খেলার ধারাবাহিকতা’ বন্ধ না করলে কোটি কণ্ঠের হুংকারে সরকারের গদিকে জনগণ উল্টে দিতে প্রস্তুত বলেও সতর্ক করেন রিজভী। খালেদা জিয়ার অগ্রযাত্রায় বলপূর্বক বাধা দিয়ে কোন লাভ হবে না। তাকে কোনভাবেই টলানো যাবে না। অদৃশ্য গণতন্ত্রের পুনরুজ্জীবন করতে তিনি ধ্রুবতারার মতো স্থির অবিচল লক্ষ্যে সব বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাবেন উল্লেখ করেন রিজভী। সংবাদ সম্মেলনে রিজভীর সঙ্গে ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম, শাহাজাদা মিয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, অধ্যাপক সিরাজউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক মীর ফাওয়াজ হোসেন শুভসহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, রফিকুল ইসলাম, জাহানারা বেগম, ডাঃ সাইফউদ্দিন নিছার আহমেদ, ডাঃ মোফাখারুল ইসলাম রানা, ডাঃ জাহেদুল কবির, ডাঃ মোঃ জাফর ইকবাল, ডাঃ ওয়াসি খান জনি, ডাঃ মো. হুমায়ুন কবির প্রিন্স প্রমুখ।
×