ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ড. ফোরকান উদ্দিন আহমদ

অভিমত ॥ সর্বস্তরে বাংলা ভাষার সুপ্রতিষ্ঠা জরুরী

প্রকাশিত: ০৩:৪৪, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

অভিমত ॥ সর্বস্তরে বাংলা ভাষার সুপ্রতিষ্ঠা জরুরী

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির আত্মোৎসর্গের চেতনা ধারণ করে বাংলাদেশের মানুষ অবিরাম সংগ্রাম করে চলেছে বাংলা ভাষাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার এক মহান ব্রতে। এই ভাষার দাবি কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল স্বাধিকারের আন্দোলন। এরই প্রেক্ষাপটে পরিচালিত হয় সশস্ত্র সংগ্রাম; অর্জিত হয় আমাদের মহান স্বাধীনতা। বাংলা ভাষাকে বিশ্বপরিম-লে প্রতিষ্ঠা করার সংগ্রাম কখনও থেমে ছিল না। অবশেষে ১৯৯৯ সালের নবেম্বর মাসে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো কানাডা প্রবাসী বাঙালী দুই যুবকের আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে একুশের চেতনা ধারণ করে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে একুশে ফেব্রুয়ারিকে স্বীকৃতি প্রদান করে। এরপর ২০০০ সালে ১৬ মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে, মাতৃভাষাকে যথাযথ মর্যাদাসহকারে বিশ্বের প্রতিটি দেশ উদযাপন করবে। উল্লেখ করা হয়- বিশ্বব্যাপী সব মানুষের ভাষার সুরক্ষা এবং উপস্থাপনার সুযোগ সৃষ্টি করাই হবে এর লক্ষ্য। ভাষাপ্রেমিক বাঙালী জাতির এ এক বিশাল অর্জন। বহুমাত্রিক ভাষার মাধ্যমে শিক্ষা ও সংস্কৃতির চর্চা এবং প্রশাসনিক পদ্ধতির চলন করার এই আবেদন কতটা প্রয়োগ হবে, এই নিয়ে সর্বত্র চলছে চিন্তা-ভাবনা। তবে বিলুপ্তির পথে অগ্রসর হওয়া ভাষাসমূহকে রক্ষা করতেই হবে। বিশ্বে বর্তমানে প্রায় ৭ হাজার ভাষা আছে। অনেক ভাষার কোন লিপিমালা নেই। তারা হারিয়ে যাচ্ছ কালের গহ্বরে। কারণ, তাদের বংশধররা বৃহৎ ভাষাভাষী এবং উন্নত লিপিমালায় সমৃদ্ধ ভাষাকে তাদের আপন করে নিয়েছে। হারিয়ে যাওয়ার পথে চলমান ভাষাকে রক্ষা করতে প্রত্যেক দেশ ও জাতির প্রতি আবেদন জানিয়েছে ইউনেস্কো। কিন্তু এ হচ্ছে এক গতিশীল ও প্রবাহমান ভাবধারা, যেখানে দেশ ও জাতি এবং সমাজ ও সমষ্টির প্রভাব বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাই দেখা যায়, বাংলাদেশে প্রায় ৪৭টি ভাষা বিরাজমান থাকলেও কালের প্রভাবে আদিবাসীদের ভাষাকে বাংলা ভাষা প্রভাবিত করে চলেছে। বাংলাদেশের আদিবাসী জনগোষ্ঠী তাদের ভাষার সুরক্ষার জন্য পৃথক ‘ভাষা একাডেমি’ প্রতিষ্ঠার দাবি তুলেছে। কিন্তু বাংলা ভাষার প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা তাদের কম। কারণ বিশ্বব্যাপী বাংলার প্রভাব বাড়ছে। প্রায় ৩৫ কোটি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে। বাংলা বিশে^র ২২ কোটি মানুষের মাতৃভাষা, বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা এবং সরকারী ভাষা। এক কালের ‘ভাবের ভাষা’ একালের কাজের ভাষাও বটে। বাংলাদেশের সরকারী অফিস-আদালত, বেসরকারী অফিস, জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার কেন্দ্রসমূহ, সব পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং জাতীয় ও সমাজ জীবনের বিভিন্ন স্তরে বাংলা ভাষা বহুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। পেশাজীবী, বুদ্ধিজীবী, মননজীবী সকলে তাদের ধ্যান-ধারণায়, চিন্তা-চেতনায় ও কর্মজীবনে নানাভাবে বাংলা ভাষা ব্যবহার করছেন। এটা অত্যন্ত আনন্দ, সুখ এবং গর্বের বিষয়। কেননা ভাষা স্থবির নয়, বরং জঙ্গম। তা প্রবহমান নদীর মতো দু’কূল ছাপিয়ে চলে উত্তম গতিতে। পথে নানা স্থান হতে সংগৃহীত হয় নানা উপকরণ, যা ভাষাকে সতত সমৃদ্ধ করে চলে। তাই ভাষার বহুমাত্রিক ও কলেবর ক্রমাগত বেড়েই চলে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর, কালের পর কাল। যুগ যুগ ধরে ভাষা সমৃদ্ধশালী হয়। পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত হয় নতুন আঙ্গিকে এবং অবয়বে। আমরা অনেকেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ি। কখনও মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে, স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে, শেখ মুজিবের অবদান নিয়ে; এহেন কোন বিষয় নেই যা নিয়ে আমরা বিতর্ক করি না। আমরা একুশে ফেব্রুয়ারি পালন করি উল্লাসে, একে অভিহিত করি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হওয়ার ইতিহাসের কথা আমাদের অনেকেরই জানা। তা সত্ত্বেও অনেকটাই পুনরাবৃত্তি করে বা চর্বিতচর্বন করে আমাদের মজ্জায়-অস্থিতে তাকে স্থায়ী করার অভিপ্রায় নিয়ে কিংবা নতুন প্রজন্মে এই ইতিহাসের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টির জন্য আমার এ প্রয়াস। একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জনগণের গৌরবোজ্জ্বল একটি দিন। এটি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবেও সুপরিচিত। এটি বাঙালী জনগণের ভাষা আন্দোলনের মর্মন্তুদ ও গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত একটি দিন। ১৯৫২ সালের এই দিনে (৮ ফাল্গুন, ১৩৫৯) বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে কয়েক তরুণ শহীদ হন। তাই, এ দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। ১৯৯৯ সালের ১৭ নবেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে দিবসটি জাতিসংঘের সদস্যদেশসমূহে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে। বঙ্গীয় সমাজে বাংলা ভাষার অবস্থান নিয়ে বাঙালী মুসলমানের আত্ম-অন্বেষায় যে ভাষা-চেতনার উন্মেষ ঘটে, তারই সূত্র ধরে বিভাগোত্তর পূর্ববঙ্গের রাজধানী ঢাকায় ১৯৪৭ সালের নবেম্বর-ডিসেম্বরে ভাষা-বিক্ষোভ শুরু হয়। ১৯৪৮ সালের মার্চে এ নিয়ে সীমিত পর্যায়ে আন্দোলন হয় এবং ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি তার চরম প্রকাশ ঘটে। ওইদিন সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ১৪৪ ধারা অমান্য করে রাজপথে বেরিয়ে এলে পুলিশ তাদের ওপর গুলি চালায়। এতে আবুল বরকত, আবদুল জব্বার ও আবদুস সালামসহ কয়েক ছাত্রযুবা নিহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ ঢাকাবাসী ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে সমবেত হয়। নানা নির্যাতন সত্ত্বেও ছাত্রদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ জানাতে পরের দিন ২২ ফেব্রুয়ারি পুনরায় রাজপথে নেমে আসে। তারা মেডিক্যাল কলেজ প্রাঙ্গণে শহীদদের জন্য অনুষ্ঠিত গায়েবানা জানাজায় অংশগ্রহণ করে। ভাষা শহীদদের স্মৃতিকে অমর করে রাখার জন্য ২৩ ফেব্রুয়ারি এক রাতের মধ্যে মেডিক্যাল কলেজ প্রাঙ্গণে গড়ে ওঠে একটি স্মৃতিস্তম্ভ, যা তৎকালীন সরকার ২৬ ফেব্রুয়ারি গুঁড়িয়ে দেয়। একুশে ফেব্রুয়ারির এই ঘটনার মধ্য দিয়ে ভাষা আন্দোলন আরও বেগবান হয়। ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট জয় লাভ করলে ৯ মে অনুষ্ঠিত গণপরিষদের অধিবেশনে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। তখন থেকে প্রতি বছর এ দিনটি জাতীয় ‘শোক দিবস’ হিসেবে উদযাপিত হয়ে আসছে। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনায় ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা এক মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি এবং পর্যায়ক্রমে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষকবৃন্দ, ঢাকার বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন এবং সর্বস্তরের জনগণ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। এ সময়ে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গানের করুণ সুর বাজতে থাকে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর একুশে ফেব্রুয়ারি সরকারি ছুটির দিন হিসেবে ঘোষিত হয়। এদিন শহীদ দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে রেডিও, টেলিভিশন এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। দেশের সংবাদপত্রগুলোও বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি যে চেতনায় উদ্দীপিত হয়ে বাঙালীরা রক্ত দিয়ে মাতৃভাষাকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছিল, আজ তা দেশের গ-ি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি লাভ করেছে। আমাদের ভাষা আন্দোলনের বিরোধিতাকারী পাকিস্তানসহ জাতিসংঘের সব দেশ ওই প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে। এরপর থেকে সারা বিশ্বে প্রতি বছর পালিত হয়ে আসছে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা’ দিবস। ১৯৪৮ সালে যখন কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ‘কেবল উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’ বলে ঘোষণা দেন, তখন থেকেই রাষ্ট্রভাষা বাংলার আন্দোলন ছাত্রসমাজ ও বুদ্ধিজীবী মহলে শুরু হয়ে যায়। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৫২ সালে আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে এবং ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার রাজপথ ছাত্র-জনতার রক্তে রঞ্জিত হয়। মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এ আত্মদান আজ এক গৌরবের ইতিহাস হয়ে আছে। আমাদের শহীদ দিবস আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ২১ ফেব্রুয়ারির এই বিশ্বস্বীকৃতি আমাদের দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে, বিশ্বের সব বাঙালীকে গর্বিত করেছে। এর প্রধান তাৎপর্য হচ্ছে, সব দেশে সবার মাতৃভাষার অধিকার, চর্চা, প্রসার ও বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষার নিশ্চয়তা বিধান করা। পৃথিবীতে সাত হাজারেরও বেশি ভাষা আছে বলে মনে করা হয়। একটি সমীক্ষায় আশঙ্কা ব্যক্ত করা হয়েছে যে, ২০৫০ সালের মধ্যে ৯০ শতাংশ ভাষা বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে, কারণ এই ৯০ শতাংশ ভাষায় বর্তমানে এক লাখেরও কম মানুষ কথা বলে। সুতরাং, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এসব ভাষা যেন বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পায়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে সচেতন করবে। আজ আমরা সমাজের যে যেখানে অবস্থান করছি, বিশ্বে আমাদের যা কিছু পরিচিতি ও সম্মান, তা সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলেই। এ বিষয়ে কারও মনে কোন সন্দেহ থাকা উচিত নয়। দুর্ভাগ্য আমাদের, স্বাধীনতার জন্য এত মূল্য দেয়ার পরও আমাদের দেশের একটা অংশ পাকিস্তানী ভাবধারা লালন করছে, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদকে সরাসরি সমর্থন করছে। দেশকে তারা আবার অন্ধকার যুগে নেয়ার আয়োজনে লিপ্ত। বিরুদ্ধ পরিবেশের মধ্যেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, অর্থনৈতিক ও অন্যান্য ক্ষেত্রে অগ্রগতি হচ্ছে। এটা সম্ভব হচ্ছে দেশপ্রেমিক সাধারণ মানুষের জন্য, যাদের হৃদয়ে ফেব্রুয়ারি ও একাত্তরের চেতনা চিরজাগ্রত। মানুষ নির্যাতিত হলে শোক দিবস থেকেই নতুন ক্রোধ, নতুন প্রতিরোধ গড়ে উঠতে পারে। স্বাধীনতার পরেও বরাবর গণআন্দোলন হয়েছে। স্বৈরাচারের পতন হয়েছে এবং স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রামে জনতার বিজয়ও এসেছে। কাজেই শহীদ দিবসের শোকে শোকাভিভূত না হয়ে বরং উদ্যম আর শক্তির প্রেরণায় যে কোন বাঁধাকে মোকাবেলা করতে বাঙালী কখনই পিছপা হয়নি। বাংলাদেশও পাকিস্তানী শাসনের অবসান এবং বাংলা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের ভূমিকার অনেকটা অবসান হয়েছে। এখন একুশের ভূমিকা হতে হবে গঠনমূলক। এটি মূলত স্মরণ দিবস। ভাষা শহীদের স্মরণের মধ্য দিয়ে জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে বাংলা ভাষাকে সুপ্রতিষ্ঠার সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণে সরকারী ও বেসরকারীসহ বিভিন্ন মহলের প্রচেষ্টা এক করাই দিবসটি পালনের বৈশিষ্ট্য হওয়া উচিত। লেখক : গবেষক
×