ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্নীতি কমছে

প্রকাশিত: ০৩:৪৫, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

দুর্নীতি কমছে

বিশ্বব্যাপী দুর্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশের দুই ধাপ অগ্রগতির সংবাদ মিলেছে। শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৫ থেকে হয়েছে ১৭তম। বৃহস্পতিবার একযোগে বিশ্বের ১৮০টি দেশের দুর্নীতির ধারণা সূচক প্রকাশ করে বার্লিনভিত্তিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই)। এতে দেখানো হয় ২০১৭ অনুযায়ী ২০১৬ সালের তুলনায় বাংলাদেশের স্কোর ও অবস্থান দুই ধাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। টিআইবি শেষ পর্যন্ত স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে যে, দেশে দুর্নীতি কমেছে। যদিও সংস্থাটি এখনও পরোক্ষভাবে বাংলাদেশের প্রকৃত চিত্র সম্পর্কে কিছুটা নেতিবাচক বার্তা দিয়ে আসছে। এক রহস্যময় কারণে দেশের বড় অর্জন তাদের চোখে যথাযথভাবে ধরা পড়ে না। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া যখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন দেশ বারবার বিশ্বে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। খালেদা জিয়া ও তাঁর বড় ছেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বহু অভিযোগ উঠেছে। শেষ পর্যন্ত দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সুনির্দিষ্টভাবে তাঁদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে যেটির রায় পেতে প্রায় এক দশক লেগে গেল। রায়ও হয়েছে এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী জেলে গেছেন। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক প্রসঙ্গত মন্তব্য করেছেন, খালেদা জিয়ার বিচার দুর্নীতির বিরুদ্ধে বড় বার্তা। বাংলাদেশের আইনী, প্রাতিষ্ঠানিক ও নীতি কাঠামো তুলনামূলকভাবে সুদৃঢ়তর হয়েছে এই ধারণা থেকে সূচকে বাংলাদেশের স্কোর দুই বৃদ্ধি পেয়েছে। দুর্নীতি থাকলে উন্নয়ন যে ব্যাহত হয় এবং দেশের সত্যিকার উন্নয়ন হয় না সে কথা বলাই বাহুল্য। আমরা আগেও বলেছি গণতন্ত্র ও উন্নয়ন একে অপরের সঙ্গে যুক্ত। গণতন্ত্র বহাল থাকলে উন্নয়ন হয় দেশের, পক্ষান্তরে গণতন্ত্রবিরোধীরা ব্যাহত করে উন্নয়ন। তবে গণতন্ত্রকে আহত করে গণতন্ত্রবিরোধীরা নিজেদের আখের গোছানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়। যদিও তাতে শেষ রক্ষা হয় না, তারা নিক্ষিপ্ত হয় ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে। এই গণতন্ত্রবিরাধীরা হতে পারে সামরিক স্বৈরশাসক, কিংবা ছদ্মবেশী গণতন্ত্রী। বাংলাদেশ তাদের প্রথম প্রত্যক্ষ করে স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যাকা-ের পর। এখনও সেই অপশক্তি সক্রিয় বলেই গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয়, উন্নয়নে সাময়িক স্থবিরতা নেমে আসে, বাইরের অপবাদ জোটে। কিছুকাল আগে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমালোচকদের উদ্দেশ করে বলেছেন, গণতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা আছে বলেই দেশের এত উন্নয়ন হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বরাবরই দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সোচ্চারকণ্ঠ। সম্প্রতি রোমে এক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি স্পষ্টভাবে আবারও দুর্নীতিবাজ এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিচার চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বার্থে দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের সঙ্গে জড়িতদের বিচার হতেই হবে। যারা দুর্নীতি, সন্ত্রাস করবে এবং জঙ্গীবাদে জড়াবে তাদের অবশ্যই বিচার করতে হবে। দেশের শান্তি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এটা প্রয়োজন। আর আমরা দেশে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই। আমরা দেশকে উন্নত এবং জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে চাই। আর এটা তখনই সম্ভব হবে যখন আমরা দুর্নীতি, জঙ্গীবাদ ও স্বজনপ্রীতি নিয়ন্ত্রণ এবং অপসারণ করতে পারব। বর্তমান সরকার সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি কমিয়ে আনতে সমর্থ হয়েছে। এর ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলে মানুষ আশা করতে পারে। তাহলে বড় দুর্নাম ঘুচিয়ে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলতর হবে।
×