ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শীতকালীন সবজির দাম আরও কমলো

প্রকাশিত: ০২:১৪, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

শীতকালীন সবজির দাম আরও কমলো

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মৌসুম শেষেও সরবরাহ বেশি থাকায় আরেক দফা কমেছে শীতকালীন সবজির দাম। মোটা চালের দাম কিছুটা বাড়তির দিকে রয়েছে। তবে খাদ্যবান্ধব কর্মসুচীর আওতায় ১০ টাকা কেজি চাল বিক্রির কার্যক্রম শুরু হচ্ছে মার্চ মাসে। এর ফলে বাজারে মোটা চালের যে সঙ্কট রয়েছে তা দূর হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। জাত ও মানভেদে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫৫ টাকায়। কমেছে আলুর দাম। এছাড়া ভোজ্যতেল, চিনি, আটা ও ডলের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। হালিতে ১ টাকা কমেছে ডিমের দাম। ব্রয়লার মুরগি ও মাছের সরবরাহ বেড়েছে। শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার, কাপ্তান বাজার, ফার্মগেট কাঁচা বাজার ও মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেট ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে, মৌসুম শেষে হলেও রাজধানীর বাজারগুলোতে শীতকালীন সবজি বিশেষ করে টমেটো, ফুলকপি, বাধাকপি ও শিমসহ সব ধরনের সবজির সরবরাহ বেড়েছে। প্রতিকেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকায়, যা বছরের অন্য সময় ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মৌসুম শেষে সাধারণত এ সময়টাতে সবজির সরবরাহ বেড়ে যায়। আর এ কারণেই দাম কমছে। এখন গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তাই শীতকালীন সবজি বেশি পরিমাণে ক্ষেত থেকে তুলে আনা হচ্ছে। তবে দাম কমায় খুশি ভোক্তারা। ফার্মগেট কাঁচা বাজারে সবজি কিনছিলেন মনিপুরি পাড়ার বাসিন্দা নেয়ামত হোসেন। তিনি জানালেন, এখন প্রতিকেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকায়। এত সস্তায় টমেটো পাওয়া যাচ্ছে ভাবতেই ভাল লাগছে। গ্রীষ্মকালীন করলা, উস্তে, বরবটি ও চিচিঙ্গার মতো সবজির দাম বাড়ায় অস্বস্তি রয়েছে ভোক্তাদের। সবজির পাশাপাশি বাজারে মাছের সরবরাহ বেড়েছে। তবে তুলনামূলক কোন কোন মাছের দাম বেড়েছে। এছাড়া প্রতিকেজি গোল আলু বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকায়। মাছ ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্য মতে, প্রতিকেজি রুই মাছ ২৩০-২৮০, কাতল ২২০-২৫০ টাকা, পাঙ্গাশ ১২০ থেকে ১৫০, সিলভারকার্প ১৫০, তেলাপিয়া ১৮০, শিং ও মাগুর মাছ বিক্রি হয়েছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা দরে। বিক্রেতারা জানান, বাজারে দেশী মাছের চাহিদা বেশি, তাই এর দামও একটু বেশি। প্রতিকেজি টেংরা বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, বাটা মাছ কেজিপ্রতি ৩২০ থেকে ৪০০ টাকা। বাজারে ইলিশ মাছের সরবরাহ বেড়েছে। দামও তুলনামূলক কিছুটা কম। প্রতিকেজি ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৭০০ টাকা পর্যন্ত। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২৫-১৩৫ টাকা কেজিতে। এছাড়া গরুর মাংস ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা, খাসি ৭০০-৭৫০ ও দেশি মুরগি ২৫০-৩০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। চালের দাম কমছে না ॥ চালের দাম না কমে বরং কিছুটা বাড়তির দিকে রয়েছে। প্রতিকেজি স্বর্ণা ও চায়না ইরির মতো মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৪-৪৭ টাকা। মিনিকেট ও নাজির শাইলের মতো চিকন চাল ৬২-৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে আগামী মার্চ থেকে সারাদেশে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী চালু হলে মোটা চালের উপর থেকে চাপ কমবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। যদিও গত বছরের মাঝামাঝি থেকেই অস্থির দেশীয় চালের বাজার। কখনও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসল নষ্ট হওয়ায়, কখনও আমদানি সমস্যার কারণে চালের দাম বেড়েছে দফায় দফায়। কয়েক মাস ধরে দাম না কমে বরং অপরিবর্তত রয়েছে। ইতোমধ্যে সরকারী ও বেসরকারীখাতে বিপুল পরিমাণ চাল আমদানি হয়েছে। এসব চাল বাজারে আসা শুরু হলে দাম কমবে বলে আশা করা হচ্ছে। চালের খুচরা বিক্রেতারা জানান, আমন মৌসুম শেষে চাল বাজারে চলে এসেছে অনেক আগে। এখন বোরো মৌসুম আসার অপেক্ষা এবং আমন শেষ হওয়ার মাঝামাঝি সময় চলছে। এই সময়ে চালের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পায়। কাপ্তান বাজারের চালের খুচরা বিক্রেতা রব মিয়া জনকণ্ঠকে বলেন, বাজারে চালের যোগান কিছুটা কম। এ কারণে মোটা চালের দাম কিছুটা বাড়তির দিকে রয়েছে। তবে চালের বাজারে কোন সঙ্কট নেই।
×