ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সাজানো মামলায় খালেদাকে বন্দী করা হয়েছে ॥ রিজভী

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

সাজানো মামলায় খালেদাকে বন্দী করা হয়েছে ॥ রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকার যত অপকৌশলই করুক বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার বিকেলে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। রিজভী বলেন, খালেদা জিয়াবিহীন নির্বাচন দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা পাবে না এবং দেশের জনগণ তা মেনেও নেবে না। সরকার যে নীল নক্সা এঁটে খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক মামলায় কারাবন্দী করেছে এতে তাঁকে নির্বাচন থেকে মাইনাস করার উদ্দেশ্যই ফুটে ওঠেছে। এটা জনগণের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে। রিজভী বলেন, মামলা দিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন তথা জাতীয়তাবাদী শক্তিকে রুদ্ধ করা যাবে না। ইতোমধ্যে খালেদা জিয়াকে বন্দী করার পর দেশবাসী যেভাবে জেগে উঠেছে তাতে সকল বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে অসংখ্য মানুষ রাজপথে নেমে গেছে। সারা দেশব্যাপী নিন্দার ঝড় বইছে। এতেই সরকারের ভীত নড়বড়ে হয়ে উঠেছে। তাই সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে মন্ত্রীরা যতই আবোল-তাবোল বকুক না কেন খালেদা জিয়াবিহীন নির্বাচনের নীলনক্সা প্রতিরোধ করতে জনগণ এখন বদ্ধপরিকর। বিএনপির মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হবে ভেবেই মামলা দিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সাজা প্রদান করা হয়েছে। সাজানো মামলায় বন্দী করা হয়েছে খালেদা জিয়াকে। রিজভী বলেন, গণতন্ত্রশূন্যতার কারণেই দেশে ক্ষমতার ভারসাম্য বলে কিছু নেই। একজনের ক্ষমতাই সর্বব্যাপী। আইন, বিচার, আদালত সর্বত্রই শেখ হাসিনার আওতাভুক্ত। আওয়ামী সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে দমন করার জন্যই অকাতরে মামলার মধ্যে জড়িয়ে এখন সাজা দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, যারা বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করে জোর করে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকে তাদের অবলম্বন করতে হয় অনাচারের ওপর। এই অনাচারে চলছে জবরদখল, খুনের ভয়, রক্তপাত, চাঁদা আদায়ের দাপট ও বেঘোরে জীবনহানির নিরাপত্তাহীনতার মাধ্যমে নাগরিকদের প্রাণ ওষ্ঠাগত করা। অনাচারের একটি কুৎসিত দিক হচ্ছে প্রশ্নপত্র ফাঁসের মধ্য দিয়ে দেশকে আদিম কালের ঘন অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেয়া। পরীক্ষার দুই ঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য এবং ‘শিক্ষামন্ত্রীর সহনীয় মাত্রায় দুর্নীতি করার পরামর্শ’ যেন আওয়ামী লীগের সরকার পরিচালনার ইশতেহার। মন্ত্রী ও সচিবকে বাঁচাতে নকলের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী অবস্থান নিয়েছেন। যেমন ‘শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রশ্রয় দিতে সহনীয় মাত্রায় দুর্নীতির কথা বলা হয়েছে’। এটি জাতির ভবিষ্যতের জন্য এক অশুভ বার্তাবহ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেট আরও বেশি উৎসাহিত হয়ে উঠেছে। গত কয়েক দিনে জীব বিজ্ঞানসহ কয়েকটি সাবজেক্টেও প্রশ্নফাঁস হওয়ার ঘটনা সেটিই প্রমাণ করে। রিজভী বলেন, সংঘাতপ্রবণ রাজনীতি সৃষ্টি করে দেশকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিতে চায় বর্তমান সরকার। সে কারণেই অন্যায়ভাবে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে সাজা দিয়ে বন্দী করে একটা হীন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নানা কারসাজি করতে একের পর নাটকীয়তা করে যাচ্ছে সরকার। তবে তাদের কোন কারসাজিই ধোপে টিকবে না। ষড়যন্ত্রের রাজনীতিকে পদাঘাত করে জনগণ খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবেই। ব্যাপক গণঅভুত্থানের একটা জোরালো হাওয়া দেশে বইতে শুরু করেছে। এই হাওয়াতেই ক্ষমতাসীনদের সিংহাসন ভুতলে শায়িত হবে। ছাত্রদল নেতার গ্রেফতারে বিএনপি মহাসচিবের নিন্দা ॥ বুধবার ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়াকে গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানিয়ে এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, সারাদেশে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের ধারাবাহিকতায় ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মেজবাহউদ্দিন ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আমি অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তি দাবি করছি। মির্জা ফখরুল বলেন, চলমান ভয়াবহ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ প্রতিবাদী তরুণ নেতৃত্বকে ধ্বংস করতেই সরকার নিরবচ্ছিন্নভাবে ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাদেরও গ্রেফতার করছে, আর তারই শিকার হলো ছাত্রদল নেতা মেজবাহউদ্দিন ভূঁইয়া। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি মেজবাহউদ্দিন ভূঁইয়াকে গ্রেফতারের ঘটনায় সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা আরও বলীয়ান হয়ে বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আরও প্রতিবাদী হয়ে উঠবে।
×