ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পাবনা সুগার মিলকে রাক্ষা করতে মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা ফুসে উঠেছে

প্রকাশিত: ০২:১৭, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

পাবনা সুগার মিলকে রাক্ষা করতে মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা ফুসে উঠেছে

স্টাফ রিপোর্টার, ঈশ্বরদী ॥ উত্তরাঞ্চলের রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান পাবনা সুগার মিল সংলগ্ন ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি মিল কর্তৃপক্ষ কিনে নতুন প্রকল্প করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এমন সময় একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নিকট মালিকরা ঐ জমি বিক্রি করে দিয়েছে। এমতাবস্থায় অলাভজনক এ মিলে বহুমুখী উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্য বাধাগ্রস্থ হয়ে পড়ায় পাবনা সুগার মিলের কর্মকর্তা-শ্রমিক-কর্মচারীরা ফুসে উঠেছে। মিল সংলগ্ন জমি অন্য শিল্প প্রতিষ্ঠানের অধীনে চলে যাওয়ায় সুগার মিল কর্তৃপক্ষ এবং আখচাষীরা মিলের অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ার আশংকায় নানা কর্মসুচি গ্রহণ করছে। সোমবার মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা সুগার মিল গেটের সামনে মহাসড়কে মানব-বন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল, অবস্থান ঘর্মঘট ও নানা কর্মসূচি পালন করে। পাবনা সুগার মিলের ওয়াকার্স ইউনিয়নের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন বলেন, বর্তমানে এই মিলে মোট ৬০ একর জমি রয়েছে। যার মধ্যে ১৫ একর লেগুন ও রাস্তা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়া অবশিষ্ট ৪৫ একর জমিতে আবাসিক স্থাপনাসহ অন্যান্য স্থাপনা রয়েছে। মিলকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার লক্ষে অলাভজনক এ মিলে দীর্ঘদিন থেকে বহুমুখী উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। এ অবস্থায় পাবনা সুগার মিলের আরও জমির প্রয়োজন রয়েছে। পাবনা সুগার মিলের ওয়াকার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, মিলের সীমানা প্রাচির থেকে পূর্বাংশে আখের জমি নষ্ট করে কৃষি জমিতে ইতোমধ্যে নিটল-টাটা গ্রুপ স্থাপনা তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ফলশ্রুতিতে পাবনা চিনিকল লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রুপান্তরে বিরুপ প্রভাব পড়বে। পাবনা সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বলেন, পাবনা সুগার মিলে প্রতিদিন ১৫’শ মেট্রিকটন আখ মাড়াই করে বার্ষিক ১৫ হাজার মেট্রিকটন চিনি উৎপাদন করার ক্ষমতা রয়েছে। মিলটির কোন পরীক্ষামূলক খামার না থাকায় আখের উন্নত জাতের বীজ উৎপাদন ও চাষীদের মাঝে সরবরাহ করতে না পারায় চাষীরা আখচাষে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছেন। ফলে চাষীরা মিলটিতে চাহিদা অনুযায়ি আখ সরবরাহ করতে পারছেন না। এছাড়া মিলটিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার লক্ষ্যে বহুমুখী উৎপাদনের ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি রয়েছে। পর্যাপ্ত জমি না থাকায় মিলের জুস প্লান্ট, মিনারেল ওয়াটার, কো-জেনারেশন প্লান্ট, রিফাইন্ড সুগার, বায়োগ্যাস ও বায়োফার্টিলাইজার প্লান্ট ইত্যাদি প্রকল্প স্থাপন করে উৎপাদন বহুমুখীকরণ সম্ভব হচ্ছেনা। মিলের সামনের জমি অধিগ্রহণের কথা ভাবনায় রয়েছে। এমতাবস্থায় টাটা গ্রুপ পাশের জমি ক্রয় করে আমাদের না জানিয়ে মিলের পাঁচফিট জায়গা দখল করে সেখানে সীমানা প্রাচির নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন। শিল্পমন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ আবুল কাশেম বৃহস্পতিবার টাটার নির্মাণাধিন ওয়ার্কসপ পরিদর্শনের সময় সীমানা প্রাচিরের কাজ বন্ধ রাখার কথা বলেছেন।
×