ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দুরে সরিয়ে রাখা যাবেনা ॥ রিজভী

প্রকাশিত: ০১:০৯, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দুরে সরিয়ে রাখা যাবেনা ॥ রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকার যত অপকৌশলই করুক বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দুরে সরিয়ে রাখা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার বিকেলে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। রিজভী বলেন, খালেদা জিয়াবিহীন নির্বাচন দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা পাবেনা এবং দেশের জনগণ তা মেনেও নেবে না। সরকার যে নীল নকশা এঁটে খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক মামলায় কারাবন্দী করেছে এতে তাঁকে নির্বাচন থেকে মাইনাস করার উদ্দেশ্যই ফুটে ওঠেছে। এটা জনগণের কাছে পরিস্কার হয়ে গেছে। রিজভী বলেন, মামলা দিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন তথা জাতীয়তাবাদী শক্তিকে রুদ্ধ করা যাবে না। ইতিমধ্যে খালেদা জিয়াকে বন্দী করার পর দেশবাসী যেভাবে জেগে উঠেছে তাতে সকল বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে অসংখ্য মানুষ রাজপথে নেমে গেছে। সারাদেশব্যাপী নিন্দার ঝড় বইছে। এতেই সরকারের ভীত নড়বড়ে হয়ে উঠেছে। তাই সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে মন্ত্রীরা যতোই আবোল-তাবোল বকুক না কেন খালেদা জিয়াবিহীন নির্বাচনের নীলনকশা প্রতিরোধ করতে জনগণ এখন বদ্ধপরিকর। বিএনপির মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হবে ভেবেই মামলা দিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সাজা প্রদান করা হয়েছে। সাজানো মামলায় বন্দি করা হয়েছে খালেদা জিয়াকে। রিজভী বলেন, গণতন্ত্রশুণ্যতার কারনেই দেশে ক্ষমতার ভারসাম্য বলে কিছু নেই। একজনের ক্ষমতাই সর্বব্যাপী। আইন, বিচার, আদালত সর্বত্রই শেখ হাসিনার আওতাভুক্ত। আওয়ামী সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে দমন করার জন্যই অকাতরে মামলার মধ্যে জড়িয়ে এখন সাজা দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, যারা বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করে জোর করে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকে তাদেরকে অবলম্বন করতে হয় অনাচারের ওপর। এই অনাচারে চলছে জবরদখল, খুনের ভয়, রক্তপাত, চাঁদা আদায়ের দাপট ও বেঘোরে জীবনহানির নিরাপত্তাহীনতার মাধ্যমে নাগরিকদের প্রাণ ওষ্ঠাগত করা। অনাচারের একটি কুৎসিত দিক হচ্ছে প্রশ্নপত্র ফাঁসের মধ্য দিয়ে দেশকে আদিম কালের ঘন অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেয়া। পরীক্ষার দুই ঘন্টা আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য এবং ‘শিক্ষামন্ত্রীর সহনীয় মাত্রায় দুর্নীতি করার পরামর্শ’ যেন আওয়ামী লীগের সরকার পরিচালনার ইশতেহার। মন্ত্রী ও সচিবকে বাঁচাতে নকলের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী অবস্থান নিয়েছেন। যেমন ‘শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রশ্রয় দিতে সহনীয় মাত্রায় দুর্নীতির কথা বলা হয়েছে’। এটি জাতির ভবিষ্যতের জন্য এক অশুভ বার্তাবহ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেট আরো বেশী উৎসাহিত হয়ে উঠেছে। গত কয়েক দিনে জীব বিজ্ঞানসহ কয়েকটি সাবজেক্টেও প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার ঘটনা সেটিই প্রমান করে। রিজভী বলেন, সংঘাতপ্রবণ রাজনীতি সৃষ্টি করে দেশকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিতে চায় বর্তমান সরকার। সে কারনেই অন্যায়ভাবে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে সাজা দিয়ে বন্দি করে একটা হীন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নানা কারসাজী করতে একের পর নাটকীয়তা করে যাচ্ছে সরকার। তবে তাদের কোন কারসাজীই ধোপে টিকবে না। ষড়যন্ত্রের রাজনীতিকে পদাঘাত করে জনগণ খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবেই। ব্যাপক গণঅভুত্থানের একটা জোরালো হাওয়া দেশে বইতে শুরু করেছে। এই হাওয়াতেই ক্ষমতাসীনদের সিংহাসন ভুতলে শায়িত হবে।
×