ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

মালদ্বীপে জরুরি অবস্থার সময় বৃদ্ধি ॥ ভারতের কড়া প্রতিক্রিয়া

প্রকাশিত: ১৯:৪৬, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

মালদ্বীপে জরুরি অবস্থার সময় বৃদ্ধি ॥ ভারতের কড়া প্রতিক্রিয়া

অনলাইন ডেস্ক ॥ জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ৩০ দিন বাড়াতে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিনের সিদ্ধান্তে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে নয়াদিল্লি। সংবিধান ‘লংঘন’করে যে উপায়ে ছোট এ দ্বীপরাষ্ট্রে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাতে ‘গভীরভাবে শঙ্কিত’ হওয়ার কথা জানিয়েছে বলে খবর এনডিটিভির। মালদ্বীপের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সংকট সমাধানে ভারতের একের পর এক আহ্বান উপেক্ষা করায় নয়াদিল্লি উদ্বিগ্ন বলেও জানিয়েছে তারা। চলতি মাসের শুরুতে মালদ্বীপে জরুরি অবস্থা জারি হলে ভারত এ পদক্ষেপ থেকে সরে আসতে দেশটির প্রতি ধারাবাহিক অনুরোধ জানিয়ে আসলেও ইয়ামিন তা উপেক্ষা করে গেছেন। জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা আসার কয়েক ঘণ্টা আগেও ৪০০ কিলোমিটার দূরের প্রতিবেশী দেশটির প্রতি নয়াদিল্লি একই অনুরোধ জানিয়েছিল বলে ভাষ্য এনডিটিভির। নয়াদিল্লির আশঙ্কা, জরুরি অবস্থার বিস্তৃতি রাজনৈতিক কার্যক্রম পুনর্বহালের প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করবে এবং বিচারবিভাগসহ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম পরিচালনায় বাধাও অব্যাহত রাখবে। ‘মালদ্বীপের সরকার জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ৩০ দিন বাড়ানোয় আমরা গভীরভাবে শঙ্কিত। সংবিধান লংঘন করে মজলিস (মালদ্বীপের পার্লামেন্ট) যে প্রক্রিয়ায় জরুরি অবস্থার মেয়াদ বৃদ্ধি অনুমোদন করেছে তাও উদ্বেগের,’ বিবৃতিতে বলেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। দ্বীপরাষ্ট্রটির সংবিধান অনুযায়ী, নাগরিকদের বাধ্য করা যায় এমন কোনো সিদ্ধান্ত পাস করা পার্লামেন্টের অর্ধেকের বেশি সদস্যের সমর্থনেই কেবল সম্ভব। কিন্তু বিরোধী দলের সাংসদরা পক্ষে না থাকায় সংবিধানের ওই বিধান মেনে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়াতে পারতেন না ইয়ামিন। সে কারণেই মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট কৌশলী অবস্থান নিয়ে বলেছেন, তার জরুরি অবস্থা আইন মেনে চলা নাগরিকদের ওপর নয়, কেবল তাদেরই ওপর ‘যাদের বিরুদ্ধে অবৈধ কার্যকলাপের অভিযোগ আছে’। মালদ্বীপের প্রসিকিউটর জেনারেল আইশাথ বিশাম জরুরি অবস্থার এ মেয়াদবৃদ্ধিকে ‘অসাংবিধানিক’ অ্যাখ্যা দিয়ে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানালেও এখন পর্যন্ত বাহিনীটি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি বলে খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের। ইয়ামিন এর আগে তার নির্দেশিত পথে না চলায় মালদ্বীপের পুলিশের দুই প্রধানকে বরখাস্তও করেছিলেন। নয় বিরোধী রাজনীতিকের কারাদণ্ডের রায় অবৈধ ঘোষণা করে মালদ্বীপের সু্প্রিম কোর্ট তাদের মুক্তির নির্দেশ দিলে দেশটিতে নতুন করে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়। ওই নয় রাজনীতিকসহ সরকারি দল থেকে বিরোধী দলে যাওয়া ১২ জন সাংসদের সদস্যপদও বহাল করার নির্দেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত। নির্দেশ বাস্তবায়ন না করে ৫ ফেব্রুয়ারি দেশে ১৫ দিনের জরুরি অবস্থা জারি করেন প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিন। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রধান বিচারপতিসহ দুই বিচারপতি এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট মামুন আব্দুল গাইয়ুম দুর্নীতির অভিযোগে আটক হন। পরে সুপ্রিম কোর্টের বাকি তিন বিচারক আগের আদেশ প্রত্যাহার করে বিরোধী রাজনীতিকদের কারাদণ্ড বহাল রাখেন।
×