ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশে নতুন প্রযুক্তি

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

বাংলাদেশে নতুন প্রযুক্তি

বিশ্বায়নের ফল তাৎক্ষণিক যোগাযোগ ব্যবস্থা পৃথিবীকে আমূল বদলে দিয়েছে। এখন আর দূর নেই; সব চলে এসেছে নিকটে। প্রতিটি দেশ তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করছে নানাভাবে। তাই একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে দৃঢ় মনোবল নিয়ে যদি কোন দেশ, জাতি, গোষ্ঠী, পরিবার ও ব্যক্তি কাজ করে তাহলে সাফল্য অবশ্যম্ভাবী। বাংলাদেশ সরকার এরকম বহু লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে এগিয়ে যাচ্ছে। সরকারের নির্বাচনী প্রচারণায় একটি প্রতিশ্রুতি ছিল ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া’। সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজে বেশ অগ্রসর ভূমিকা পালন করছে। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সরকার অনেকাংশেই সফল বলা যায়। ইতোমধ্যে থ্রি-জি ইন্টারনেট সেবা বাংলাদেশের জনগণ ভোগ করছে। ফলে মোবাইল, টেলিফোন ও ইন্টারনেট সেবা আরও দ্রুত ও মানসম্পন্ন হয়েছে। শহরের সঙ্গে গ্রামের একটি মেলবন্ধন স্থাপিত হয়েছে অল্প সময়ের মধ্যে। মুহূর্তেই দেশ তথা বিশ্বের খবরাখবর আগের চেয়ে আরও দ্রুততর ছড়িয়ে পড়ছে। বাংলাদেশের সামনে আরও একটি সুখের খবর। এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে চালু হতে যাচ্ছে ফোর-জি ইন্টারনেট প্রযুক্তি। এর ফলে সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। শেষ হবে থ্রি-জির যুগ; শুরু হবে ফোর-জি প্রজন্ম। ইন্টারনেট, মোবাইল, টেলিযোগযোগ ব্যবস্থায় থ্রি-জির চেয়ে ফোর-জি আরও শক্তিশালী এবং প্রজন্মের চাহিদা মোতাবেক। মোবাইল যোগাযোগ ব্যবস্থায় সকলে মোবাইল সেবারমান বৃদ্ধি পছন্দ করে। উইকিপিডিয়ার তথ্য মোতাবেক, প্রতি ১০ বছর পর পর নতুন মোবাইল প্রজন্মের আবির্ভাব হয়। ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম এনালগ (ওয়ান-জি) এবং ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে ডিজিটাল (টু-জি) ব্যবস্থা চালু হয়। পরবর্তীতে ২০০১ থ্রি-জি এবং ২০১১/২০১২ খ্রিস্টাব্দের দিকে সমগ্র বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে ফোর-জি ইন্টারনেট সেবা চালু হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও ফোর-জি ইন্টারনেট ব্যবস্থা চালু করা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ফোর-জি ইন্টারনেট প্রযুক্তি চালু হলে বাংলাদেশ বিভিন্নভাবে লাভবান হবে বলে বিশেষজ্ঞ মহল চিন্তা করছে। এক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী এবং তাৎক্ষণিক উভয় সুবিধা ভোগ করা যাবে। ফোর-জি সেবার ফলে ইন্টারনেটের গতি উচ্চ এবং গুণগতমানসম্পন্ন হবে। জনগণের জীবনমানের ইতিবাচক পরিবর্তনসহ বাংলাদেশ ডিজিটাল বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পরিবারিক এবং ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে কল্যাণ উপকার বয়ে নিয়ে আসবে। অন্যদিকে তাৎক্ষণিকভাবে ফোর-জি ইন্টারনেট সেবার ফলে ডাউনলোডে উন্নয়ন, দ্রুতগতিসম্পন্ন ব্রাউজিং ব্যবস্থা, সেরা এবং মানসম্পন্ন নেটওয়ার্ক ব্যবস্থার প্রচলন হবে। এর ফলে মোবাইল ব্যবহারকারীদের নানামুখী সমস্যার সমাধান দ্রুত সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়। আবার অন্যদিকে এই ফোর-জি ইন্টারনেট সেবার গ্রাহক হওয়ার যোগ্যতা সবার থাকবে কিনা- সেটা একটা প্রশ্ন। ফোর-জি ইন্টারনেট সেবা যদি শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে তাহলে গ্রামের জনগণ ফোর-জির সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। যেহেতু ফোর-জি সেবা গ্রহণ করার জন্য উপযোগী মোবাইল এবং সিম ক্রয় করতে হবে; তাই তা ক্রয় করার সাধ্য সকল শ্রেণীর জনগণের থাকবে কিনা! তবু বিশ্বাস ও আশা করি- বাংলাদেশের মানুষ মোবাইল চালু হওয়ার পর থেকে যেভাবে সাড়া দিয়েছে এবং উন্নয়নে অংশগ্রহণ করেছে; এক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় ঘটবে না। অবশ্যই মোবাইল কোম্পানিগুলোকে ফোর-জি ইন্টারনেট সেবা যাতে সকলে লাভ করতে পারে তার জন্য তা ক্রয় করার ক্ষমতা সকলের সাধ্যের মধ্যে রাখতে হবে। এখন শুধু অপেক্ষার পালা; ফোর-জি বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে ইতিবাচক সুফল বয়ে আনুক। বনানী, ঢাকা থেকে
×