ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

পেশাজীবী পরিষদের মানববন্ধনে ফখরুল

গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বন্দী খালেদাকে মুক্ত করা হবে

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বন্দী খালেদাকে মুক্ত করা হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে সরকার চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, কারাগারে বন্দী খালেদা জিয়াকে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুক্ত করা হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির গঠনতন্ত্র নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। তিনি আওয়ামী লীগকে এ নিয়ে কথা না বলে নিজেদের চরকায় তেল দেয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আমাদের গঠনতন্ত্র অনুসারে আমরা কাকে চেয়ারপারর্সন করলাম, কী করলাম না; তা নিয়ে আপনাদের এত ভাবনা কেন। আমাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তারেক রহমান দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন হয়েছেন। গঠনতন্ত্রে এই বিষয়টি আছে যে, চেয়ারপার্সনের অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালন করবেন। ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, বিএনপির গঠনতন্ত্র নিয়ে না ভেবে নিজেদের পার্টির অবস্থা দেখুন। ক্ষমতায় না থাকলে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবেন সেটি চিন্তা করুন। সরকার একদলীয় শাসনের দিকে যাচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, স্পষ্ট করে বলতে চাই, এদেশের মানুষ দীর্ঘকাল ধরে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছে। এতো সহজ মনে করবেন না যে পার পেয়ে যাবেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে খেলা করতে পারবেন না। আমাদের মুখ বন্ধ করতে পারবেন, কিন্তু ষোল কোটি মানুষের মুখ বন্ধ করতে পারবেন না। বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার পূর্ব পরিকল্পিতভাবে নীলনকশা চরিতার্থ করার জন্য আদালতের ওপর ভর করে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে কারাগারে নিয়েছে। পুরো দেশই এখন কারাগারে। থানা থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে অসংখ্য গণতন্ত্রকামী মানুষকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। শুধু সোমবারই হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়েছে প্রায় ৭০০ জন। সরকার নিন্ম আদালতকে নিয়ন্ত্রণ করছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যে রায়ের কপি পাঁচ দিনে পাওয়ার কথা সেটি ১২ দিনে পাওয়া গেল। আর খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে শাসকদলের নেতাকর্মীরা ও পুলিশ হামলা চালাচ্ছে। এ অবস্থার অবসানে এবং গণতন্ত্রের জন্য দলমত নির্বিশেষে সবাইকে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করার আহ্বান জানান তিনি। মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারকে অহংকার আর দাম্ভিকতা পরিহার করে দেশরক্ষায় রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানে আলোচনায় বসার আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও বলছি। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার চক্রান্ত হচ্ছে। আমরা যদি বিএনপির বিরুদ্ধে চক্রান্ত প্রতিরোধ করতে না পারি তাহলে আমাদের দেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে দেশে গণতন্ত্র ও অর্থনীতিকে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। তাই আর কালবিলম্ব না করে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এখন সময় জেগে উঠার, এখন সময় প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার। পরে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
×