ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মাত্র ৫ লাখ জরিমানা নয় অ্যাপোলোর জন্য ॥ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিন

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

মাত্র ৫ লাখ জরিমানা নয় অ্যাপোলোর জন্য ॥ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিন

অনলাইন ডেস্ক ॥ রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট ও অননুমোদিত বিদেশি ওষুধ উদ্ধারের ঘটনায় মাত্র পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অ্যাপোলোর জন্য অর্থহীন উল্লেখ করে জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে কঠোরতর আইনের প্রয়োগের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানসমূহের ওপর নজরদারি জোরদারের মাধ্যমে নিয়ম ভঙ্গকারী অতিমুনাফালোভী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যকর জবাবদিহি নিশ্চিত করার আহ্বানও জানানো হয়। বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা গেছে যে সম্প্রতি র্যাব, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর কর্তৃক যৌথভাবে পরিচালিত একটি অভিযানে অ্যাপোলো হাসপাতাল থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট ও অননুমোদিত ওষুধ উদ্ধার করা হয়েছে। যা এ ধরনের বেসরকারি মালিকানাধীন স্বাস্থ্যসেবার নামে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের সেবার মান যে জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষার প্রতি কতটা উদ্বেগজনক তার একটি মাত্র দৃষ্টান্ত। দেশের অন্যতম ব্যয়বহুল হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত অ্যাপোলো হাসপাতালে যদি মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট ব্যবহার করা হয় তাহলে দেশব্যাপী বিভিন্ন স্তর ও মানের হাসাপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে কী পরিমাণ অনিয়ম ও স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে তা সহজেই অনুমান করা যায়।’ অন্যদিকে অ্যাপোলো হাসপাতালের মতো প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা এ ধরনের অপরাধ দমনে কোনো ভূমিকাই রাখবে না বলে উল্লেখ করে এক্ষেত্রে কঠোরতর আইনের প্রয়োগের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানায় টিআইবি। গত ৭ ফেব্রুয়ারি টিআইবি কর্তৃক প্রকাশিত বেসরকারি স্বাস্থ্যখাতে নিয়ন্ত্রণহীন, তড়িৎ ও অতিমুনাফাভিত্তিক এবং প্রতারণানির্ভর গ্রাহক হয়রানির যে উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে তার উল্লেখ করে ড. জামান বলেন, ‘জীবন-মরণের সঙ্গে সম্পর্কিত বিধায় স্বাস্থ্যসেবায় প্রত্যাশিত মান বজায় রাখার কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু প্রয়োজনীয় নীতিগত সহায়তার অভাব, পরিদর্শন ও তদারকির ক্ষেত্রে ব্যাপক ঘাটতি এবং লাগামহীন প্রকট বাণিজ্যিকীকরণের সম্মিলিত প্রভাবে বেসরকারি চিকিৎসাসেবা খাত কার্যত সেবাগ্রহীতাদের দুর্দশা প্রান্তসীমায় উপনীত করেছে। বেসরকারি হাসপাতালের মতো ব্যবসায়িক বা ব্যক্তিমালিকানাধীন খাত নিয়ন্ত্রণের পুরো দায়িত্ব সরকারের ওপর অর্পিত থাকলে তা সরকারের জন্য একটি বোঝাস্বরূপ এবং এতে স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা ও বস্তুনিষ্ঠতা নির্ধারণ ও নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না বলে উল্লেখ করে ড. জামান বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতার আলোকে বাংলাদেশেও এ খাতে পরিবীক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ স্বাস্থ্যসেবা কমিশন গঠন করা উচিৎ বলে অভিমত দেন।
×