ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রিপোর্টারের ডায়েরি

প্রকাশিত: ০৩:৪৫, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

রিপোর্টারের ডায়েরি

একুশের আড্ডায় ধামাইল নৃত্য ২৩ ডিসেম্বর শনিবার ২০১৭। স্মরণীয় একটি দিন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একুশতম ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের জন্য পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সিলেটের বন্ধুরা। এ অনুষ্ঠানকে ঘিরে সিলেটের ‘হোটেল স্টার প্যাসিফিক’ এ আমরা শতাধিক বন্ধু আনন্দ আড্ডায় মিলিত হই। উৎসবমুখর এ অনুষ্ঠানে শুধু দেশের বিভিন্ন জেলা থেকেই নয়, বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও আসে ক’জন বন্ধু। রাত ৮টায় শুরু হয় আনন্দ আড্ডা আর শেষ হয় রাত ১টার পর। প্রথমেই স্বাগত বক্তব্য রাখে একুশের বন্ধু ও সিলেট ক্লাবের সভাপতি শোয়েব চৌধুরী। এরপর এক এক করে শুভেচ্ছা বিনিময় ও স্মৃতিচারণ করে সিলেটের বন্ধু বাদল সৈয়দ, হাফিজ আহমেদ, ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল, পুলিন চন্দ্র রায়, ড. মোয়াজ্জেম, ঢাকার বন্ধু নেয়ামুল বশির, গৌতম পাল রঞ্জু, চট্টগ্রামের বন্ধু জহিরুল আলম ও মাহবুব রহমান। এরপর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ফাঁকেই জাঁকজমকভাবে ঢাকার বন্ধু জেসি রহমানের জন্মদিন ও চট্টগ্রামের বন্ধু নাজলি সুলতানা শিখার বিবাহবার্ষিকী পালন করা হয়। আবার শুরু হয় অনুষ্ঠান। এরই মধ্যে সবাই রাতের খাবার সেরে নেয়। মধ্যরাতে শুরু হয় কিংবদন্তি শিল্পী শাহ আবদুল করিমের লেখা ও সুরে সিলেটের আঞ্চলিক শিল্পীদের গান। আর এই গানের তালে তালে চলে ধামাইল নৃত্য। এই ধামাইল নৃত্য ছিল পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ। সিলেটের বন্ধুদের নির্দেশনায় ধামাইল নৃত্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বন্ধুরাও অংশ নেয় । ‘আমরা একুশ’ এর আনন্দ আড্ডায় আরও যারা সরব ছিল তাদের মধ্যে রয়েছে সিলেটের বন্ধু ফেরদৌস আলম, হোসনে আরা খানম চিনু, নাসরাত আফসা চৌধুরী রুনী, ইমরান উল্লাহ, ফয়জুন্নেছা মিলি, সৈয়দ ছলিম, চুনী চৌধুরী, কমলকলি চৌধুরী রকেট, শংকর চৌধুরী, জামসেদ আলম, মোহসীন, শাহজাহানসহ আরও ক’জন বন্ধু। তাদের আন্তরিকতার কথা ভুলতে পারব না। এ আনন্দ যাত্রায় আরও সরব ছিল বন্ধু ইকবাল, বাসন্তী, মজিবুর রহমান জাহাঙ্গীর, ফারুক, লাকী, মিতালী, রঞ্জন, আজাদ, ইভা, শিখা, খারেস, স্বপন মাহমুদ, মৃদুল, শ্যামল, ইউসুফ বাবু, রেজাউল করিম স্বপন, সাঈদ, পারভীন, নাজমা, মোস্তাফা, সেলিম, দেলোয়ার, সাহীদ, রুবি, নীলু, জেসী, শিল্পী, মিনু, বেলি, এবিএম সাব্বির, শরীফ, সোহেল, ফজলে খোদা, শিপন, মিজান, সাজু, শতদল, আঞ্জু, কচি, জাহাঙ্গীর, সোহেল, জসিমউদ্দিন স্বপন, রউফ, নাসির, জীবন, রাজু, জাকির, লুৎফর, জসিম, অনিতা, ডলি প্রমুখ। ‘আমরা একুশ’ এর এ আনন্দ আড্ডা কতটুকু প্রাণবন্ত ছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে একটি কথা না বললেই নয়; প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী জসিমউদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া কোথাও তেমন একটা যায় না সে। সেদিন এক বন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে এক ঘণ্টা সময় নিয়ে রাত ৮টায় ‘হোটেল স্টার প্যাসিফিক’ এ আসে। এসেই পুরনো বন্ধুদের পেয়ে আবেগআপ্লুত হয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পর তার স্ত্রী ফোন করে জানতে চায় কখন বাসায় ফিরবে। জবাবে সে তার স্ত্রীকে জানায় এখানে এসে বেশ ভাল লাগছে, তাই বাসায় ফিরতে দেরি হবে। রাত ১টায়ও দেখা যায় জসিমউদ্দিন ধামাইল নৃত্যে মগ্ন। তবে তার অসুস্থতার কথা ভেবে সোয়া ১টার দিকে তাকে বাসায় পাঠানো হয়। বাসায় ফিরে এমন আনন্দঘন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারায় জসিমউদ্দিন সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানায়। -শরীফুল ইসলাম ‘অস্ট্র’ টার্ফ! ১৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার ২০১৮। বাসা থেকে সকাল ১১টায় বের হলাম। বাসে উঠলাম মুগদাপাড়া থেকে। নামলাম মালিবাগ রেলক্রসিং গেটে। অপেক্ষা করতে লাগলাম অপর তিন সহকর্মী জনকণ্ঠের জাহিদুল আলম জয়, ডেইলি অবজারভারের মাহতাব উদ্দিন এবং সোনালী নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জাফিউল ইসলাম বাবুর জন্য। চারজন একত্রিত হয়ে রেললাইন দিয়ে হাঁটতে শুরু করলাম। গন্তব্যস্থল বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিস এ্যান্ড এক্সপোর্টস এ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমই) ভবনের এ্যাপারেল ক্লাবের ১৪তলা। উদ্দেশ্যÑ বেলা ১২টায় শুরু হওয়া বিজেএমইএ কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের প্রেসমিট কভার করা। গাড়িতে করে গেলে জ্যামে পড়তে হবে, ফলে হয়ে যাবে দেরি। হেঁটে চলার এটাই কারণ। যথাসময়েই পৌঁছালাম। কিন্তু প্রেসমিটের রুম পুরোটাই ফাঁকা! অবশ্য ডেইলি ইন্ডিপেন্ডেন্টের ক্রীড়া সম্পাদক শ্রদ্ধেয় মঞ্জুরুল হক ভাইকে পেলাম। তিনি আমাদের আগেই এসেছেন। জানালেন, ‘আয়োজকরা আমাদের সাংবাদিকদের একেবারে পেছনে বসানোর আয়োজন করেছিল। আমি ক্ষেপে গিয়ে বলেছি, আমাদের দাওয়াত করে এনে এভাবে অপমান করলে সেটা মোটেও বরদাশত করা হবে না। সামনের সারিতে না বসালে আমরা কেউই এই প্রেসমিট করব না। এ কথায় ওরা ভয় পেয়ে ক্ষমা চেয়েছে এবং আমাদের সামনের সারিতেই বসানোর ব্যবস্থা করেছে।’ দারুণ এবং প্রতিবাদী এই উদ্যোগের জন্য আমরা ধন্যবাদ জানালাম মঞ্জু ভাইকে। মিনিট দশেক অপেক্ষা করতেই আয়োজকদের দু-একজনকে উঁকিঝুঁকি দিতে দেখা গেল। জিজ্ঞেস করলাম, কখন শুরু হবে প্রেসমিট। ‘এখনই স্যার, আর কিছুক্ষণের মধ্যেই।’ কাচুমাচু মুখে একজনের জবাব। সেই কিছুক্ষণ দেখি আর শেষই হয় না! অবশেষে শুরু হলো প্রেসমিট পাক্কা ৪৫ মিনিট দেরি করে! মঞ্চে থাকা একটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি দুই পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্য পাঠ করলেন। বেশ সাবলীল ভঙ্গিতেই পড়ছেন। তবে গোল বাধিয়ে দিলেন কিছুক্ষণ পরেই। কিছুতেই সঠিকভাবে উচ্চারণ করতে পারলেন না ‘এ্যাস্ট্রো টার্ফ’ শব্দটি। বার বার বলতে লাগলেন ‘অস্ট্র’ টার্ফ! উপস্থিত অনেককেই দেখলাম হাসি গোপন করে দুলে দুলে নিঃশব্দে হাসতে। আমাদের কাছেও বক্তৃতার শিটটি দেয়া হয়েছিল। পরে গুনে দেখলাম সভাপতি মহোদয় সেদিন মোট চার বার ‘অস্ট্র’ শব্দটি উচ্চারণ করেছিলেন। -রুমেল খান
×